শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৮:৪২ অপরাহ্ন
রিপোর্ট: নূরুল আমিনঃ
সাগর পাড়ের জনপদ কলাপাড়ায় প্রতি মন মাত্র ৪০০ টাকা করে ধান বিক্রি করে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। উচ্চ মূল্যে সার বীজ কীটনাষক কিনে, ৬০০ টাকা করে বদলা খাটিয়ে ধানের ন্যার্য মূল্য না পাওয়ায় তাদের মাঝে দেখা দিয়েছে হতাশা। অব্যাহত লোকসানের মুখে বাপ দাদার আদি পেশা ছেড়ে তারা বিকল্প কর্মসংস্থানের কথা ভাবছেন। এতে ঝুকির মুখে পড়তে পারে কৃষিখাত। জরুরী ভিত্তিতে ধানের ন্যার্য মূল্য নিশ্চিত করনের মাধ্যমে কৃষকদের রক্ষা করার দাবী সংশ্লিষ্টদের।
গত বৃহস্পতিবার উপজেলার মহিপুর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে সকাল থেকে কৃষকরা বসে আছে দালালদের অপেক্ষায়। দুপুর গড়িয়ে বিকাল হলেও কোন দালালের দেখা মিলছে না। ধান কিনতে রাজি হচ্ছে না কোন আড়ৎদার বা ব্যাপারী। অবশেষে বেলা ৪ টার দিকে দু’ একজন দালালের দেখা মিললেও তারা ৪০০ টাকার উপরে ধান কিনতে নারাজ। নিরুপায় হয়ে রাগে ক্ষোভে ওই দামেই ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন অনেক কৃষক। তারা জানান, আগামী বছর থেকে আর তারা জমি চাষাবাদ করবেন না। একই দৃশ্য দেখা গেল গতকাল রোববার আলীপুর বাজারেও। চাপলী, পাখীমারা বানাতীসহ উপজেলার অন্য হাট গুলোর চিত্রও ভিন্ন নয়। সর্বত্রই কৃষকদের মাঝে হাহাকার। তাদের চোখে মুখে বিষন্নতার ছাপ। অনেক কষ্ট করে এবং অনেক টাকা খরচ করে ফলানো ধান এখন তাদের পানির দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের মস্তফাপুর গ্রামের কৃষক আ: রাজ্জাক শরীফ (৫৫) জানান, প্রতিকানি জমি একসনা ইজারা মূল্য সহ চাষাবাদ খরচ প্রায় ৬০ হাজার টাকা। ভাল ফসল ফলার পরও প্রতিকানি জমির ধান বিক্রি করতে হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকায়। এভাবে প্রতি কানি জমি চাষ করে ২০/২৫ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের। এদিকে কৃষক আবু হানিফ, গোলাম মস্তফা, নজরুল ইসলাম, জামাল শিকারীসহ অনেক কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানাগেছে, কৃষকদের কাছ থেকে সরকার ধান কিনবেন বলে তারা শুনেছেন কিন্তু কখন, কোথায়, কিভাবে ধান কেনা হবে সে ব্যপারে তারা কিছুই জানেন না। হলদি বাড়িয়া গ্রামের কৃষক ছালাম হাওলাদার বলেন, জমি জমা চাষ করে লাভ নেই। গত বছরও লোকসান হয়েছে । এ বছরও হবে। এ ভাবে লোকসান গুনতে থাকলে কুষক ধ্বংশ হয়ে যাবে। কৃষক বাঁচাতে ধানের ন্যার্য মূল্য নিশ্চিত করার জন্য তিনি সরকারের প্রতি জোড় দাবী জানান। নিজামপুর গ্রামের কৃষক মোহাম্মাদ আলী ফকির জানান, আগে ধান কেনার জন্য ফড়িয়ারা অগ্রিম টাকা দিত আর এখন আগে ধান নিয়ে যায়। পরে গিয়ে কৃষকদের টাকা আনতে হয়। এভাবে ধান বিক্রি করে অনেক কৃষক প্রতারিত হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply