আপন নিউজ,বিশেষ প্রতিবেদকঃ
কলাপাড়া পৌর কৃষক লীগের সভাপতি এস এম মুরতাল্লা ওরফে সৌরভ সিকদারের বিরুদ্ধে দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে মসজিদ, মাদ্রাসা, সংখ্যালঘু ব্যক্তিবর্গের জমি দখলের অভিযোগ এনে শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় ভূক্তভোগী কয়েকটি পরিবার কলাপাড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সৌরভের অনিয়ম, জবর দখলের বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পৌর শহরের মাদ্রাসা সড়কের বাসিন্দা মো. মনিবুর রহমান। তিনি বলেন, ১৯৫৩ সালে তাঁর মা নুরজাহান সিকদারের জমির সাথে খেপুপাড়া নেছারুদ্দিন ফাযিল মাদ্রাসার স্থাবর সম্পত্তির এওয়াজ বদল হয়। মাদ্রাসার জমি বুঝিয়ে দিয়ে তাঁরা যেখানে বসবাস করছেন, সে জমিতে একটি দুইতলা পাকা ভবন, দুইটি টিনসেট দোতলা ভবন, বাঁধানো পুকুর ঘাট ও কবরস্থান করেছেন। বর্তমান তাঁদের বসবাসকৃত জমি থেকে মসজিদ ও মাদ্রাসার জন্য আরও কিছু জায়গা দান করেন। সর্বশেষ বিএস জরিপও তাঁদের নামে হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে তাঁরা বালু ভরাট করে ঘর তোলার উপযোগী করে। পৌরসভা ইতিমধ্যে সেখানে ৬ ফুট প্রশস্ত আরসিসি রাস্তা নির্মাণ করেছে। বালু ভরাটের পর জমির সৌন্দর্য ও দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লোভাতুর দৃষ্টি পরে সৌরভ সিকদারের। ৬৭ বছর যাবৎ ভোগ দখল করা জমিতে বালু ভরাট করে ঘর তুলতে গেলে সৌরভ সিকদার সন্ত্রাসী দলবল নিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে, সেখানে তাঁদের প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড পুকুরে ফেলে দেয়। অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দ করে। সৌরভ গরু কিনতে দুইলাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। অন্যথায় মারধোর ও হত্যার হুমকি দেয়। কলাপাড়া পৌর কৃষকলীগ সভাপতির জমির সাথে কোনো ধরণের সম্পর্ক না থাকলেও সম্পূর্ণ দলীয় পদের অবৈধ ক্ষমতা প্রয়োগ করে চাঁদাবাজি, জবর দখল করার জন্য তাঁদের পরিবারকে হয়রানী করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা দাবি করেন, এ নিয়ে তাঁরা সৌরভের সাথে সামাজিকভাবে ফয়সালা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু সৌরভ দুই লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে অনড় থাকেন। গত ৬ মাসেরও অধিক সময় তাঁদের ঘর তোলার কাজ বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ভূক্তভোগী সুনির্মল হাওলাদার বলেন, পৈত্রিকসূত্রে পাওয়া জমি ৭০ বছর ধরে ভোগ দখল করছি। সে জমির ওপর ১০ বছর আগে নজর পরে সৌরভ সিকদারের। ভোগদখলকৃত সে জমির সীমানা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয় সৌরভ। কয়েকদিন আগে ৭৯ খতিয়ানে রাস্তা তৈরি করতে গেলেও সৌরভ স্ব-শরীরে এসে বাঁধা দেয় এবং কাজের লোকদের তাড়িয়ে দেয়। আমার পৈত্রিক জমিতে ঘর তুলতে প্রশাসনের সহযোগিতা চাই
সুনির্মল হাওলাদারের কাছ থেকে জমি কিনেছেন আবদুল মালেক মিয়া ও শাহিদা বেগম। সৌরভের বাঁধা আর হুমকির কারণে এ দু’জনও ক্রয়কৃত জমি ভোগদখল করতে পারছেন না। তাঁরা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আমরা জমিতে সিমানা পিলার, কাটাতারের বেড়া দেই। সৌরভ সিকদার দলবল নিয়ে তা উপড়ে ফেলে দিয়েছে। কয়েকদফা ঘর তুলতে গেলেও সৌরভের ক্ষমতা আর দাপটের কাছে পারিনি। আজ আমরা বড়ই অসহায়। সে আমাদের জীবনকে অতিষ্ট করে তুলছে।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া পৌর কৃষকলীগের সভাপতি এস এম মুরতাল্লা ওরফে সৌরভ সিকদার বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যতগুলো অভিযোগ আনা হয়েছে, তার একটিও সঠিক নয়। আমাকে রাজনৈতিক- সামাজিভাবে হেয় করতে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।’ এসব ভিত্তিহীন মিথ্যা অভিযোগে তীব্র প্রতিবাদ জানাই।