শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৫৮ পূর্বাহ্ন
বিশ্বাস শিহাব পারভেজ মিঠুঃ আঙ্গুলে সুই ঢুকিয়ে,হাতের নখ উঠিয়ে,পায়ে রডের চাপ দিয়ে নিযার্তনের মাধ্যমে অমানুষিক অত্যাচার ও ভয় ভীতি দেখিয়ে মিতুর কাছ থেকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নিয়ে একটি মিথ্যা মামলাকে সত্য প্রমান করার অভিযোগ উঠেছে আমতলী থানা পুলিশের সাবেক সদস্যদের উপর।
কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া গ্রামের শাহ-আলম আকনের মেয়ে মিতু এ অভিযোগ তোলেন। পাঁচ দিন আমতলী থানায় আটক রেখে বিভিন্ন ধরনের ভয় ভীতি দেখিয়ে তার কাছ থেকে জবানবন্দি নিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে মিতু ও তার বৃদ্ধা মাকে। একটি মামলা এজাহারের ১৭ দিন পর চাকামইয়া ইউনিয়নের গ্রামের বাড়ি থেকে ওই মামলায় তাদেরকে ধরে নিয়ে যায় আমতলী থানা পুলিশ। অথচ মামলার এজাহারে তাদের নাম ছিলনা,সেখানে কি করে ওই মামলায় তারা আসামী হল তার কিছুই জানেনা মিতুর পরিবার। বাদি মামলায় যে ব্যাংক একাউন্ট ও ফোন নাম্বার উল্ল্যেখ করেছেন তার একটিও মিতুর নয়। তাহলে তাদের কাছ থেকে কোটি টাকা নিলো কি ভাবে নির্যাতিত মিতু। কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা মো.ফারুকের স্ত্রী হনুফা বেগম বাদী হয়ে আমতলী থানায় একটি প্রতারণা মামলা করেন। সেই মামলায় পাঁচদিন আমতলী থানায় আটকে রেখে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে জবানবন্দি নিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয় মিতু ও তার বৃদ্ধা মাকে। তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) অফিসার বাদল ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই রফিকসহ আমতলী থানা সাবেক পুলিশের বিরুদ্ধে এসকল অভিযোগ তোলেন ভুক্তভোগী মিতু। ওই পরিবারটির বিরুদ্ধে স্বামী ও স্ত্রী মিলে ৪টি মামলা দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানায়ায়, ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল মো.ফারুক সরদারের স্ত্রী হনুফা বেগম বাদি হয়ে আমতলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন মামলা নং জি.আর ১৩৮/১৭। মামলার এজাহারে মিতুর নাম না থাকলেও অজ্ঞাত নামা হিসেবে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) অফিসার বাদল ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই রফিক সহ আমতলী থানা পুলিশ প্রশাসনের নির্মম অত্যাচার ও ভয়ভীতির কারনে সেদিন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য হয়েছিলেন মিতু ও তার বৃদ্ধ মা আয়শা খাতুন। মিথ্যা ওই মামলায় ১ মাস ১৭ দিন জেল হাজত বাস করে জামিনে বের হলেও ফারুক সরদার ও তার স্ত্রী হনুফা বেগমের রোষনাল থেকে রক্ষা পায়নি মিতু ও তার পরিবার। ২০১৮ সালের ২৪ নভেম্বর মো.ফারুক সরদারের স্ত্রী হনুফা বেগম বাদি হয়ে বিদেশে অবস্থানরত মিতুর স্বামী মো.মাসুদ রানাকে ১ নং আসামী করে কলাপাড়া আদালতে আরেকটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং ১৭০/২০১৮। ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর জামিন বাতিলের জন্য আমতলী আদালতে মিথ্যে অভিযোগ করলে মিতু ও তার মা ১৪ দিন জেল হাজত বাস করেন। ২০১৮ সালের ১৭ নভেম্বর মো.ফারুক সরদারের চক্রের সদস্য আপন প্যাদা বাদি হয়ে দ্রুত বিচার আদালতে মিতু ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করেন মামলা নং ৪৭/২০১৯। উক্ত মামলাটি পিবিআই পটুয়াখালী কর্তৃক তদন্ত হলে মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় অব্যাহতি পান মিতুর পরিবার। ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর মো.ফারুক বাদী হয়ে ৩য় আদালত পটুয়াখালী একটি মামলা দায়ের করেন মামলা নং সি আর ১৮৯/২০২১। এভাবে একের পর এক ৫ টি মিথ্যে মামলা ও হুমকি দিয়ে জিম্মি করে রেখেছেন মিতুর পরিবারকে। মো. ফারুক সরদারের নেতৃত্বে একটি চক্র হামলা, মামলা ও হুমকি দিয়ে র্নিযাতন করে আসছে ওই পরিবারটিকে।
মিতু আরোও বলেন,আমার বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের মামলাসহ একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। টাকা আত্মসাতের মামলায় তারা যে ব্যাংক এ্যাকাউন্ট ও মোবাইল নাম্বারের কথা উল্লেখ করেছেন তার একটিও আমার নামে নয়। পুলিশ প্রশাসন সঠিক ভাবে তদন্ত করলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে বলে মনে করেন ভুক্তভুগী ওই পরিবারটি। ভুক্তভোগী মিতু তার বিরুদ্ধে আনিত সকল মামলার সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দোষীদের শাস্তিসহ মিথ্যা মামলা হতে তাকে মুক্তি দেয়ার জন্য যথাযথ র্কতৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।
মামলার বাদি হনুফা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আপনারা কি সরকারি লোক,আপনাদের সাথে কোন কথা বলতে রাজি নই,মামলার ব্যাপারে কিছু জানতে চাইলে কোর্টে যান।
মামলার বাদি মো.ফারুক সরদার বলেন,আদালতে মামলা চলমান রয়েছে,আদালত যে রায় দিবে আমরা তা মেনে নিবো।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমতলী থানার সাবেক এস আই রফিক জানান,মামলার তদন্ত রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়া আছে।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply