আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।। ঘরে ঘরে করোনা উপসর্গের রোগী। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা পরীক্ষা রেপিড এন্টিজেন ও জিন এক্সপার্ট সহজলভ্য হলেও আতঙ্কে আগ্রহ নেই করোনা পরীক্ষায়। এতে আমতলীতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। পরীক্ষায় আক্রান্ত রোগী চিহিৃত করতে পারলে সংক্রামণ কমবে বলে ধারনা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানাগেছে, উপজেলার ৪৪ টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। ওই ক্লিনিক গুলোতে করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে জ্বর, সর্দি ও কাশির রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বছর লকডাউন শুরু পর থেকে গত চার মাসে ৭১ হাজার ২’শ ৫৭ রোগী ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। এর মধ্যে অধিকাংশ জ্বর, সর্দি ও কাশিসহ করোনার উপসর্গ বলে নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানাগেছে। গত ৫ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত ৭ জুলাই ৬ হাজার ২’শ ৯০ জন করোনা ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ করেছে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এর মধ্যে ২’শ ৯৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ্য হয়েছেন ২’শ ২১ জন। বাকী ৬৮ জন হাসাপাতাল ও বাড়ীতে আইসোলশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে উপজেলার প্রায় ঘরে ঘরেই করোনা উপসর্গের রোগী রয়েছে। তারা উপসর্গ নিয়ে বাড়ীর আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেপিড এন্টিজেন এবং জিন এক্সপার্ট করোনা পরীক্ষা সহজলব্য হলেও ভয়ে রোগীরা পরীক্ষা করানোর আগ্রহ নেই। অনেকে ঘরে বসে মুঠোফোনে চিকিৎসকদের পরামর্শে ঔষধ সেবন করছেন এবং সুস্থ্য হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসছেন। এতে প্রকৃত করোনা রোগীর সংখ্যা চিহিৃত করা সম্ভব হচ্ছে না। উপসর্গকৃত রোগীর মধ্যে গুরুতর অসুস্থ্যদের কিয়াদাংশ উপজেলা স্বাস্থ্যবিভাগ রেপিড এন্টিজেন এবং জিন এক্সপার্ট পরীক্ষার করাচ্ছেন। পরীক্ষা করে সঠিক করোনা রোগী সনাক্ত করা গেলে সংক্রামণ কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে ধারনা করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। করোনা উপসর্গের রোগীরা অন্য মানুষের সাথে চলাফেরা করায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলার প্রায় ঘরে ঘরেই জ্বর সর্দি-কাশির রোগী রয়েছে। তবে চিকিৎসকরা বলেছেন আবহাওয়াজনিত কারনে জ্বর সর্দি-কাশির রোগীর সংখ্যা রেড়ে গেছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কারন নেই। ঘরে ঘরে জ্বর সর্দি ও কাশির রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
শুক্রবার আমতলী পৌর শহরের সবুজবাগ, পুরাতন বাজার, খোন্তাকাটা, ফেরীঘাট, টিএন্ডটি সড়ক এবং উপজেলার কাউনিয়া, দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া, আঠারোগাছিয়া, সোনাখালী, গাজীপুর, চুনাখালী, মহিষকাটা, শাখারিয়া, কেওয়াবুনিয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া, ঘোপখালী ও টেপুরাসহ বিভিন্ন গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, প্রায় ঘরেই জ্বর সর্দি ও কাশি রোগী রয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, ঘরে ঘরে জ্বর সর্দি ও কাশি লেগেই আছে। তারা ভয়ে স্বীকার করছে না এবং ভয়ে হাসপাতালে পরীক্ষা করতে যেতে চাচ্ছে না। গ্রাম্য চিকিৎসকের পরামর্শে ঔষধ সেবন করছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ কেএম তানজিরুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন অন্তত ৭০ থেকে ৮০ জন রোগী মুঠোফোনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। মুঠোফোনে চিকিৎসা নেয়া রোগীরা ভালো হয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল মোনায়েম সাদ বলেন, আবহাওয়া ও ভাইরাসজনিত কারনে জ্বর, সর্দি ও কাশির রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। রোগীরা আতঙ্কে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছে না। তবে অনেক রোগীরা মুঠো ফোনে চিকিৎসকদের কাছ থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, রেপিট এন্টিজেন কীট ও জিন এক্সপার্টের মাধ্যমে পরীক্ষা সহজলভ্য হলেও মানুষ ভয়ে পরীক্ষা করতে আগ্রহী নন। পরীক্ষা করলে সঠিক করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেরিয়ে আসতো এবং সংক্রামণ কম হতো।