শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:০২ পূর্বাহ্ন
বিশেষ আপন নিউজ প্রতিবেদকঃ
কলাপাড়ায় করোনাভাইরাস আতংককে পূঁজি
করে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা লাভের আশায় দোকান থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী সরিয়ে গুদাম জাত করার অভিযোগ উঠেছে। কেউ কেউ আবার অতিরিক্ত পন্য সামগ্রী মুজদ করতে বাসা-বাড়ী সহ নতুন জায়গায় গুদাম নেয়া শুরু করেছে। এছাড়া এক শ্রেনীর মানুষ আতংকিত হয়ে বাজার থেকে অতিরিক্ত নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী কিনে বাড়ীতে মজুদ করছে। এতে পাইকারী ও খুচরা বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর মারাত্মক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি খুচরা বিক্রেতারা পাইকারী আড়ৎদারদের কাছ থেকে গত দু’দিনে চাহিদা অনুযায়ী দ্রব্য সামগ্রী সংগ্রহ করতে পারছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
অথচ ইউএনও বললেন জনস্বার্থে ব্যবসায়ীদের তাদেরস্ব-স্ব দোকানে মূল্য তালিকা প্রদর্শনের জন্য বলা হয়েছে। বাজারে নজরদারি বাড়াতে সাদা পোষাকে টিম নিয়োজিত করা হয়েছে। এছাড়া দু’টি ভ্রাম্যমান আদালত সার্বক্ষনিক কাজ করছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতে কলাপাড়ায় আলু, পিঁয়াজ বহনকারী দু’একটি ট্রাক এলেও তা ক’জন পাইকারী আড়ৎদাররা নিজেদের মধ্যে বণ্টন করে নিয়েছে। যদিও পাইকারী আড়ৎদাররা বলছেন করোনার প্রভাবে তাদের চাহিদা অনুযায়ী মাল সরবরাহ করছেন না মহাজনরা। তারা এও বলছেন বাজার থেকে ক্রেতারা প্রয়োজন অতিরিক্ত দ্রব্য সামগ্রী কিনে বাড়ীতে মজুদ করার দরুন বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। শনিবার আলুর পাইকারী বাজারে আড়ৎদাররা তিন দফা মূল্য নির্ধারন করেছেন। ১ম দফায় ২০, ২য় দফায় ২১-২২ এবং ৩য় দফায় ২৩-২৫ টাকা। এতে বাজারে বর্তমানে প্রতিকেজি আলু বিক্রী হচ্ছে ২৮-৩০ টাকা দরে।
১সপ্তাহ পূর্বে প্রতি কেজি আলুর খুচরা মূল্য ছিল প্রতি কেজি ১৫-১৮ টাকা। বাজারে ফের পিঁয়াজ নিয়ে কারসাজিতে মেতেছেন ব্যবসায়ীরা। ১সপ্তাহ পূর্বে প্রতি কেজি পিঁয়াজ’র খুচরা মূল্য ছিল ৪০ টাকা বর্তমানে প্রতি কেজি পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা দরে। এর পর চালের বাজারেও প্রভাব পড়েছে করোনার। পতি বস্তা চালের মূল্য বেড়েছে ২০০-২৫০ টাকা হারে। তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে লিটার প্রতি ৫-১০ টাকা হারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক খুচরা দোকানী জানান, বৃহস্পতিবার থেকে তারা আড়ৎদারদের কাছ থেকে চাহিদা অনুযায়ী দ্রব্য সামগ্রী পাচ্ছেন না। আড়ৎদাররা তাদের গুদামে মাল থাকার পরও ছাড়ছেন না। এরপরও নতুন গুদাম কিংবা বাসা-বাড়ীতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী মজুদ করছেন।
এদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর মূল্যের উর্ধ্বগতি রোধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র দাবী উঠেছে অসাধু ব্যবসায়ীদের লাগাম টেনে ধরার।
অগনিত সচেতন মানুষ অসাধু ব্যবসায়ীদের বাসা-বাড়ী সহ নতুন-পুরাতন গুদাম গুলো সার্চ করার দাবী করেছেন স্থানীয় প্রশাসনের কাছে। তবে শনিবার প্রধানমন্ত্রী ঢাকা-১০ আসনের উপ-নির্বাচনে ভোট প্রদান শেষে জনগণকে আতঙ্কিত হয়ে অতিরিক্ত পণ্য কেনা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, দেশে পর্যাপ্ত খাদ্য শস্যের মজুদ রয়েছে। অযথা আতঙ্কিত হয়ে বেশি করে পণ্য কিনে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ানো গর্হিত কাজ। সবাইকে এই ধরণের অপতৎপরতা থেকে বিরত থাকতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ’করোনা ভাইরাসের সুযোগ নিয়ে কেউ যেন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত করতে না পারে সেদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং জনগণকে নজরদারি বাড়াতে হবে। আমাদের পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। তাই, আতঙ্কিত হয়ে অতিরিক্ত খাদ্য দ্রব্য কেনার
দরকার নেই।’
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মুনিবুর রহমান জানান, ’বৃহস্পতিবার রাতে মহিপুর মৎস্য বন্দর বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ৭০ টাকা কেজি দরে পিঁয়াজ বিক্রি করায় বাবুল চন্দ্র দাস নামের এক ব্যবসায়ীকে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং পৌরশহরের সদর রোডে মাতৃছায়া এন্টার প্রাইজের মালিক কাওসার গাজী রাস্তার পাশে অবৈধভাবে গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ করার অভিযোগে তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ’জনস্বার্থে ব্যবসায়ীদের তাদের স্ব স্ব দোকানে মূল্য তালিকা প্রদর্শনের জন্য বলা হয়েছে। বাজারে নজরদারি বাড়াতে সাদা পোষাকে টিম নিয়োজিত করা হয়েছে। এছাড়া এসিল্যান্ড ও আমি পৃথক দু’টি ভ্রাম্যমান আদালত নিয়ে মজুদদারী রোধে সার্বক্ষনিক কাজ করে যাচ্ছি।
মুজদদারী করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দ্রব্য মূল্যের বৃদ্ধি করার সাথে জড়িতদের কোন ভাবেই ছাড় দেয়া হবেনা।’
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply