শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৫১ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদন: কলাপাড়া উপজেলা ভূমি অফিসে ঘুষ ছাড়া সেবা না পাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন। জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের শৃঙ্খলা-২ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মো: আমিনুর রহমান পটুয়াখালী জেলা প্রশাসককে এ তদন্তের নির্দেশনা দেন। জনপ্রশাসনের নির্দেশনা সম্বলিত আদেশ প্রাপ্তির পর জেলা প্রশাসনের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর মো: রবিউল ইসলামকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র।
ভূমি অফিসের একটি সূত্র জানায়, ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার ও নাজিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ২৯ ডিসেম্বর তদন্তের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। এসিল্যান্ড ও ইউএনও স্যার জেলা প্রশাসনের লিখিত আদেশের কপি ইতোমধ্যে প্রাপ্ত হয়েছেন।
এর আগে জনৈক জাহাঙ্গীর শেখ নামে এক ভুক্তভোগী জন প্রশাসন মন্ত্রনালয়ে ভ‚মি অফিসে ঘুষ ছাড়া সেবা না পাওয়ার লিখিত অভিযোগ করেন। যাতে বলা হয় উপজেলার আলীপুর মৌজায় তার ১.২২ একর ভোগদখলীয় জমি ই-নামজারীর জন্য আবেদন করেন ঢাকার উত্তরা এলাকার আবদুস সত্তার, ই-নামজারী কেস নং-৮৮৩/২০২১। যে জমির ই-নামজারীর বিরুদ্ধে পটুয়াখালী সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের দে.মো. ৫৭৯/১৪ মামলার রায়, ডিক্রীর কপি, যুগ্ম জেলা জজ আদালতের দে.মো. ৩৭২/১৭, কলাপাড়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের দে.মো. ৮৪/২০০৬, পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের সি.আর ৮৩৪/২০১৮ মামলার কপি সংযুক্ত করে লিখিত আপত্তি দাখিল করে শুনানীর পরও উক্ত ই-নামজারী কেসটি মঞ্জুর করেন এসিল্যান্ড। এতে সংক্ষুব্ধ জাহাঙ্গীর শেখ আপীলের প্রস্তুতি সহ বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব, ভ‚মি মন্ত্রনালয়ের সচিবসহ উর্ধ্বতনদের কাছে এসি ল্যান্ড, সার্ভেয়ার ও নাজির উবাসো’র বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন।
এছাড়া ই-নামজারিসহ সকল ধরনের ভ‚মি সেবা পেতে ঘুষ ছাড়া ঘুরতে হয় দিনের পর দিন। ৪ একরের নীচে জমির পরিমান হলে ই-নামজারিতে ১০-২০ হাজার টাকা, ৫ একরের উপরে হলে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ এবং কুয়াকাটা পর্যটনকেন্দ্র, পায়রা সমুদ্র বন্দর ও পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র সংলগ্ন এলাকার মূল্যবান জমি হলে ই-নামজারিতে গুনতে হচ্ছে ৩-৫ লাখ টাকা। তাঁর কাঙ্খিত ঘুষের টাকা ছাড়া যেকোন অজুহাতে হয় ই-নামজারী কেস খারিজ, নয়তো মাসের পর মাস পড়ে থাকছে এসি ল্যান্ডের ই-নামজারি আইডিতে। এছাড়া কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টের পূর্ব পার্শ্বে কুয়াকাটা মৌজার বিএস ১ নং খাস খতিয়ানের ৩৪১২ দাগের প্রায় ০.০৫ একর জমিতে এসি ল্যান্ড মো: আবুবক্কর সিদ্দিকী (পরিচিতি নম্বর-১৮২০২) কে ম্যানেজ করে ৫ তলা আবাসিক হোটেল ভবন নির্মান করেছেন মো: শহিদুল ইসলাম। উক্ত ভবনটির বেইজে কাজ করার সময় এসি ল্যান্ড আবুবক্কর সিদ্দিকী উপজেলা ভ‚মি অফিসের সার্ভেয়ার, মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার ও এমএলএসএস নিয়ে নির্মান কাজ বন্ধ করে দেন। পরে মহিপুর ভূমি অফিসের তহশিলদার মংলাতেন ভবন মালিকের সাথে মধ্যস্থতা করে মোটা অংকের ঘুষ এনে দেন এসিল্যান্ডকে। অনুমোদনহীন নকশার ৫তলা ভবনের নির্মান কাজ শেষ।
কলাপাড়া এসিল্যান্ড মো: আবুবক্কর সিদ্দিকী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ’আমি বরিশাল মিটিংয়ে এসেছি। অফিসের কোন বিষয় নিয়ে তদন্তের কোন বিষয় আমার জানা নেই।’
ইউএনও শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, ’ভূমি অফিসের কোন বিষয় নিয়ে তদন্তের নির্দেশনা সংক্রান্ত কোন চিঠি আমি পাইনি।’
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply