আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ
ভগ্নিপতির সাথে বেড়াতে গিয়ে ইকোপার্কের সংঘবদ্ধ চক্রের গণধর্ষণের শিকার হয়েছে এক যুবতি। ঘটনা ঘটেছে তালতলী উপজেলার সোনাকাটা টেংরাগিরি-ইকোপার্কের গহীন জঙ্গলে বুধবার সন্ধ্যায়। এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার ওই যুবতি বাদী হয়ে সোহাগ (২৫), হাসান (২৮), মিজানুর (২৪) ও জাহিদুল (২৭) নামের চারজনকে আসামি করে তালতলী থানায় মামলা দায়ের করেছেন। বৃহস্পতিবার ওই যুবতী আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি শেষে ওই যুবতির ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলার নীলগঞ্জ গ্রামের ভগ্নিপতিকে নিয়ে যুবতি শালিকা বুধবার বিকেলে মোটর সাইকেলে তালতলীর সোনাকাটা টেংরাগিরি-ইকোপার্কে বেড়াতে যান। ভগ্নিপতি ইকোপার্কের হরিণের সেডের কাছে শালিকা ও গাড়ী চালক মাহবুবকে রেখে একটি দোকানে খাবার পানি আনতে যায়। ওই সুযোগে ওতপেতে থাকা চারজনের একটি সঙ্গবদ্ধ দল মোটর সাইকেল চালককে গাছের সঙ্গে বেঁধে তার মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে ওই যুবতিকে ধরে তারা গহীন জঙ্গলে নিয়ে যায়। গহীণ জঙ্গলে সোহাগ, জাহিদুল, মিজানুর ও হাসান পালাক্রমে তাকে গণধর্ষণ করেন। ধর্ষণ শেষে ওই যুবতিকে তারা জঙ্গলে ফেলে রেখে চলে যায়। এদিকে ভগ্নিপতি শালিকাকে না পেয়ে স্থানীয়দের সরনাপন্ন হয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় ওই যুবতিকে গহীণ জঙ্গল থেকে ওইদিন রাত ১০ টার দিকে উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে তালতলী থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ ফরিদুল ইসলাম ঘটনাস্থল থেকে ধর্ষণের শিকার ওই যুবতিকে থানায় নিয়ে আসেন। এ ঘটনার ওই যুবতি বাদি হয়ে সোহাগ (২৫), হাসান (২৮), মিজানুর (২৪) ও জাহিদুলের (২৭) নামে তালতলী থানায় মামলা দায়ের করেছে।
বৃহস্পতিবার পুলিশ ওই যুবতিকে জবানবন্দির জন্য আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরন করেন। আদালতের বিচারক মোঃ সাকিব হোসেন জবানবন্দি শেষে ওই যুবতীকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, সোহাগ, জাহিদুল, মিজানুর ও হাসানসহ ১২-১৫ জনের একটি সঙ্গবদ্ধ চক্র রয়েছে যারা ইকোপার্কে বেড়াতে আসে মানুষের টাকা পয়সা ছিনতাই করে। তারা আরো বলেন, ওই চক্রের হাতে অনেক নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ওই চক্রের কারনে ইকোপার্কে পর্যটক আসা কমে গেছে। দ্রুত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তারা।
ফকির হাট বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি ইউপি সদস্য মোঃআব্দুস সালাম হাওলাদার বলেন, সোহাগ, জাহিদুল, মিজানুর ও হাসানসহ ১২-১৫ জনের একটি সঙ্গবদ্ধ চক্র প্রায়ই গহীণ জঙ্গলে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সাথে খারাপ আচরণ করে থাকে। ওই চক্রের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানাই।
মোটর সাইকেল চালক মাহবুব বলেন, আমাকে মারধর করে গাছের সঙ্গে বেঁধে গাড়ীর চাবি, মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে তারা ওই যুবতিকে মুখ বেধে ধরে জঙ্গলে নিয়ে যায়।
ভগ্নিপতি বলেন, শ্যালিকাকে নিয়ে সোনাকাটা-টেংরাগিরি ইকোপার্কে ঘুরতে আসি। এক ফাঁকে দোকানে পানি নিতে যাই। এ সুযোগে স্থানীয় চারজন বখাটে মোটর সাইকেল চালককে মারধর করে গাছের সাথে বেঁধে আমার শালিকাকে গহীণ জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আমি আমার শালিকাকে উদ্ধার করেছি।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) ফরিদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ধর্ষণের শিকার ওই যুবতিকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। ওই যুবতি বাদী হয়ে চার আসামির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তিনি আরো বলেন, ওই যুবতিকে আমতলী আদালতে পাঠানো হয়েছে।