জোয়ারের স্লোতে ভাঙ্গছে পায়রা; ভাঙ্গণ রোধে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী | আপন নিউজ

শনিবার, ২৭ Jul ২০২৪, ০৮:৫১ পূর্বাহ্ন

প্রধান সংবাদ
বাংলাদেশ অটোরিকশা শ্রমিক লীগ কলাপাড়া উপজেলা শাখার কমিটি অনুমোদন; রাহাত সভাপতি কলাপাড়ার লালুয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ০২ নং ওয়ার্ডের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত কলাপাড়ার লালুয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ১ নং ওয়ার্ডের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত আমতলীতে সুবন্ধির বাঁধ লক্ষাধিক মানুষের মরণ ফাঁদ; কাটার দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল কলাপাড়ায় ধুলাসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত কলাপাড়ায় দালালদের দাপটে অসহায় রোগী; ডায়াগনস্টিক ও ক্লিনিকের মালিকদের সতর্ক কলাপাড়ার টিয়াখালী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে ফেসবুকে পোষ্ট; এবার পর্নোগ্রাফী আইনে মামলা দায়ের আমতলীতে যৌ’তু’ক দিতে অস্বীকার করায় স্ত্রীকে পি’টি’য়ে জ’খ’ম আমতলীতে এক বছরের শিশু পানিতে ডু’বে মৃ-ত্যু
জোয়ারের স্লোতে ভাঙ্গছে পায়রা; ভাঙ্গণ রোধে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী

জোয়ারের স্লোতে ভাঙ্গছে পায়রা; ভাঙ্গণ রোধে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী

আমতলী প্রতিনিধি।। গত এক মাস ধরে পায়রা নদীতে বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। স্রোতে পায়রা নদীর ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারন করেছে। স্রোতে নদী তীরবর্তী মাটি আগলা হয়ে আমতলী-তালতলী উপজেলার অন্তত ৫০ একর জমি ও শতাধিক বাড়ী ভেঙ্গে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। জমি ও বসত ভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে শতাধিক পরিবার। দ্রুত নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা রক্ষায় কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহেনর দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

এদিকে পায়রা ভাঙ্গন রোধে পাউবো ৫ কিলোমিটার ২৫০ মিটার ব্লক নির্মাণের কাজ শীঘ্রই শুরু করবেন বলে নিশ্চিত করেছে পাউবোর সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আজিজুর রহমান সুজন।

জানাগেছে, গত এক মাস ধরে পায়রা নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘুর্ণিঝড় সিডর, ইয়াস, আইলা, মহাসেন, ফণি ও আম্ফানের পরে পায়রা নদীতে জোয়ারের পানি এতো বৃদ্ধি পায়নি বলে জানান নদীর পাড়ে বসবাসরতরা। ওই জোয়ারের স্রোতে নদী তীরের তলদেশের মাটি আগলা হয়ে যায়। বিপুল পরিমান জলরাশি সমুদ্রে নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পায়রা নদীর ভাঙ্গণ তীব্র আকার ধারন করছে। গত এক মাসে আমতলী-তালতলী উপজেলার পায়রা নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় অন্তত ৫০ একর ফসলি জমি এবং শতাধিক বাড়ী নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এতে পায়রার পাড় সংলগ্ন বসবাসরত মানুষ ঝুঁকির মধ্যে দিনাতিপাত করছে। ফসলি জমি ও বাড়ী হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে শতাধিক পরিবার। দ্রুত পায়রার ভাঙ্গণ থেকে ফসলি জমি ও বাড়ী ঘর রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন নদী ভাঙ্গণ কবলিত এলাকার মানুষ। স্থানীয়রা বলেন, নদীর পানি কমতে শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই পায়রা নদী তীব্র আকারে ভাঙ্গছে। গত এক মাসে অন্তত ৫০ একর ফসলী জমি ও শতাধিক ঘর বাড়ী নদী গর্বে বিলিন হয়ে গেছে। তার আরো বলেন, স্রোতে নদী পাড়ের তলদেশের মাটি আগলা হয়ে যাওয়ায় ভাঙ্গণের তীব্রতা বেশী দেখা দিয়েছে। দ্রুত নদী ভাঙ্গণের হাত থেকে রক্ষার দাবী জানান তারা।

এদিকে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড পায়রা নদীর ভাঙ্গন রোধে ৫ কিলোমিটার ২৫০ মিটার ব্লক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নে ৩.৫ কিলোমিটার, ঘটখালী ১ কিলোমিটার ২৫০ মিটার ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সংলগ্ন এলাকায় ৫০০ মিটার। ইতিমধ্যে ওই ব্লক নির্মাণের দরপত্র আহবান করা হয়েছে। আসামী শুকনো মৌসুমে ওই ব্লক নির্মাণ কাজ শুরু হবে। আমতলী পায়রা নদীর ভাঙ্গণ রোধে ব্লক নির্মাণের উদ্যোগ নিলেও তালতলী উপজেলায় ভাঙ্গণ রোধে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এতে ভাঙ্গণ কবলিত এলাকার মানুষের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। তারাও দ্রুত ভাঙ্গণ রোধে নদীতে ব্লক নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন।

শনিবার খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, পায়রা নদী সংলগ্ন বালিয়াতলী, ঘোপখালী, পশুরবুনিয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া, লোচা, পানি উন্নয়ন বোর্ড, আঙ্গুলকাটা, গুলিশাখালী, গুলিশাখালীর জেলে পল্লী, পঁচাকোড়ালিয়া, ছোটবগী, মৌপাড়া, গাবতলী, চরপাড়া, তালতলী, খোট্টারচর, তেঁতুলবাড়িয়া, জয়ালভাঙ্গা, নলবুনিয়া, ফকিরহাট, নিদ্রাসকিনা ও আমখোলাসহ নদী সংলগ্ন স্থানে নদী ভাঙ্গণ তীব্র আকার ধারন করেছে।

আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বালিয়াতলী গ্রামের মোঃ সাইদুল আকন বলেন, পানি কমার সাথে সাথে নদী ভাঙ্গণের পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরো বলেন, গত এক মাসে বালিয়াতলী এলাকায় অন্তত পাচ একর জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।

আমতলী পশ্চিম ঘটখালী গ্রামের বৃদ্ধা মালেকা বেগম কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, মোর সব শ্যাষ অইয়্যা গ্যাছে। আগেতো য্যা গ্যাছে, এহোন বাহিডা এ্যাকছের ভাঙ্গে।

গাবতলী গ্রামের ছত্তার হাওলাদার ও হানিফ মিয়া বলেন, ভাটা শুরু হলেই স্রোতে নদী ভাঙ্গন বৃদ্ধি পায়। গত একমাস ধরে তীব্র আকারে নদীর তীর ভাঙ্গছে।

তালতলীর তেতুঁলবাড়িয়া গ্রামের ভাঙ্গনকবলিত এলাকার বাসিন্দা জসিম হাওলাদার ও রোজিনা আক্তার বলেন, সিডরের পর থেকেই ভাঙ্গছে পায়রা নদী। এতে এই এলাকার অন্তত ৩০ একর জমি ও শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ী নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। ঘর বাড়ী বিলিন হয়ে যাওয়ায় তারা মানবেতর জীবন যাজন করছে। কিন্তু গত ১৫ বছরেও ভাঙ্গণ রোধে কোন ব্যবস্থা নেই পানি উন্নয়ন বোর্ড। দ্রুত ব্লক নির্মাণ করে ভাঙ্গণ রোধের দাবী জানান তারা।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, পায়রার ভাঙ্গণে ফসলি জমি হারিয়ে যাচ্ছে।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন, আসছে শুকনো মৌসুমে পায়রা নদীর ভাঙ্গন রোধে ৫ কিলোমিটার ২৫০ মিটার ব্লক নির্মাণের কাজ শুরু হবে। তিনি আরো বলেন, তালতলী এলাকার ৪৫ পোল্ডারের পায়রা নদীর ভাঙ্গণ রোধে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সিআইডি প্রকল্পের অধিনে নেয়া হয়েছে। ওই পোল্ডারের কাজও আসছে মৌসুমে শুরু হবে।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাগ্রোফরেস্ট্রি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোঃ আলমগীর কবির বলেন, নদীতে পলি জমে তলদেশ ভরাট হয়ে যায় এবং স্থানে স্থানে বিশাল আকৃতির ডুবোচরের সৃষ্টি হয়। ফলে পানি প্রবাহ বাধা গ্রস্থ হয় এবং স্থানে স্থানে গতিপথ পরিবর্তন করে। যে সকল স্থানে গতিপথ পরিবর্তন করে ওই সকল স্থানে নদী ভাঙ্গন বৃদ্ধি পায়। ঘুর্ণিঝড় ও তৎপরবর্তী জলোচ্ছাসের শেষে বিপুল পরিমান জলরাশি সমুদ্রে নেমে যাওয়ার সময় নদী ভাঙ্গনের তীব্রতা আরো বৃদ্ধি পায়। তিনি আরো বলেন, ভুমি ক্ষয় রোধে উপযোগী কৃষি প্রযুক্তিসমুহের ব্যবহার, প্রকৌশল প্রযুক্তি সমুহের ব্যবহার (ব্লক ও প্রাচীর ওয়াল) এবং সকল পতিত উন্মুক্ত স্থান সমুহে বনায়নের মাধ্যমে আচ্ছাদিত করে নদী ভাঙ্গণ রোধ করা যেতে পারে।

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By JPHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!