শনিবার, ২৭ Jul ২০২৪, ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন
আপন নিউজ অফিসঃ কলাপাড়ায় জেলেদের জন্য বরাদ্দ ভিজিএফের চাল নিবন্ধিত জেলেদের না দিয়ে মেম্বারের পছন্দমতো ব্যক্তিদের দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২৬ এপ্রিল) বঞ্চিত কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কলাপাড়া সাংবাদিক ফোরাম বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ ও স্থানীয় জেলে সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মো. সিদ্দিক হাওলাদার স্থানীয় জেলেদের কার্ড নিয়ে নিজের হাতে সাদা কাগজে নাম লিখে তার পছন্দের লোকদের মাঝে চাল বিতরণ করেন। এছাড়াও মৃত জেলেদের নামেও চাল নিয়ে আত্মসাৎ করেন। স্থানীয় জেলেরা এর প্রতিবাদ করলে তাদের হুমকিও দেয়া হয়।
চর গঙ্গামতি এলাকার ভুক্তভোগী জেলে ইউসুফ বলেন, আমি জেলে। ৩০ লাখ টাকা ঋণী হয়েছি। সরকার আমাদের যে কার্ড দিয়েছে সেটি মেম্বার আটকে দিয়েছেন। চাইতে গেলে হুমকি দিচ্ছেন। যেদিন চাল দিয়েছে সেদিন কার্ড থাকতেও মেম্বারের হাত-পা ধরেছে আমার ছেলে তারপরও চাল পায়নি।
ষাটোর্ধ্ব সোবহান হাওলাদার নামের আরেক জেলে বলেন, সরকার আমাদের জন্য যে চাল বরাদ্দ করেছে সেটি মেম্বার আমাদের না দিয়ে তার পছন্দ মতো, বিধবা মহিলা, কৃষক ও ব্যবসায়ীদের দিচ্ছেন। আমরা অসহায় হয়ে অবশেষে ইউএনওর কাছে অভিযোগ করেছি। এর সঠিক বিচার চাই
চল্লিশ বছর জেলে পেশায় থাকা রাজা মিয়া বলেন, গত ২০ তারিখ জেলেদের চাল দিয়েছে তখন আমিও চাল আনতে গেছি। চেম্বারের কাছে কার্ড চাইলে তিনি বলেন কার্ড দিবো না পারলে কিছু করো। টাকা বিনিময়ে অন্য জেলার জেলের চাল দিচ্ছেন তিনি।
অভিযুক্ত মেম্বার সিদ্দিক হাওলাদার বলেন, নিবন্ধিত জেলেদের থেকে কিছু কম চাল পাওয়ায় সমন্বয় করে দিতে হয়। কিন্তু কার্ড আটকে রাখার কথা মিথ্যা। চাল দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে আমরা জেলেদের কার্ড দিয়ে দিচ্ছি। আমি কোনো অনিয়ম করি না। আর কারো কাছ থেকে টাকা পয়সাও নেই না।
ধুলাস্বার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফেজ আব্দুর রহিম বলেন, আমার পরিষদের বেশিরভাগ মেম্বার পুরানো হওয়ায় তারা সিন্ডিকেট করে জেলেদের চাল আত্মসাৎ করছে বারবার বলার পরও এগুলোর কোনো প্রতিকার করতে পারছি না। পরে আমি ইউএনওকে অবহিত করেছি, তিনি একবার এসে নিজে বিতরণ করেছেন। তিনি যাওয়ার পর আবার একই সমস্যা তৈরি হয়।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, জেলেদের কার্ড তাদের নিজেদের কাছে থাকবে এটা কোনো অফিসার বা জনপ্রতিনিধির কাছে থাকবে না। আমি শিগগির খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, জেলেদের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি বেশ কয়েকবার ওখানে গিয়ে তাদের সতর্ক করেছি। ইউপি সদস্যরা চেয়ারম্যানের নাগালের বাহিরে থাকায় এ সমস্যাটা তৈরি হচ্ছে। তারপরও আমি আবার অভিযান পরিচালনা করবো। সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply