মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ১২:১৯ পূর্বাহ্ন
কলাপাড়ায় প্রধান শিক্ষকের মাছের ঘের; জীবনযাপন দরিদ্র ১০টি পরিবারের
আপন নিউজ অফিস।। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের পানি এবং টনা বর্ষনের পানি নিষ্কাশনের অভাবে কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের অর্ধশতাধিক মানুষ স্থায়ী জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে দূর্বিসহ জীবন যাপন করছে। পার্শ্ববর্তী তালতলী উপজেলার দক্ষিণ ঝাড়া খালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঃ লতিফ সরকারি খাস জমিসহ নিজের জমিতে মাছের ঘের নির্মান করে স্থানীয় বাসিন্দাদের বসত বাড়ির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করায় চড়ম দূর্ভোগে পরেছে সাধারণ পরিবারের মানুষ গুলো। জলবন্ধী অবস্থায় বসবাসের ফলে ফতেহপুর গ্রামের ১০টি প্রান্তিক জেলে পরিবারের বৃদ্ধ-শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের সদস্যরা পানিবাহীত রোগে আক্রান্ত হয়ে পরছে। এর প্রতিকার চাইলে প্রধান শিক্ষক ভুক্তভোগীদের নানা হয়রানীর পাশাপাশি সন্ত্রাসী বাহিনী লালন পালনের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উত্থাপন করেন ভুক্তভোগীরা।
সরেজমিন দেখাগেছে, আন্ধারমানিক নদের তীর ঘেঁষা ফতেহপুর গ্রাম রক্ষাকারী বেড়ি বাঁধের বাইরের সরকারী খাস জমিতে ক্ষুদ্র কৃষকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের বসবাস। নদীর তীরে বসবাস করলেও এখানকার ১০টি পরিবারের মানুষ স্থায়ী জলাবদ্ধ হয়ে জীবনযাপন করছে। এসকল বাসিন্দাদের বাড়ির পিছনের খাস জমিতে এবং প্রধান শিক্ষকের রের্ডীয় প্রায় তিন একর জমিতে এবটি মাছের ঘের নির্মান করেছেন। প্রতিবেশীদের বাড়ির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করায় ভুক্ত ভোগি প্রান্তিক কৃষকদের বাড়ির উঠান পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। জলাবদ্ধ পানি দূষিত হয়ে পরায় পুকুুরে অর্ধলক্ষ টাকার মাছ মরে গেছে। লেট্রিন ডুবে আছে। পুকুরের পানি দূষিত হওয়ায় নারী-পুরুষসহ সকলে ভেড়ি বাঁধের ভিতরের বাসিন্দাদের বাড়িতে গিয়ে রান্না-বান্না এবং গোসলসহ প্রয়োজনীয় কাজ করছে। ভুক্ত ভোগি মো. দুলাল বয়াতী বলেন, আমরা এখানে সরকারি খাস জমি বন্দবস্ত পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছি। ৮০ দশকে সরকারি জমি বন্দবস্ত পাওয়া এক ব্যক্তির কাছ থেকে জমি ক্রয় করে প্রধান শিক্ষকের পিতা এনায়েত হোসেন। সেই জমি বি,এস জড়িপে মাত্র ৯০ শতাংশ জমি রেকর্ড হয় তাদের নামে। তবে প্রধান শিক্ষক আঃ লতিফ তাদের রের্ডীয় জমির সঙ্গে সরকারি জমি দখল করে একটি বিশাল মাছের ঘের নির্মান করে। তবে যখন সে মাছের ঘের নির্মান করে তখন আমাদের বসতবাড়ির পানি নিষ্কাশনের প্রতিশ্রæতি দেয়। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের জোবায় জোয়ারের পানি এবং টানা বর্ষার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করায় আমরা ১০টি পরিবারের অর্ধশতাধিক মানুষ স্থায়ী জলাবদ্ধ হয়ে পরেছি। আমরা প্রশাসনের সহায়তায় জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষার দাবি করছি। মো. সজিব দাবি করেন, পানিতে ডুবিয়ে আমাদের শাস্তি দিয়েও প্রধান শিক্ষক ক্ষ্যান্ত হয়নি। তিনি আমাদের দাবিয়ে রাখতে এবং আমাদের কন্ঠ রোধ করার জন্য স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী গ্রæপ লালন পালন করছে।
ডায়রিয়ায় আক্রান্ত মোসাঃ খাদিজা বেগম বলেন, বাড়িতে পানি স্থায় হওয়ায় গত তিন ধরে আমার ডায়রিয় হয়েছে। এখন শ্বাসকস্ট এবং শরীর খুব দূর্বল হয়ে পরেছে। জলাবদ্ধতার কারনে বৃদ্ধ ও শিশুরা অসুস্থ্য হয়ে পরছে। মোসাঃ মালেকা বেগম বলেন, আমরা এখন আর আমাদের ঘরে রান্না-বান্নার কাজ করতে পারছি না। বেড়িবাঁধের ভিতরের বাসিন্দাদের বাড়িতে গিয়ে গোসল, বাথরুম এবং রান্নার কাজ করছি। আমাদের পানিতে ডুবিয়ে খুব কস্ট দিচ্ছে লতিফ মাস্টার। আল্লায় ওর বিচার করতে পারে না ? প্রশাসনের কাছে দাবি অত্যাচারী মাস্টারের বিচার করুক।
এব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আঃ লতিফ এর সঙ্গে কথাবলতে গেলে তিনি, উল্টো স্থানীয় বাসিন্দাদের নানা ঠুনকো দোষে দোষারোপ করে বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান।
নীলগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, এঘটনায় সংশ্লিস্ট ইউপি সদস্য আঃ রব হাওলাদাসহ স্থানীয় অন্যান্য গন্যমান্যদের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিয়ে নিয়েছি যাতে ভুক্তভোগী পরিবার গুলো জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পায়।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply