বিশেষ প্রতিবেদকঃ
পান থেকে চুন খসলেই ধারালো অস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে এরা। চাঁদাবাজী, দখলবাজী এবং সুদের টাকা আদায় থেকে শুরু করে মাঝে মধ্য ভাড়ায়ও চলে এই বাহিনীর অস্ত্রের প্রদর্শনী। কলাপাড়া উপজেলার ‘মুজিব নগর’ খ্যাত ধানখালীর এখন আতংক হয়ে উঠেছে এই বাহিনী। ধানখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী ক’নেতা এদের গডফাদার।
সংশ্লিষ্ট এলাকা ছাড়াও তাদের বিচরনে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে উপজেলাবাসী। এলাকাবাসীর অভিযোগ কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়ন মুজিবনগন হিসেবে পরিচিত। সেই মুজিব নগরে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেলেও অজ্ঞাত কারনে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয় না এদের বিরুদ্ধে।
গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর পটুয়াখালী জেলা পুলিশের উদ্যোগে কলাপাড়া সুধিজনদের সঙ্গে বরিশাল রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি শফিকুল ইসলামের এক বিশাল জনসভায় প্রকাশ্যে এই কিশোর বাহিনীর বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ তোলা হলেও অজ্ঞাত কারনে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি এদের বিরুদ্ধে। দিনদিন এই বাহিনীর দৌড়াত্ব বেড়েই চলছে। অতি সম্প্রতি এই বাহিনীর সদস্যদের অস্ত্রসহ ছবি ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ পেলে উপজেলাবাসী ও সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এই বাহিনীর কার্যকলাপের ধারাবাহিকতায় বছরের প্রথম দিনে ধানখালী ইউনিয়নের লোন্দা খেয়াঘাট বাজার এলাকা খেয়াঘাট দখল নিয়ে চলে তান্ডব। পায়রা তাববিদ্যুৎ কেন্দ্র আর, পি,সি,এল কোম্পানীর নিয়োগকৃত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান প্রবাল ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানী লিঃ, আমির ইঞ্জিনিয়ারিং লিঃ, ই-ইঞ্জিনিয়ারিং লিঃসহ কয়েকটি কোম্পানীর সাথে লিখিত চুক্তিবদ্ধ হয়ে সাফ ইজারা নিয়ে লোন্দা খেয়াঘাট থেকে ওই কোম্পানীর যাবতীয় মালামাল পরিবহনকাজে নিয়োজিত হন শহিদুল ইসলাম। কিন্তু এই খেয়াঘাটটি নেয়ার পর থেকে এক নেতা তাদের কাছ থেকে এটি দখলে নিতে পাঁয়তারা চালায়। এক পর্যায় অভিযোগকারীর কাছে ঘাটের লভ্যাংশের ৬০ ভাগ অর্থ দাবী করে বসে তারা। এনিয়ে উভয় পক্ষের মধ্য দ্বদ্ব ও রেষারেষির এক পর্যায় লভ্যাংশের ৬০ ভাগ অর্থ দিয়ে কাজ চালাতে হয়। এদের মধ্যে লিয়ন মৃধা, মাসুম সরদার, তারেক মৃধা, রাকিবুল মৃধা, ফেরদৌস তালুকদার, বশির হাওলাদার, নজরুল হাওলাদার, জাহিদ, শুভ, সাইফুল, লিমন, সোহান সহ ২০ থেকে ২৫ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রাস্তায় বেড়িয়ে পড়ে। অজ্ঞাত কারনে এই সকল অস্ত্রধারীর বিরুদ্ধে অদ্যবধি ব্যবস্থা নেয়নি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ধানখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহজাদা পারভেজ টিনু মৃধার অভিযোগ, এরা বর্তমান চেয়ারম্যান রিয়াজের লোক।
অন্যদিকে ধানখালী ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজ তালুকদারের অভিযোগ, এরা টিনু মৃধার লোক। অস্ত্রের মহড়া দিয়ে এলাকায় তান্ডব সৃষ্টি করে আসছে। ঘাট নিয়ে এই বাহিনীরা দ্ব›দ্ব সংঘাত চলমান রয়েছে। এর সুরাহ হওয়া দরকার। তা না হলেও বড় ধনের অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকা রয়েছে।
কলাপাড়া থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, বেশ কয়েকবার উল্লেখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযান চালায়। কিন্তু তারা গা ঢাকা দেয়ায় এদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।