মতামত ডেস্কঃ
প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আর মৃতের সংখ্যা। যে কোনো সময়ই আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে প্রতিটি মানুষ। যেহেতু প্রাণঘাতী এই করোনার ভয়ে সকলেই ভীতস্থ কেননা এখন পর্যন্ত কোন প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। তাই সচেতনাতা বেঁচে থাকার একমাত্র পথ। যদি কোনোভাবে করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন তাহলে পরিবারের বাকী সদস্যেদের যেভাবে রক্ষা করবেন সে সম্পর্কে খানিকটা ধারণা পাওয়া সম্ভব হবে এ প্রতিবেদন থেকে।
আল্লাহ্ সবাইকে ক্ষমা করুণ। হেফাজতের মালিক একমাত্র আল্লাহ্।।
#হোমকোয়ারেন্টাইনে থাকাঃ কেউ আক্রান্ত হলে সবচেয়ে ভালো হয় আলাদা কক্ষে থাকা। যদি সেটা সম্ভব না হয় তৈরি করতে হবে কোয়ারেন্টিন জোন। যেখানে বাকি সদস্যদের কাছ থেকে ন্যূনতম ৬ ফুটের দূরত্ব রাখতে হবে। মূলত হাঁচি-কাশির ফলে শ্বাসতন্ত্র থেকে নির্গত ড্রপলেটের মাধ্যমেই নতুন এ করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। কাশি হচ্ছে কভিড-১৯-এর উপসর্গগুলোর অন্যতম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ড্রপলেট সাধারণত ছয় ফুটের বেশি দূরে যেতে পারে না। যে কারণে আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে ছয় ফুট দূরত্ব বজায় রেখে চললে তা অন্যদের সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতে পারে।
#উচ্চঝুঁকি থাকলে অন্য কোথাও থাকাঃ এখনো আক্রান্ত হননি, তবে হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন তাহলে অন্য কোথাও একাকী থাকলে পরিবারের সবাই ঝুঁকি থেকে বেঁচে যাবে। তবে আপনি যদি উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন হন, তাহলে কারো সংস্পর্শ এড়ানোর জন্য এটি করতে পারেন।
#কারো কাছ থেকে সরাসরি খাবার নিবে নাঃ আক্রান্ত ব্যক্তি অবশ্যই অন্য কারো হাত থেকে সরাসরি খাবার গ্রহণ করবেন না। এমনকি সেটি কোনো পাত্রে থাকলেও না। দেখাশোনা করার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি খাবার দরজার কাছে রেখে যাবেন। আর আলাদা রুম না থাকলে কোয়ারেন্টিন জোনের কাছাকাছি খাবার রেখে দিতে হবে এবং সেক্ষেত্রে সহায়তাকারী সেই ব্যাক্তিও মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পরিহিত অবস্থায় থাকবেন।
#আক্রান্ত ব্যাক্তির থাকার স্থান জীবাণুমুক্ত রাখাঃ আক্রান্ত ব্যক্তি দ্বারা স্পর্শ করা সব স্থান এবং কোয়ারেন্টিন জোনের বাইরের জায়গাগুলোও জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। শরীরের বাইরে অন্যান্য জায়গায় করোনাভাইরাস অনেকদিন পর টিকে থাকতে পারে। বিশেষ করে বাথরুম ও রান্নাঘর। এছাড়া ঝুঁকি এড়াতে জামাকাপড়ও নিয়মিত ধুয়ে ফেলতে হবে।
#সম্ভব হলে আলাদা বাথরুমঃ সম্ভব হলে আক্রান্ত রোগীর আলাদা বাথরুম ব্যবহার করা উচিত। যদি সেটা সম্ভব না হয়, তবে প্রতিবার বাথরুম ব্যবহারের পর ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। যে কারণে একই বাথরুম আক্রান্ত এবং অন্যদের ব্যবহার করতে হলে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে তা জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।
#নির্দিষ্ট বস্তুর আলাদা ব্যবহারঃ টিভি রিমোর্ট অথবা ফোনের মতো নির্দিষ্ট কিছু বস্তু, যা অবশ্যই আক্রান্ত ব্যক্তি আলাদাভাবে ব্যবহার করবে। এমনকি খাওয়ার জন্য ব্যবহৃত পাত্রও হবে আলাদা, যা কেবল আক্রান্ত ব্যক্তিই ব্যবহার করবে। পাশাপাশি এগুলো আলাদাভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
#একজন নির্দিষ্ট শুশ্রূষাকারী থাকাঃ আক্রান্তের দেখাশোনা করার জন্য কেবল একজন শুশ্রূষাকারী থাকাটা আবশ্যক। তাকে অবশ্যই মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পরে থাকতে হবে। পাশাপাশি বারবার হাত ধোয়াসহ অন্যান্য সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
#পোষা প্রাণীর কাছ থেকে দূরত্ব রাখতে হবেঃ করোনার বিস্তার ঠেকাতে পোষা প্রাণীকে আক্রান্তের কাছ থেকে দূরে রাখতে হবে। একটু অসচেতন হলে তাদের কাছ থেকেই ছড়িয়ে পড়তে পারে ভাইরাস।
#ঘরের বাইরের লোকদেরও বাঁচানোঃ আপনি যদি আক্রান্ত হন, তবে শারীরিকভাবে আপনার কাছাকাছি আসা লোকজন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকবেন। কিন্তু ঘরের বাইরের লোকজনের মাঝেও ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই উপসর্গগুলো সবসময় নজরদারিতে রাখতে হবে। যদি অবস্থার অবনতি হয়, তবে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে। ডাক্তারের সাথে ফোনে আলাপের মাধ্যমে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে হবে।।
সচেতন থাকুন নিরাপদে থাকুন।।
মহান আল্লাহ্ এই মারাত্মক মহামারি থেকে আমাদের সকলকে হেফাজত করুণ।।
মো. আবু ইউসুফ (প্রভাষক, হিসাববিজ্ঞান বিভাগ) সরকারি মোজাহারউদ্দিন বিশ্বাস কলেজ, খেপুপাড়া, পটুয়াখালী।