আপন নিউজ, কলাপাড়া অফিসঃ
কলাপাড়ার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের উত্তর হলদিবাড়িয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার দুই জনে প্রধান শিক্ষক হিসাবে বৈধ দাবী করে পাল্টা-পাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টায় কলাপাড়া রিপোর্টার্স ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান শিক্ষক মোঃ নুর সাঈদ নিজেকে বৈধ প্রধান শিক্ষক হিসাবে দাবী করে বলেন, তার বিরুদ্ধে একটি স্বার্থন্বেষী মহল মিথ্যা অভিযোগ এনে যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিনি উক্ত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং বলেন উক্ত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। যখন মাদরাসাটির পাঠদান ব্যবস্থা প্রায় অচল হয়ে পরেছিল সরকারী কোন অনুদান ও সুযোগ সুবিধা না থাকায় শিক্ষক পদে নিয়োগে কেহ আগ্রহ প্রকাশ না করায় তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির অনুরোধে তিনি সম্পূর্ণ অবৈতনিক ভাবে প্রধান শিক্ষকপদে উক্ত মাদরাসায় নিয়োগ প্রাপ্ত হন। পাঠদান কালীন সময়ে তিনি অন্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকলেও অবশিষ্ট সময়ে অত্র মাদরাসার শিক্ষার্থী সংগ্রহ, এলাকার দাতা ব্যক্তিদের সহায়তায় মাদরাসা ঘর সংস্কার, ফার্নিচার তৈরী, অবকাঠামো উন্নয়ন, স্বীকৃতি নবায়ন সহ মাদরাসাটি স্বয়ংসম্পূর্ন করেন, যার ফলশ্রুতিতে মাদরাসাটি উপবৃত্তির আওতাভূক্ত হয়। প্রতিবছর বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন ও ৫ম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষায় সন্তোষ জনক ফলাফল সম্ভব হয়েছে। ২০০৩ সন থেকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে মাদরাসাটি সরেজমিনে পরিদর্শন এবং বিভিন্ন সময়ে চাহিত তথ্যে প্রধান শিক্ষক হিসাবে তার নাম উল্লেখ্য আছে। প্রমান স্বরুপ তিনি ২০০৩ সনের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি বিতরনের কার্ড দেখান যেখানে প্রধান শিক্ষক হিসাবে তার স্বাক্ষর, তৎকালীন প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ কামরুল ইসলাম এবং অগ্রনী ব্যাংকের পিন্সিপাল অফিসার ও ব্যবস্থাপক মোঃ শফিকুর রহমানের স্বাক্ষর ও সীল রয়েছে। নুর সাঈদ বলেন, দেশের সকল বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের মোবাইলে এসএমএস এর মাধ্যমে এন.টি.আর.সি.এ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় (ডি.আই.এ) কতৃক প্রধান শিক্ষক হিসাবে তার নিজ নামে নিবন্ধনকৃত সীমে পাসওয়ার্ড প্রাপ্ত হয়েছেন। মাদরাসাটি এমপিও ভূক্তির পর্যায়ে পৌছে গেছে বুঝতে পেরে এলাকার ১টি স্বার্থন্বেসী মহল কৌশলে মাদরাসার সভাপতির ছেলেকে হাতিয়ার বানিয়ে তার বিরুদ্ধে সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ করায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহীদ হোসেন অভিযোগকারী জনাব মোসলেহ উদ্দিন এর অনুপস্থিতিতে তদন্ত কার্য সম্পাদন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি উল্লেখ করেন অত্র মাদরাসার সভাপতি জনাব মোঃ মোসলেহ উদ্দিন একজন প্রবীন ব্যক্তি বর্তমানে তার বয়স আনুমানিক ৯০ বছরের উপরে হবে। বার্ধক্য জনিত কারনে তার স্বাক্ষর বিভিন্ন সময়ে তারতম্য ঘটে থাকে যা তার কয়েকটি স্বাক্ষর একত্র করলেই প্রমাণ মিলবে। তখন সদ্য যোগদানকৃত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও তদন্তকারী কর্মকর্তা বিষয়টি বুঝার আগেই বাদীর অনুপস্থিতে ওই মহলটি কৌশলে প্রতিবেদন করিয়ে নিয়েছেন। ২০১৭ সালের এপ্রিল সালে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলামের পরিদর্শন প্রতিবেদনে প্রধান শিক্ষক হিসাবে মোঃ নুর সাঈদের নাম উল্লেখ আছে। প্রমাণ স্বরুপ তিনি পরিদর্শণ প্রতিবেদনের ছায়লিপি সাংবাদিকদের দেখান। সাংবাদ সম্মেলনে মোঃ নুর সাঈদ বলেন, ২০০৩ সন থেকে ২০০৭ সন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির কার্ডে প্রধান শিক্ষক হিসাবে তার স্বাক্ষর এবং উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষর ও অগ্রণী ব্যাংক কর্মকর্তার স্বাক্ষর রয়েছে মাদরাসার শতশত অভিভাবকদের উপস্থিতিতে শিক্ষা অফিসার ও ব্যাংক কর্র্তৃপক্ষ উপবৃত্তির টাকা বিতরন করছেন। সেখানে ২০১৭ সনে তাদের জমাদানকৃত ফাইল থেকে কাগজপত্র চুরি এবং সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে নিয়োগ দেখানোর কথা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে ওই মহলটিই ষড়যন্ত্রকারী, তাদের প্রস্তুতকৃত কাগজ পত্র ভুয়া ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
এ সময়ে মোঃ নুর সাঈদের সাথে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সহকারী শিক্ষক মোঃ আশ্রাফ আলী, মোঃ খাইরুল আমিন এবং অত্র এলাকার গণ্যমান্য সরদার আতিকুর রহমান (সালাম) ও নুর মোহাম্মদ বাদশা প্রমুখ।
প্রসংগত এর আগে একই এলাকার মোঃ নুরুজ্জামান নিজেকে ওই মাদরাসার প্রধান শিক্ষক দাবী এবং মোঃ নুর সাঈদের বিরুদ্ধে সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি সহ ব্যাপক দুর্নীতির অভিাযোগ এনে ৩০ নভেম্বর একই স্থানে সংবাদ সম্মেলন করেন।