আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের চার ঘন্টা পরে স্ত্রী করোনা ভাইরানে আক্রান্ত হয়েছেন। চেয়ারম্যান দম্পতি আক্রান্তের খবরে চাওড়া ইউনিয়নের মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। খবর পেয়ে ইউএনও মনিরা পারভীন শনিবার তার পৌর শহরের বাড়ীসহ পাঁচ বাড়ী লকডাউন করে দিয়েছেন। করোনা ভাইরাসে আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি জিএম দেলওয়ার হোসেন আক্রান্তের এক মাসের মাথায় আরেক আওয়ামীলীগ নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী আক্রান্ত হলেন। এনিয়ে আমতলীতে ১১ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে আক্রান্তের ১০ জনই আমতলী পৌরসভা ও তত সংলগ্ন চাওড়া এলাকার।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন চেয়ারম্যান সম্প্রতিক বিশেষ কাজে ঢাকা যান। ঢাকা থেকে আসার পরপরই চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ পরিলক্ষিত হয়। তার শরীরের অবস্থা খারাপ দেখে গত বৃহস্পতিবার তার পরিবারের লোকজন আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খবর দেয়। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ও মেডিকেল টেকনোলজিষ্টরা তার বাসা থেকে চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীর নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে আসে। ওইদিনই তাদের নমুনা ঢাকা রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে পাঠায়। শনিবার দুপুরে চেয়ারম্যানের নমুনা প্রতিবেদন আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসে। ওই নমুনা প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে তিনি প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। চেয়ারম্যান করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের চার ঘন্টা পর ওইদিন বিকেলে তার স্ত্রী করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের প্রতিবেদন আমতলী হাসপাতালে আসে। চেয়ারম্যান দম্পতি করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের খবরে চাওড়া ইউনিয়নের মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ইউএনও মনিরা পারভীন তার বাড়ীসহ পাঁচ বাড়ী লকডাউন করে দিয়েছেন। চেয়ারম্যান দম্পতি তাদের আমতলী পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের বাসার হোম আইসোলেশনে আছেন এবং ওইখানেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ নিয়ে আমতলী উপজেলার করোনা ভাইরাসে এগার জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে গত ৯ এপ্রিল আওয়ামীলীগ নেতা জিএম দেলওয়ার হোসেন মৃত্যুরবরন করেন। ওই সময় থেকেই বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাইন বিল্লাহ আমতলী উপজেলাকে লকডাউন ঘোষনা করেন। বর্তমানে আমতলী উপজেলা লকডাউন অবস্থায় আছে। এদিকে চেয়ারম্যান ঢাকা থেকে আমতলীতে আসার পর তিনি তার ইউনিয়নের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন এবং সাধারণ মানুষের সাথে মিলেছেন। এতে চাওড়া ইউনিয়নের মানুষের মাঝে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ্য। তাদের দেখতে রাজনৈতিক নেতাসহ চাওড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন লোকজন বাড়ীতে এসেছেন। কি হয় আল্লাই জানে? তিনি আরো বলেন, আমরা এলাকার মানুষ খুবই আতঙ্কে আছি।
বরগুনা সিভিল সার্জন মোঃ হুমায়ূন শাহীন খাঁন বলেন, চেয়ারম্যান দম্পতি প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তারা বাসার আসইসোলেশনে আছেন। তাদের যথারীতি চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন বলেন, চেয়ারম্যানের বাড়ীসহ পাঁচ বাড়ী লকডাউন করা হয়েছে। তাদের বাসার হোম আইসোলেশনে রেখেই চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
করোনা প্রতিরোধ কমিটির প্রধান বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, আক্রান্তদের সংস্পর্শে যারা এসেছে সেই সকল ব্যাক্তিদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হবে। তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশ অনুসারে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হবে।
Leave a Reply