বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৬ অপরাহ্ন
আপন নিউজ অফিসঃ কলাপাড়া উপজেলায় টিয়াখালী ইউনিয়নের ইটবাড়িয়া গ্রামে বেড়িবাঁধের উপর রাস্তা নির্মাণে জিয়া কলোনীর ১৩৬ ভূমিহীন পরিবারকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। ভূমিহীন পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন বা কোন ধরণের ক্ষতিপূরণ না দিয়ে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। শুক্রবার পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ করার জন্য ভেকু সহ অন্যান্য প্রস্তুতি নিয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। পরিবারগুলো দীর্ঘদিন ধরে তাদের পুনর্বাসনের দাবী জানিয়ে আসছে। এমতাবস্থায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের পুনর্বাসনের কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করে রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে। তাহলে পরিবারগুলো কোথায় যাবে।
দুই দশক আগে ভূমিহীন পরিবারগুলো বাস্তুভিটাহীন হওয়ার কারণে সরকার তাদেরকে বসবাসের জন্য ইটবাড়িয়া গ্রামে আন্ধারমানিক নদীর পাড়ে বেড়িবাঁধের ঢালে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিতে কলোনী করে থাকার সুযোগ করে দিয়েছিল। যার পর থেকে তারা দীর্ঘদিন ধরে বেড়িবাঁধের ঢালে বসবাস করে আসছে। সম্প্রতি পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল থেকে পায়রা বন্দর প্রশাসনিক ভবন হয়ে ঢাকা-কুয়াকাটা আঞ্চলিক সড়কের সাথে যুক্ত হওয়ার বিকল্প সড়ক হিসাবে পায়রা বন্দরের গেট থেকে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু পর্যন্ত বেড়িবাঁধের উপর রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। এই রাস্তা নির্মাণ করতে জিয়া কলোনীসহ বেড়িবাঁধের ঢালে বসবাসকারী ১৩৬টি পরিবারকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। ফলে ভূমিহীন মুক্ত কলাপাড়ায় নতুন করে ১৩৬টি পরিবার নতুন করে ভূমিহীন হতে যাচ্ছে।
এ সময়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যরা জানান, আমরা বেড়িবাঁধের বাইরের দিকে বসবাস করার ফলে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস এবং বর্ষাকালে জোয়ার-ভাটার পানিতে প্লাবিত হওয়া আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। তারপরও মাছ ধরে, ইট ভাটায় কাজ করে, নির্মাণ শ্রমিক এবং কৃষি শ্রমিক হিসাবে কাজ করে টানা পোড়নের মধ্যে দিয়ে জীবন যাপন করে আসছি। নিজের কোন জমি না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও আমরা বেড়িবাঁধের ঢালে বসবাস করে আসছি। এই জমির মালিক বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড তাই আমাদেরকে উচ্ছেদ করা হলেও কোন ধরনের ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসন করা হবে না বলে আমরা জানতে পেরেছি। এই পরিস্থিতিতে মাথা গোঁজার শেষ আশ্রয় হারালে আমাদের জীবন ধারণ সম্পূর্ণভাবে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। উচ্ছেদের পরে আমরা কোথায় থাকবো, কি করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।
কলাপাড়া উপজেলায় বৃহৎ প্রকল্পগুলোর মধ্যে পায়রা বন্দরে ক্ষতিগ্রস্থ ৩,৪২৩ টি পরিবারকে পর্যায়ক্রমে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। অন্য দিকে পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ করা হলেও কোন ধরনের পুনর্বাসন, ক্ষতিপূরণ অথবা সহযোগীতা করা হচ্ছে না।
ইতিপূর্বে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো কলাপাড়া প্রেসক্লাব চত্বরে একটি মানববন্ধন করে পুনর্বাসনের দাবী জানান। পরবর্তীতে পুনর্বাসনের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাছে আবেদন করেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে বারবার আলোচনা করার পরও কোন সমাধান হয়নি। কোন সমাধান না করেই তাদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply