শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৪ অপরাহ্ন
বিশ্বাস শিহাব পারভেজ মিঠুঃ
কলাপাড়ার ধানখালী ইউনিয়নের মধুপাড়া মৌজার প্রকৃত মালিকের ৪৯ একর জমির ভূয়া কাগজ পত্র এবং ওয়ারিশ সৃস্টি করে নানাবিদ হয়রানী করছে জালিয়াত চক্রের মুল হোতা রতন ঘোষ এবং বিরেণ ষোঘ নামের দুই ব্যক্তি। একারনেই নির্মানাধিন পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অধিগ্রহন কৃত জমির টাকা ২৫টি পরিবার উত্তোলন করতে না পারাসহ নানা সমস্যার সম্মুখিন হয়ে জালিয়াত চক্রের কবল থেকে রক্ষা পেতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে মুুক্তযোদ্ধা এসএম নাজমুল হুদা।
মঙ্গলবার দুপুরে কলাপাড়া প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধা এসএম নাজমুল হুদা বলেন, উপজেলার ১২ নং জে,এল মধুপাড়া মৌজার ১৮৪, ১৮৫,১৮৮ নং খতিয়ানের ৪৯ একর জমি মালিক সত্য রঞ্জন এবং রাম নারায়নসহ চার জন মালিক ছিলেন। তাদের মৃত্যুতে একমাত্র ওয়ারিশ হয় শান্তনা রানী ঘোষ। শান্তনা রানী ষোষের কাছ থেকে ক্রয় সুত্রে জমির মালিক হয় মুক্তিযোদ্ধাসহ সাত জন ব্যক্তি। এর পর উক্ত জমি নিয়ে জালজালিয়াতি করে একটি রেডর্ক সৃস্টি করে গহুর আলী মৃধাসহ অন্যান্যরা। উক্ত জালিয়াতি রেকর্ড পটুয়াখালী সাব জজ আদাল দেওয়ানী আদালত ১৯৭৯ সালের ৩১ জুলাই গহুর মৃধার বিরুদ্ধে রায় প্রাদন করেন। উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে গহুর আলীগং ১৯৭৯ সনে হাইকোর্টে দেওয়ানী আপিল করেন। পরে হাইকোর্টে মামলার বাদি গহর আলী এবং বিবাদীরা আপোষ মিমাংসার মাধ্যমে ছোলে সুত্রে বিগত ১৯৯৪ সালে ১৬ জানুয়ারি উভয় পক্ষ মিমাংশা হয়ে যায়। এরপর উক্ত জমি ভোগদখলীয় থাকা অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের সর্বশেষ জড়িপে শামসুল আরেফিন গং সহ অন্যান্য জমির প্রকৃত মালিকদের নামে জড়িপ হয়। তাদের নিকট থেকে মুক্ত যোদ্ধাসহ ২৫ জন বিভিন্ন সময়ে জমি ক্রয় করে বাড়ি-ঘর এবং স্থাপনা নির্মান করে।
কিন্তু উক্ত জমির কাগজ পত্র জালজালিয়াতি করে বিরেণ ঘোষ ও রতন ঘোষ মালিক হয়। প্রকৃত মালিকের নাম ব্যবহার করে দ্বিজেন বেপারীসহ ছয় জনকে পাওয়ার অব এটর্নি প্রদান করে। ভূয়া ওয়ারিশ সূত্রে জমির মালিক হয় রতন ঘোষ। সে প্রকৃত ব্যক্তি হচ্ছে অমল ঘরামী নামে, পিতার নাম নারায়ন চন্দ্র ঘরামী, তাদেও বাড়ি হচ্ছে পাথরঘাটার চরদোয়ানী ইউনিয়নের হোগলাপাশা গ্রামে। একই ভাবে একই এলাকার বিরেন ঘোষ ছদ্ম নামে ওয়ারিশ হয়ে প্রকৃত বাদল মিস্ত্রি, পিতা রমেশ চন্দ্র মিস্ত্রি মালিক সেজে উক্ত জমি খেপুপাড়া সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ২০১৫ সালে দ্বিজেন বেপারী, রুহুল আমীন আকন, নান্টু খান, শেখর চন্দ্র নাথ, আরিফ আকন, আ. রহমান, খোকন, হাফিজ গাজী এরদের ৪২ একর জমির পাওয়ার অব এটর্ণি প্রদান করে। অথচ উক্ত জমি মুল মালিকদের নামে বি,এস জড়িপে রেকর্ড হয়। ভুয়া কাগজ পত্র তৈরী করে ভুয়া ওয়ারিশ সেজে পায়ার অব এটর্নি দলিল প্রদান করায় বিপাকে পরে মুক্তিযোদ্ধাসহ ২৫টি পরিবার। একারনে উক্ত জমির পাওয়ার অব এটর্নি প্রাপ্ত ব্যক্তগণ প্রকৃত জমির মালিকদের বিরুদ্ধে পটুয়াখালী প্রথম জজ আদালতে মামলা দায়ের করে। মামলা চলমান থাকায় পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য অধিগ্রহন কৃত উক্ত জমির টাকা উত্তোলন করতে পারছেন না মুক্তিযোদ্ধাসহ ২৫টি পরিবার। জালিয়াতি চক্রের কবল থেকে রক্ষা পেতে মুক্তযোদ্ধা এসএম নাজমুল হুদাসহ প্রকৃত জমির মালিকরা প্রশাসনের সহযোগিতা প্রার্থনা করছেন।
এদিকে অভিযুক্ত বিরেন ঘোষ (ছদ্মনাম) প্রকৃত বাদল মিস্ত্রিন সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ধানখালী মধুপাড়া মৌজায় আমার কোন আত্মীয় এবং জমি নাই। আমি কোন দিন কলাপাড়া সাব রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে কেন দলিলে স্বক্ষর করি নাই। আনি নিজেই স্বাক্ষর জানি না। আমি শিক্ষা গ্রহন করতে পারিনি। তবে পাথরঘাটার সমীর নামের এক ব্যক্তি কাকড়ার ঘেরের চুক্তির কথা বলে আমার ছবি নিয়েছিলো। আমার জাতিয় পরিচয় পত্র দেইনি।
তবে কলাপাড়া সাব রেজিস্ট্রি অফিসের একটি সূত্র জানায়, যে কোন দলিলের দাতার নাম এবং ছবির সঙ্গে যথাযথ মিল থাকলেই কেবল দাতার দলিল রেজিস্ট্রি হয়। তা না হলে কোন ক্রমেই জমির দলিল রেজিস্ট্রি হওয়ার সুযোগ নাই। উক্ত দলিলের দাতা স্বশরীরে উপস্থিত ছিলেন বলেই দলিল রেজিস্ট্রি হয়েছে।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply