কলাপাড়া প্রতিনিধিঃ
ভাড়াটে হুন্ডা চালক থেকে পুলিশের কথিত সোর্স। অন্তরালে চলত ইয়াবার ব্যবসা। নিত্য নতুন কাঁচা টাকার গন্ধে ক্রমশ: ফুলে ফেঁপে ওঠা ইসমাইল, কলাপাড়াবাসীর কাছে যেন এক মূর্তিময় আতঙ্কের নাম। টাকা পেলে তিনি যা ইচ্ছা করতে পারতেন। নীরিহ মানুষের পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে পুলিশকে ধরিয়ে দেয়া, বাল্য বিয়ের অপবাদ দিয়ে গভীর রাতে দরজা ভেঙ্গে বাসর ঘরে প্রবেশ করে নব দম্পতিকে জিম্মি করে চাঁদা আদায়, মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে নিরীহ মানুষকে হয়রানী করা, জুয়ার আসর বসিয়ে কমিশন গ্রহণ, নারী ও মদের ব্যবসাসহ নানা কুকর্মের অভিযোগ রহেছে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু শত অভিযোগ থাকার পরও এতদিন কেহই তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলেননি। কারন পুলিশের সাথে সখ্যতা ছাড়াও ইসমাইলের ছিল কিছু বখাটে সাঙ্গপাঙ্গ। যাদের ভয়ে মানুষ সর্বদা ভীতসন্তস্থ থাকত। গত সোমবার মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যদের হাতে ৫০ পিস ইয়াবাসহ ইসমাইল গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। পৌর শহরের এতিমখানা সড়ক ব্যবসায়ী অপু মৃধা জানান, কথিত পুলিশের কথিত সোর্স ইসমাইল একদিন তাকে মাদকসহ পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন।
স্থানীয় সংবাদকর্মী এস এম আলমগীর হোসেন জানান, তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সে তাকে লাঞ্ছিত করে। স্থানীয় রাহাত রেজা জানান, ইসমাইল তাকেসহ তার আত্মীয় স্বজনদের মিথ্যা মামলায় ঢুকিয়ে দিয়েছে। এবার ইসমাইল জেলে ঢোকায় এলাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওরা এতদিন কাউকেই পরোয়া করত না।
টাকার বিনিময়ে ইয়াবা ব্যবসায়ী হোন্ডা ইসমাইল সাধারণ মানুষকে ইয়াবা দিয়ে পুলিশে ফাঁসাত ; আজ তিনি ফেঁসে গেলো।
কলাপাড়ায় পুলিশের কথিত সোর্স ইসমাইল (৩৮)। তিনি ভাড়াটে মোটরসাইকেল চালক হলেও ওই কাজবাদ দিয়ে পুলিশের কিছু অফিসারকে নিয়ে ঘোরা ফেরা করতেন। করতেন মাদকের ব্যবসা। এবং সাধারণ মানুষকে ইয়াবা দিয়ে পুলিশে ফাঁসানোর কাজও করত ওই ইসমাইল। পুলিশের কথিত সোর্স ইসমাইলের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য দিয়ে একাধিক কিশোর-যুবদের ফাঁসানোর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তাকে এতদিন আইনের আওতায় আনতে পারেনি পুলিশ। অবশেষে গত সোমবার রাতে কলাপাড়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সদস্যদের হাতে আটক হল মাদক ব্যাবসায়ী ইসমাইল।
ইসমাইলের গ্রেফতারের খবরে সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এবং তার এলাকা বাদুতলীসহ বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণ ও দান সদকাসহ অনেকে শুকরানা নামাজ আদায় করেন।
উল্লেখ্য, গত সোমবার (২ মার্চ) রাত অনুমান ৮টার দিকে কলাপাড়া মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের সদস্যরা ইসমাইলকে ৫০ পিস ইয়াবা ও একটি মোটর সাইকেল সহ পৌরশহরের লঞ্চঘাট এলাকা থেকে আটক করে। এবং মঙ্গলবার সকালে ইসমাইলকে কলাপাড়া থানায় দায়েরকৃত মাদক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে। বর্তমানে সে জেল হাজতে রয়েছে। ইসমাইলের মত এক একজন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী আইনের ফাঁক ফোকড় দিয়ে সহযে যাতে জামিনে বেরিয়ে আসতে না পারে এজন্য স্থানীয় জনসাধারণ প্রশাসনের কাছে জোড় দাবী জানিয়েছেন।