আপন নিউজ অফিসঃ কলাপাড়ায় চুরির অপবাদ দিয়ে মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র নাঈম ঘরামীর পায়ে শিকল বেঁধে বর্বর কায়দায় মারধর ও হোতা আবুল বাসারকে গ্রেফতার করা নিয়ে মঙ্গলবার শেষ বিকেলে কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: জসীম গনমাধ্যম কর্মীদের এক প্রেস বিরিফি করেছন।
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: জসীম গনমাধ্যম কর্মীদের এক প্রেস বিরিফি করে বলেন, নাবালক শিশু নির্যাতনের সংবাদ প্রকাশে মাত্র ২ ঘন্টার মধ্যে নির্যাতনের ঘটনার রহস্য উদঘাটন মূল আসামী গ্রেফতার করেছি। গত ০৮/১১/২০২১ রাত্র ২৩.১০ ঘটিকার সময় একটি সংবাদ পাই যে , একজন শিশুকে গত ইং ৩/৮/২০২১ তারিখ পারিবারিক বিরোধের জের ধরে এবং চুরির অপবাদ দিয়ে , জনৈক মোঃ আলী আহম্মদ ঘরামী, পিতা -সফিজ উদ্দীন ঘরামী, সাং-এলেমপুর, থানা - কলাপাড়া এর বসত ঘরের মধ্যে ভিকটিম নাবালক শিশু মোঃ নাঈম ঘরামি (১৪) , পিতা- নাসির ঘরামি, সাং এলেমপুর , নীলগঞ্জ ইউনিয়ন আটক করে পায়ে শিকল দিয়ে বেধে অমানষিক নির্যাতন করা হয়েছে এবং উক্ত ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দিয়ে আপন নিউজে উক্ত সংবাদের পর থেকে পটুয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ পিপিএম মহোদয়ের এর সার্বিক তদারকি ও দিকনির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কলাপাড়া সার্কেল জনাব আহম্মদ আলী'র নেতৃত্বে কলাপাড়া থানা পুলিশের একটি চৌকস দল নাবালক শিশু নির্যাতনের ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন ও আসামীদের গ্রেফতারের নিমিত্তে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ শুরু করে। তথ্য উপাত্ত বিচার বিশ্লেষণ করে ইং ০৯-১১-২১ অনুমান ০২:০০ ঘটিকায় উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নস্থ ছলিমপুর এলাকা হইতে আসামী মোঃ আবুল বশার ঘরামী (৪০), পিতা-সফিজ উদ্দীন ঘরামী, সাং-এলেমপুর , থানা কলাপাড়া কে গ্রেফতার করা হয়। আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানাযায় স্থানীয় বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে ভিকটিম মোঃ নাঈম ঘরামি (১৪) কে পলাতক আসামী আলী আহম্মেদ ঘরামীর বসত ঘরের ভিতরে আটক করে চুরির অপবাধে একটি শিকল দিয়া বাম পা বাধিয়া গত ০৩/০৮/২০২১ তারিখ বিকাল অনুমান ৫.৩০ ঘটিকার সময় হইতে সন্ধ্যা ৭.৩০ ঘটিকা পর্যন্ত ক্ষনে ক্ষনে প্লাষ্টিকের পাইপ ও লাঠি শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটাইয়া অমানষি নির্যাতন করেন। ঘটনার সাথে জড়িত অন্যন্য আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলমান আছে।
গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ আবুল বশার ঘরামীকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় শিশু আইনে কলাপাড়া থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলা নং-০৩ তারিখ- ০৯/১১/২০২১।
উল্লেখ, গত ৩ আগস্ট বিকালে পাঁচ হাজার টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র নাঈম ঘরামীর পায়ে শিকল বেঁধে বর্বর কায়দায় মারধর করা হয়েছে। উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের এলেমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনার তিন মাস পরে নাঈমের বাবা নাসির উদ্দিন ঘরামী কলাপাড়া থানায় সোমবার একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
জানা গেছে, টাকা চুরির অজুহাতে ৩ আগস্ট বিকালে নাঈমকে একই গ্রামের মোঃ আবুল বসার (৪০), মাসুদ ঘরামী (১৯), আলী আহমেদ (৫৬) ও মোসা. শেফালী বেগম (৪৫) নাঈমকে জোর করে বাড়িতে নিয়ে পায়ে শিকল দিয়ে খুটির সঙ্গে বেধে রাখে। এরপরে বেধড়ক পেটানো হয়। রাত আটটা পর্যন্ত দফায় দফায় নির্যাতন চালানো হয়। পরে গ্রামের লোকজন অর্ধচেতন অবস্থায় নাঈমকে উদ্ধার করে।
পরবর্তীতে এ কথা কাউকে না বলার জন্য খুন-জখমের হুমকি দেয়া হয়। এক পর্যায়ে নাঈম অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কলাপাড়া হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। এখনও স্বাভাবিকভাবে সুস্থ হয়ে ওঠতে পারেনি নাঈম। বর্তমানে কলাপাড়া হাসপাতালের একজন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে। ওই ভিডিও ফুটেজ দিয়ে আপন নিউজে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এবং এ নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিও ফুটেজটি আপন নিউজ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে অনেকের বিবেকেই নাড়া দেয়।যেখানে নাইমকে বেধড়ক নির্যাতনের দৃশ্য ফুটে উঠেছে। কলাপাড়া থানা পুলিশ রাতেই মূল হোতা আবুল বাসারকে গ্রেফতার করে।