
বিশেষ আপন নিউজ প্রতিবেদকঃ
কলাপাড়া উপজেলা সহ পটুয়াখালীর জেলায় করোনা ভাইরাসকে পূঁজি করে অসৎ ব্যবসায়ীরা নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করার অভিযোগ উঠেছে। জেলা শহর সহ উপজেলার একাধিক হাট-বাজারে কিছু অসৎ ব্যবসায়ীরা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র গুদামজাত করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির পাঁয়তারা শুরু করেছে। কেউ কেউ আবার ’করোনা ভাইরাস সংক্রমন রোধে সরকার এবার সবধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ করে দেবে’ গুজব ছড়িয়ে দোকান থেকে চাল, ডাল, তেল, লবন, আলু, পেয়াঁজ, রসুন, চিনি, আটা অন্যত্র সরিয়ে মূল্য বৃদ্ধি করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এক শ্রেনীর মানুষ বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে মধ্যরাত অবধি চাহিদার তুলনায় অধিক নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র কিনে মুজদ করতে বাড়ীতে নিয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার রাত ১০:৪৫ মিনিটের দিকে কলাপাড়া পৌরশহরের একাধিক মুদি দোকানে দেখা গেছে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। অবস্থা এমন যেন রাত পোহালেই বড় কোন উৎসবের দিন। তবে ব্যবসায়ীদের ফায়দা লোটার চক্রান্ত রুখতে রাতেই মাঠে নেমেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
জেলার মহিপুর মৎস্য বন্দর বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ৭০ টাকা কেজি দরে পেয়াজ বিক্রি করায় বাবুল চন্দ্র দাস নামের এক ব্যবসায়ীকে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদন্ড করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. মুনিবুর রহমানের ভ্রাম্যমান আদালত এ দন্ড দেন। করোনা ভাইরাস আতংকের মধ্যে ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত দামে পন্য বিক্রি করছে এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভ্রাম্যমান আদালত এ অভিযান পরিচালনা করে। তবে অভিযানের খবর পেয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যায়।
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. মুনিবুর রহমান জানান, দোকানে পন্য না রেখে নদীতে রাখা ট্রলারে মাল রেখে অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ সহ বিভিন্ন পন্য বিক্রির অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা পান। এ সময় ট্রলারের সকল পন্য দোকানে তুলে ন্যায্য মূল্যে পন্য বিক্রি করবে এ অঙ্গীকার করায় বাবুল দাসকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়া কলাপাড়া পৌরশহরের সদর রোডে মাতৃছায়া এন্টারপ্রাইজের মালিক কাওসার গাজী রাস্তার পাশে অবৈধভাবে গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ করার অভিযোগে তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করে ভ্রাম্যমান আদালত।
এদিকে পরিবহন বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনাকে পুঁজি করে দ্রব্যমূল্য বেশী দামে এবং ভেজাল দ্রব্য বিক্রির অভিযোগে ৫টি ভ্রাম্যমান আদালত শুক্রবার দিনভর নিউমার্কেট, পুরানবাজার ও কলাতলাসহ জেলার বাউফল, দশমিনা ও দুমকি উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ২৬ টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল ইসলাম, ম্যাজিস্ট্রেট ইবনে আল জায়েদ হোসেন, জেলা স্যানিটারী ইন্সেপেক্টর মহিউদ্দিন আল মাসুদ ও জেলা মার্কেটিং অফিসার নুরুন্নাহার বেগম এর সমন্বয়ে নিঊমার্কেটে ৭ টি ও কলাতলা ববাজারে ৩টি দোকানে বেশী দামে ও ভেজাল দ্রব্য বিক্রির দায়ে জরিমানা করা হয়।
এছাড়া একই দিন শুক্রবার সকালে বাউফল উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জাকির হোসেনের নেতৃত্বে বিভিন্ন বাজারে অভিযান পরিচালনা করে ৬টি দোকানীকে ২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা, দশমিনা উপেজলার নির্বাহী অফিসার তানিয়া খাতুনের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে ৪টি দোকানীকে ২৭ হাজার টাকা ও দুমকি উপজেলার নির্বাহী অফিসার শংকর বিশ্বাসের নেতৃত্বে বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালিয়ে ৫টি দোকানীকে বেশী মূল্যে দ্রব্য বিক্রির দায়ে ৫টি দোকানে ১৯ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জেলা স্যানিটারী ইন্সেপেক্টর মহিউদ্দিন আল মাসুদ জানান। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জেলা প্রশাসক মোঃ মতিউল ইসলাম জানান।
Leave a Reply