আমতলী প্রতিনিধিঃ
বরগুনার আমতলী উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের নেছার উদ্দিন মোল্লার নির্মাণাধীন ঘর সোমবার সন্ধ্যায় হাসেম হাওলাদার ও মহসিন আলম খোকার লোকজন ভেঙ্গে মালামাল লুট করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়নে উপস্থিত হয়ে ঘর মালিক নেছার উদ্দিন মোল্লা এ অভিযোগ করেন।
জানাগেছে, উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের দরিদ্র নেছার উদ্দিন মোল্লা ও প্রবিবেশী প্রভাবশালী হাসেম হাওলাদার ও তার ভাইয়ের ছেলে মহসিন আলম খোকার সাথে ৩০ একর জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। নেছার উদ্দিন মোল্লার দাবী তার দাদা আমিন উদ্দিন মোল্লার রেকর্ডীয় জমি হাসেম হাওলাদার ও তার লোকজন জোড়পুর্বক ভোগদখল করে নিয়েছে। হাসেম হাওলাদারের দাবী ওই জমি নেছার মোল্লার দাদার কাছ থেকে তার বাবা ইসহাক হাওলাদার দলিল মুলে ক্রয় করেছেন। এ জমি নিয়ে নেছার উদ্দিন মোল্লা প্রতিপক্ষ হাসেম হাওলাদার ও খোকার কাছে কয়েক দফা দলিলপত্র দেখার তাগিদ দেন কিন্তু হাসেম হাওলাদার ও খোকা দলিল পত্র দেখাতে রাজি হয়নি। এনিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে স্থানীয় ভাবে কয়েক দফায় শালিস বৈঠক হয়। কিন্ত শালিস বৈঠকের সিদ্বান্ত মানেন না তারা। ওই বিরোধীয় জমিতে নেছার উদ্দিন মোল্লা ও তার পরিবারের লোকজন বসত ঘর নির্মাণ করেন। ঘর নির্মাণের ঘটনায় হাসেম হাওলাদার আমতলী থানায় নেছার উদ্দিন মোল্লা ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নেছার মোল্লা ও তার লোকজনকে থানায় নিয়ে আসেন। এই সুযোগে সোমবার সন্ধ্যায় হাসেম হাওলাদার ও খোকার নেতৃত্বে তার সহযোগীরা ঘর কুপিয়ে ভেঙ্গে ফেলে এবং ঘরে থাকা মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়নে উপস্থিত হয়ে নেছার উদ্দিন মোল্লা এমন অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় দু’পক্ষের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করেছেন এলাকাবাসী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, নেছার মোল্লার ঘর প্রভাবশালী হাসেম হাওলাদার ও খোকার নেতৃত্বে তাদের সহযোগীরা কুপিয়ে ভেঙ্গে ফেলেছে।
নেছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, আমার দাদার রেকর্ডীয় ৩০ একর জমি প্রভাবশালী হাসেম হাওলাদার ও তার ভাইয়ের ছেলে মহসিন আলম খোকা তাদের লোকজন দিয়ে জোড়পূর্বক দখল করে নিয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ওই জমির কাগজপত্র দেখতে চাইলে তারা দেখাননি। উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা হত্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করেছে। তিনি আরো বলেন,আমার দাদার রেকর্ডীয় জমিতে আমি ঘর তুলেছি। ওই ঘর তারা কুপিয়ে ভেঙ্গে ফেলেছে এবং মালামাল লুট করে নিয়ে গেছেন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
প্রভাবশালী হাসেম হাওলাদার ঘর ভাঙ্গার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমার বাবা ইসহাক হাওলাদার প্রতিবেশী নেছার উদ্দিন মোল্লার দাদা আমিন উদ্দিন মোল্লার কাছ থেকে ৩০ একর জমি দলিল মুলে ক্রয় করেছে। ওই জমিতে নেছার ও তার লোকজন ঘর তুলেছে।
আমতলী থানার এসআই মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, হাসেম হাওলাদারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওসির নির্দেশে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘর তোলা দেখেছি। শান্তি শৃংখলা রক্ষায় উভয় পক্ষকে নিবৃত করেছি। পরে শুনেছি ওই ঘর ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আবুল বাশার বলেন, ঘর ভাঙ্গার বিষয়ে অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।