আমতলী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন বি ত ১৩ বিদ্রোহী প্রার্থী ও দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করা তৃণমুল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শুক্রবার রাতে আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ একে স্কুলের এক বিশেষ বর্ধিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ১৩ বিদ্রোহী প্রার্থী এবং তৃণমুল নেতাকর্মীরা অন্য প্রার্থীর পক্ষ কাজ করলে দলীয় শৃ্খংলা ভঙ্গের অভিযোগে গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী ও দলীয় শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

জানাগেছে , আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী, কুকুয়া, আঠারোগাছিয়া, হলদিয়া, চাওড়া ও আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ১১ এপিল। এ নির্বাচনে ৩৮ জন মনোনয়ন প্রত্যার্থী দলীয় মনোনয়নের জন্য আবেদন করেন। গত ১৩ মার্চ  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক দলীয় যৌথ সভায় গুলিশাখালী অ্যাডভোকেট এইচএম মনিরুল ইসলাম, কুকুয়া মোঃ বোরহান উদ্দিন আহম্মেদ মাসুম তালুকদার, আঠারোগাছিয়া মোঃ হারুন অর রশিদ হাওলাদার, হলদিয়া মোঃ শহীদুল ইসলাম মৃধা, চওড়া মোঃ আখতারুজ্জামান খাঁন বাদল ও আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নে মোসাঃ সোহেলী পারভীন মালাকে দলীয় মনোনয়ন দেন। কিন্তু দলীয় মনোনয়ন বি ত হয়ে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে গুলিশাখালী  ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আলহাজ¦ নুরুল ইসলাম, আসাদুর রহমান আসাদ, মোঃ গোলাম ফারুক, কুকুয়া ইউনিয়নে মাওলানা মোঃ ফজুলল হক, আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নে মোঃ রফিকুল ইসলাম রিপন, মোঃ জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ বারেক তালুকদার, হলদিয়া ইউনিয়নে মোঃ আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক, চাওড়া ইউনিয়নে মোঃ আলতাফ হোসেন হাওলাদার, মোঃ আলমগীর কবির, তরিকুল ইসলাম নিপু, আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নে মোঃ মাহবুবুল আলম জাফর বিশ্বাস ও মোঃ হুমায়ূন কবির বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। এতে বিদ্রোহী প্রার্থীদের জন্য তৃণমুল নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম বিশৃংখলা সৃষ্টি এবং তারা বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় দলের ভারমুর্তি বিনষ্ট হচ্ছে। তাই দলীয় শৃংখলা ও নৌকার প্রার্থীদের বিজয়ী করতে উপজেলা আওয়ামীলীগ বিশেষ  বর্ধিত সভার আয়োজন করেছে বলে জানান সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান। শুক্রবার রাতে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অ্যাডভোকেট এম এ কাদের মিয়ার সভাপতিত্বে একে স্কুলের এ বিশেষ বর্ধিত সভায় বিদ্রোহী প্রাথীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার এবং তৃণমুল নেতা-কর্মীরা দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত  হয়।

কুকুয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সদস্য বিদ্রোহী প্রার্থী মাওলানা মোঃ ফজলুল হক বলেন, আমার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে যেই ব্যবস্থা নেয়া হোক  না কেন? আমি মনোনয়নপত্র দাখিল করেছি সেহেতু নির্বাচন করবোই।

আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ জাফর বিশ্বাস বলেন, দল আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আমার কিছুই করার নেই। আমি বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবো।

গুলিশাখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে কোন নির্দেশনা নেই দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া যাবে না, তাই আমি প্রার্থী হয়েছি। তিনি আরো বলেন, বিগত আমতলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে যারা দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে দলতো কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এখন কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে?

আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অ্যাডভোকেট এম এ কাদের মিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে দলের বিরুদ্ধে যে সকল নেতাকর্মী কাজ করবে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।