শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৪৫ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্কঃ
শামীমা নূর পাপিয়া রাজধানীর অভিজাত একটি হোটেলে তিন মাসে তার খরচ ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। সমাজসেবার আড়ালে অসহায় সুন্দরী নারীদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক ব্যবসা করে আসছিলেন। তিনি অবৈধভাবে তিনি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
গত শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে দেশত্যাগের সময় পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেফতার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
আটক অন্যরা হলেন, পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন (৩৮), সাব্বির খন্দকার (২৯) ও শেখ তায়্যিবা (২২)।
এসময় তাদের কাছ থেকে ৭টি পাসপোর্ট, নগদ ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ জাল টাকা, ১১ হাজার ৯১ ইউএস ডলারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়।
শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ানবাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল।
তিনি জানান, বৈধ আয় অনুযায়ী পাপিয়ার বাৎসরিক আয় মাত্র ১৯ লাখ টাকা। অথচ রাজধানীর অভিজাত একটি হোটেলে শুধুমাত্র গত তিন মাসে তিনি বিল পরিশোধ করেছেন প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। নারী সংক্রান্ত অপকর্ম ছাড়াও অস্ত্র-মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন তদবির বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত পাপিয়া।
শাফী উল্লাহ বুলবুল বলেন, আটক পপিয়ার তেজগাঁও এফডিসি গেট সংলগ্ন এলাকায় অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একটি গাড়ির শো রুম এবং নরসিংদীতে একটি গাড়ি সার্ভিসিং সেন্টার রয়েছে। এসব ব্যবসার আড়ালে তিনি অবৈধ অস্ত্র, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত।
তিনি আরও বলেন, পাপিয়া সমাজ সেবার নামে নরসিংদী এলাকায় অসহায় নারীদের আর্থিক দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদেরকে অনৈতিক কাজে লিপ্ত করতেন। এজন্য অধিকাংশ সময় নরসিংদী ও রাজধানীর বিভিন্ন বিলাসবহুল হোটেলে অবস্থান করে অনৈতিক কাজে নারী সরবরাহ করে আসছিলেন।
পাপিয়া গত তিন মাসে রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা বিল পরিশোধ করেছেন জানিয়ে শাফী উল্লাহ বুলবুল বলেন, ওই হোটেলে প্রতিদিন শুধুমাত্র বারের খরচবাবদ প্রায় আড়াই লাখ টাকা পরিশোধ করতেন পাপিয়া। সেখানে তার নিয়ন্ত্রণে ৭টি মেয়ের কথা জানা গেছে, যাদেরকে তিনি প্রতি মাসে ৩০ হাজার করে মোট ২ লাখ ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করতেন।
এছাড়া নরসিংদী এলাকায় চাঁদাবাজির জন্য তার একটি ক্যাডার বাহিনী রয়েছে। স্বামীর সহযোগিতায় অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে স্বল্প সময়ের মধ্যে তিনি নরসিংদী ও ঢাকায় একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি-গাড়িসহ বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক হয়েছেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন ধরনের তদবির বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। তবে এ বিষয়ে এখনও বিস্তারিত জানার সুযোগ হয়নি বলে জানায় র্যাব।
আটক মতি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। দেশে স্ত্রীর ব্যবসায় সহযোগিতার পাশাপাশি থাইল্যান্ডে তার বারের ব্যবসা রয়েছে। তিনি স্ত্রীর মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসহায় নারীদের অনৈতিক কাজে ব্যবহার করেন। অবৈধ অস্ত্র, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে তিনি জড়িত।
আটক সাব্বির খন্দকার পাপিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী এবং আটক তায়্যিবা মতি সুমনের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। পাপিয়া ও মতি সুমনের ব্যক্তিগত সম্পত্তির হিসাব রক্ষনাবেক্ষণসহ সকল অবৈধ ব্যবসায় এবং অর্থ পাচার ও রাজস্ব ফাঁকি দিতে তারা সহযোগিতা করে আসছিলেন বলে জানায় র্যাব।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply