কলাপাড়ায় মামলাবাজ ছগির; জাল জালিয়াতির মাধ্যমে অন্যের জমি হাতিয়ে নেওয়াই যার পেশা | আপন নিউজ

রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১০:৩২ অপরাহ্ন

প্রধান সংবাদ
সন্ত্রাস, ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজের দলে কোন জায়গা হবে না- প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান কুয়াকাটায় দুর্যোগে পূর্বাভাস-ভিত্তিক সংলাপ গলাচিপায় আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে নাগরিক কমিটির সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে প্রেস বিফ্রিং অন্যভুবন সাহিত্য পরিষদ-এর ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও আন্তর্জাতিক গুণিজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত কলাপাড়ায় অর্ধশতাধিক অসহায় মানুষ পেল প্রধানমন্ত্রীর অর্থ সহায়তা সাংবাদিক জীবন কৃষ্ণ মন্ডল’র পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন প্রতিমন্ত্রী আমতলীতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থীকে দশ হাজার টাকা অর্থদন্ড আমতলীতে চাঁদা না দিলে বিধরা নারীকে প্রাণ নাশের হুমকি; সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ কলাপাড়ায় মুরগীসহ পালনের উপকরণ দেয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে উধাও প্রতারক সংস্থা আমতলী সরকারী কলেজের সামনের অবৈধ স্থাপনা অপসারণ দাবীতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
কলাপাড়ায় মামলাবাজ ছগির; জাল জালিয়াতির মাধ্যমে অন্যের জমি হাতিয়ে নেওয়াই যার পেশা

কলাপাড়ায় মামলাবাজ ছগির; জাল জালিয়াতির মাধ্যমে অন্যের জমি হাতিয়ে নেওয়াই যার পেশা

