মতামত ডেস্কঃ
বিশ্ব জুড়ে চলছে করোনার তোলপাড়। প্রতিদিন এই করোনার কারনে হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। করোনায় আক্রান্তের সংখ্যাও দিন দিন বেড়েই চলেছে। বাড়ছে এতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যাও। পুরো বিশ্বের সঙ্গে করোনা আতঙ্কে ভুগছে আমাদের বাংলাদেশ। এই মহামারি করোনার বর্তমান অবস্থায় একটাই ঔষধ নিজেকে সচেতন এবং সাবধানে রাখা।
সাধারণত করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কমে যায়। বয়স্কদেরই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। এ থেকে নিউমোনিয়া বা শ্বাসনালীর ব্যাধির মতো মারাত্মক অসুস্থতায় আক্রান্ত হওয়ারও ঝুঁকি থাকে।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কিছু লক্ষণঃ
সাম্প্রতিক একটি মেডিকেল জার্নালে তিনটি লক্ষণের কথা বলা হয়েছে। যেখান থেকে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার দেহে COVID-19 এর সংক্রমণ শুরু হয়েছে কিনা!
#প্রথমত, আপনার দেহে করোনা থাবা বসালে প্রথম পাঁচদিন আপনার কাশির সঙ্গে শুকনো কফ থাকবে। শরীরে অস্থিরতা অনুভব হবে।
#দ্বিতীয়ত, হঠাৎ করেই খুব জ্বর আসবে। সেই জ্বর চট করে নামতে চাইবে না। মাথা ব্যথা অনুভব হবে, ঘুম কমে যাবে ও চোখ জ্বালাপোড়া করবে।
#তৃতীয়ত, জ্বরের সঙ্গে শুরু হবে শ্বাসকষ্ট। সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে ফুসফুসে। ফুসফুস ফুলে ওঠা থেকে নানারকম সমস্যা দেখা দেবে শরীরে। সেই সঙ্গে সারা শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা, সর্দি, মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব হওয়া, এবং পেটে ব্যথা বা পেট খারাপ হওয়া।
শেষের দিকে শরীরে যেসব উপসর্গ দেখা দিবে এগুলো তীব্র আকার ধারণ করবে।
কীভাবে রক্ষা করবেনঃ
২.৫০ গ্লাস পানি নিতে হবে তার সাথে একটি কাটা লেবু, সমপরিমাণ কাটা আদা, দুই চামচ ঘানিতে ভাঙ্গানো খাঁটি সরিষার তৈল, এক চামচ কালো জিরার তৈল এক সঙ্গে মিশিয়ে ফুটানো পানির ভাব নাকে মুখে নিতে হবে এবং মিশ্রিত এক গ্লাস কুসুম গরম পানি খেতে হবে। দিনে ৪/৫ বার এ নিয়মটি মেনে চললে আল্লাহ ভাইরাসটির আক্রান্ত হওয়া থেকে বাঁচিয়ে তুলতেও পারেন।
সাধারণভাবে করোনাভাইরাস থেকে সচেতন থাকার জন্য নিয়মিত যা করবেন কিছুক্ষণ পরপর ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।
কাশির সময় অবশ্যই রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনে মাস্ক ব্যবহার করুন।
অসুস্থ ব্যক্তি বা বয়স্ক, শিশুদের এড়িয়ে চলুন।
এই সময়ে সর্দি-কাশি হলে যা করবেনঃ
বাইরে থেকে বাড়ি গিয়ে গোসল করাটাও কাজের কথা নয়। সারাদিন হালকা গরম পানি খান। গলায় ব্যথা বা সর্দি-কাশির সম্ভাবনা দেখা দিলে তো এই রুটিন চালু করতেই হবে। সেই সঙ্গে জোর দিন ভিটামিন সি খাওয়ার উপরেও। লেবু, আমলকী, পেয়ারায় প্রচুর ভিটামিন সি মিলবে।
আদা দিয়ে কালো চা খাওয়া বা লবঙ্গ, আদা, গোলমরিচ, তেজপাতা ফুটিয়ে নিয়ে চায়ের মতো পান করলে সর্দি-কাশিতে ভালো ফল পাবেন। তাজা শাক-সবজি, ফল, বাদাম রাখুন খাদ্যতালিকায়।
যদি সর্দি-কাশি হয়, তা হলে বাড়িতে থাকুন। বিশ্রাম নিন। যেকোনো ভাইরাসের বিরুদ্ধেই শরীর প্রতিরোধ গড়ে তুলবে দ্রুতই, ততদিন অপেক্ষা করতে হবে।
হাঁচি-কাশির সময় মুখ-নাক ঢেকে রাখুন যাতে ভাইরাস না ছড়ায়। সেই সঙ্গে বারবার হাতে স্যানিটাইজার ব্যবহার করবেন। মুখে বা নাকে হাত দেওয়ার অভ্যাস থাকলে সেটা ছাড়তে হবে।
বাড়ির সবার থেকে কয়েক দিন একটু দূরে থাকতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়। যারা অসুস্থ রোগীর সেবার কাজ করছেন, তারাও একটু দূরত্ব বজায় রেখে চলবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের পর্যাপ্ত সক্ষমতা রয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’
তবে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সবাইকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় প্রতিদিন করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত নির্দেশনা দিচ্ছে। আমি অনুরোধ করবো সকলকে সেই নির্দেশনাবলি মেনে চলার।’।
মো. আবু ইউসুফ (প্রভাষক, হিসাববিজ্ঞান বিভাগ, সরকারি মোজাহারউদ্দিন বিশ্বাস কলেজ, খেপুপাড়া, পটুয়াখালী।