রিপোর্ট-নূরুল আমিনঃ
কলাপাড়ার ধুলাসার ইউনিয়নের পশ্চিম চাপলী গ্রামের মৃত আ: রাজ্জাক মাষ্টারের পুত্র ছগির মাহমুদ (৩৮)। অভিনব কায়দায় জাল জালিয়াতির মাধ্যমে অন্যের জমি হাতিয়ে নিয়ে গত কয়েক বছরে তিনি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা পর্যন্ত বিভিন্ন অফিস ও কর্মকর্তার সই ও সিল জাল করে ভূয়া কাগজপত্র সৃষ্টির মাধ্যমে অন্যের বৈধ মালিকানাধীন জমা জমি হাতিয়ে নেয়া এখন তার নেশা এবং পেশায় পরিণত হয়েছে।
শুধু নিজের জন্যই নয় টাকার বিনিময় ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ারিশ সার্টিফিকেট, তহশীল অফিসের পর্চা, উপজেলা ভূমি অফিসের মিউটিশন, পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে বিভিন্ন মেয়াদে জমির লিজ, সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের সাবকবলা দলিলসহ যে কোন ধরনের জাল কাগজ পত্র তৈরী করার কুখ্যাতি রয়েছে তার। শুধু তিনি একাই নন, ৫৯ নং চরচাপলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাকির মাষ্টার (৩৫) এবং নাইমুর রহমান (নাসির) (৩০) নামে তার আপন দুই ভাইকেও একাজে বেশ দক্ষ করে গড়ে তুলেছেন তিনি। শুধু ভুয়া কাগজ পত্র সৃষ্টি করেই থেমে থাকেন না তারা, কাগজের বলে জমির দখল নেয়া, জীবন নাশের হুমকী, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এমন কি মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রতিপক্ষকে সর্বশান্ত করার এন্তার অভিযোগ ও রয়েছে উল্লেখিত ভাই জালিয়াত চক্রটির বিরুদ্ধে।
মোকাম কলাপাড়া বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে গত ২৭ অক্টোবর,২০ তারিখ দায়ের করা মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কলাপাড়া উপজেলা হালে মহিপুর থানাধীন জে, এল নং ৩৬, চরচাপলী মৌজার এস এ ২৩ ও ১৭৭ নং খতিয়ানের বিভিন্ন দাগের জমাজমি পূর্ব পুরুষদের আমল থেকে ওয়ারিশ ও ক্রয় সূত্রে পশ্চিম চাপলী গ্রাসের মৃত জবেদ গাজীর পুত্র আহসানউল্লাহ সহশরীকিতে সুদীর্ঘ বছর ধরে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখল করে আসছে। উল্লেখিত মামলার ১ নং বিবাদী কথিত ভূমিদস্যু ছগির মাহমুদ ওই মামলার বাদী আহসান উল্লাহ গংদের স্বত্ব দখলীয় ৪৫ শতাংশ রেকর্ডীয় জমি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলীর স্বাক্ষর ও সই জাল করে গত ০১/০৩/২০১৬ তারিখের ৬৭৫ নং স্মারকের ভুয়া বন্দোবস্ত কাগজের বলে মালিকানা দাবী করেন। শুধু দাবী করেই থেমে থাকেনি, জমির প্রকৃত মালিকদের হয়রানী করার উদ্দেশ্যে ওই ভুয়া কাগজ পত্র দিয়ে উল্লেখিত আহসান উল্লাহসহ মো: তাওহিদ গাজী (২৮), মেজবাউদ্দিন (৬০), নাজেম (৩৫), ফরিদ উদ্দিন (৪৩), জুলহাস (৩৮) ও রায়হাত (২২) কে আসামী করে কলাপাড়া বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৪৮৩, তারিখ ০১/০৯/২০২০। অথচ পানি উন্নয়ন বোর্ডের থেকে ৪৫ শতাংশ জমি লিজ নেয়ার ব্যপারে পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বিভাগ, বাপাউবো. কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) খান মোহাম্মাদ ওয়ালিউজ্জামান এর  গত ২২-০৯-২০২০ তারিখে স্বাক্ষরিত এল. এল-১/১১৬৫ নং স্মারকের পত্র মর্মে জানা যায়, অত্র দপ্তর থেকে ইজারা কার্যক্রম সম্পূর্ন বন্ধ রয়েছে এবং গত ০১/০৩/২০১৬ তারিখের ৬৭৫ নং স্মারকে বাপাউবো কলাপাড়া থেকে মো: ছগির মাহমুদ পিং আ: রাজ্জাক মাষ্টার এর নামে কোন জমি বন্দোবস্ত দেয়ার অস্তিত্ব তাদের অফিসে পাওয়া যায়নি। ভূক্তভোগী আহসানউল্লাহ গাজীর দায়ের করা সি,আর ৪৮৩/২০ নং মামলার এজাহার সূত্রে আরও জানা যায়, উল্লেখিত ছগির মাহমুদ তার অপর দুই ভাই জাকির ও নাইমুর রহমানের যোগসাজসে গত ২০১৫ সালের ৩ এপ্রিল, ধুলানার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মৃত এ. এম খালেকুজ্জামান খলিফার স্বাক্ষর ও সিল জাল করে স্মারক নম্বর ৯৭/১৫ তারিখ ০৩/০৪/২০১৫ এবং ওই একই তারিখের ৯৮/১৫ নং স্মারকে দুই খানা ভুয়া ওয়ারিশ সার্টিফিকেট সৃষ্টি করে, উল্লেখিত মামলার বাদী পক্ষের স্বত্ব ভোগ দখলীয় জমাজমি আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে মোকাম কলাপাড়া বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৩৬/১৯। মামলার ১নং আসামী  আহসানউল্লাহ জানান, ছগির গংদের দায়েরকৃত দেওয়ানী মামলার সাথে দাখিলকৃত এস এ ২৩ নং খতিয়ানের সহিমোহড় পর্চায় ২০০৯-১০ সনের ৩৫কে (২য়খন্ড) নং সিউটিশনটিও ভুয়া। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), কানুনগো, তহশীলদারের স্বাক্ষর ও সিল জাল করে এবং পটুয়াখালী জেলা রেকর্ড রুমের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ম্যাজিষ্ট্রেট), রেকর্ড কিপার, অফিস সহকারী, নকল কারক, যাচাইকারকসহ  সকলের স্বাক্ষর, জাল করে উক্ত জাল পর্চা সৃষ্টি করে খাটি পর্চা বলে দাবী করে এলাকার নিরীহ মানুষের ভিটে মাটি ঘর বাড়ি পুকুর পুস্কুনী হাতিয়ে নেয়ার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে ছগির গংরা। উক্ত জালজালিয়াতি চক্রের সীমাহীন হয়রানী থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। অপরদিকে ছগির মাহমুদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে, দেওয়ানী আদালতে দাখিল করা তাঁর কাগজপত্র সঠিক আছে বলে তিনি জানান। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের লিজটি সঠিক নাই বলে তিনি স্বীকার করেন। তার নামে লিজ এনে দেবে বলে কিছু লোক ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে ওই কাগজপত্র গুলো দিয়েছে বলে তিনি দাবী করেন। তবে যারা তার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে তাদের নাম প্রকাশ করেনি। এব্যপারে ধুলাসার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল মাস্টারের বক্তব্য জানার জন্য মুঠো ফোনে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি।

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By JPHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!