আমতলী থানা হাজতে আসামীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার ওসি প্রত্যাহার | আপন নিউজ

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০৭ অপরাহ্ন

প্রধান সংবাদ
কলাপাড়ায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে মা-ছেলে ও ছেলের বউকে পি’টি’য়ে জ’খ’ম করার অভিযোগ কাউনিয়ায় কৃষক লীগের ৫২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন তালতলীতে ভাসুরের বিরুদ্ধে ধ’র্ষ’ণ চেষ্টার মামলায় এলাকায় ক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ তালতলীতে দুই সাংবাদিকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে সাইবার মামলা আমতলীতে ৬ কেজি গাঁ’জা’সহ বিক্রেতা গ্রে’প্তা’র গলাচিপায় স্ত্রীর দাবীতে দুই দিন ধরে এক তরুনীর অনশন কলাপাড়ায় ১৩ বছরের এক মেয়ের মরদেহ উদ্ধার কাউনিয়ায় প্রাণী সম্পদ সেবা ও প্রদর্শনী মেলা কলাপাড়ায় প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী ও সেবা সপ্তাহের উদ্বোধন তালতলীর ইউপি চেয়ারম্যানের নগ্ন ও আপত্তিকর ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল
আমতলী থানা হাজতে আসামীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার ওসি প্রত্যাহার

আমতলী থানা হাজতে আসামীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার ওসি প্রত্যাহার

আমতলী প্রতিনিধিঃ

বরগুনার আমতলী থানা হাজতে সন্দেহভাজন আসামী শানু হাওলাদারের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় আমতলী থানার ওসি মোঃ আবুল বাশারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে পুলিশের প্রধান কার্যালয়ের এক আদেশে বরিশাল ডিআইজি মোঃ শফিকুল ইসলাম নির্দেশে বরগুনা পুলিশ সুপার মোঃ মারুফ হোসেন পিপিএম স্বাক্ষরিত এক পত্রে তাকে প্রত্যাহার করা হয়। ওসিকে আমতলী থানা থেকে প্রত্যাহার করে বরগুনা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। আমতলী থানার ওসি আবুল বাশারকে প্রত্যাহর করায় সাধারণ মানুষের মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে। তারা দ্রুত ওসি আবুল বাশারের বিচার দাবী করেছেন।
জানাগেছে, উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের পশ্চিম কলাগাছিয়া গ্রামে গত বছর ৩ নভেম্বরে ইব্রাহিম নামের একজনকে হত্যা করে দুর্বৃত্ত্বরা। ওই হত্যা মামলায় শানু হাওলাদারের সৎ ভাই মিজানুর রহমান হাওলাদার এজাহারভুক্ত আসামী। ওই মামলার শানু হাওলদারকে গত সোমবার রাত সাড়ে এগারটার দিকে সহেন্দভাজন আসামী হিসেবে আমতলী থানা পুলিশ ধরে নিয়ে আসে। তাকে ধরে নিয়ে আসার পর আমতলী থানা ওসি আবুল বাশার ও ওসি (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রি আসামীর পরিবারের কাছে তিন লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন। ওই টাকা দিতে অস্বীকার করে তার পরিবার। টাকা না পেয়ে আসামী শানু হাওলাদারকে থানা হাজতে রেখে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন করে। নির্যাতন সইতে না পেয়ে আসামীর ছেলে সাকিব হোসেন মঙ্গলবার ওসি আবুল বাশারকে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দেয়। কিন্তু তাতে তিনি তুষ্ট হয়নি। নির্যাতনের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয়। বুধবার পরিবারের লোকজন এসে আসামী শানু হাওলাদারের সাথে দেখা করতে চাইলে পুলিশ দেখা করতে দেয়নি উল্টো পরিবারের লোকজনের সাথে অশ্লীল আচরন করে তাড়িয়ে দেয় এমন অভিযোগ নিহতের ছেলে সাকিব হোসেনের। বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ছয়টার দিকে আসামী শানু টয়লেটে যাওয়ার কথা বললে পুলিশ তাকে টয়লেটে নিয়ে যায়। পরে এক ফাঁকে আসামী শানু হাওলাদার ওসি (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রির কক্ষে ফ্যানের সাথে রশি (শুতলি) পেচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে এমন দাবী ওসির আবুল বাশারের। এ ঘটনা তদন্তে জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ,এসপি পদায়ন) মোঃ তোফায়েল আহম্মেদকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ঠ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বরগুনা সদর) মোঃ মহব্বত আলী ও সহকারী পুলিশ সুপার (আমতলী-তালতলী সার্কেল) সৈয়দ রবিউল ইসলাম। দায়িত্ব অবহেলার দায়ে তাৎক্ষনিক বরগুনা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রি ও ডিউটি অফিসার এএসআই আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন। এদিকে তদন্ত কমিটির সুপারিশের আলোকে শুক্রবার বিকেলে পুলিশের প্রধান কার্যালয়ের এক আদেশে বরিশাল ডিআইজি মোঃ শফিকুল ইসলাম নির্দেশে বরগুনা পুলিশ সুপার মোঃ মারুফ হোসেন পিপিএম স্বাক্ষরিত এক আদেশে আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আবুল বাশারকে আমতলী থানা থেকে প্রত্যাহার করে বরগুনা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। আমতলী থানার ওসি আবুল বাশারকে আমতলী থানা থেকে প্রত্যাহর করায় সাধারণ মানুষের মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে। তারা দ্রুত ওসি আবুল বাশারের বিচার দাবী করেছেন। অপর দিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিহত শানু হাওলাদারের মরদেহ গ্রামের বাড়ীতে পৌছলে স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠে। ওইদিন রাত ১১ টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। এ ঘটনার পরিবারের পক্ষ থেকে শুক্রবার পর্যন্ত মামলা হয়নি। এ দিকে থানা হাজতে রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চা ল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী এ ঘটনার সাথে জড়িত ওসি আবুল বাশারসহ সকলের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দাবী করেছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ গোলাম মোস্তফা বলেন, একজন নির্দোষী মানুষকে থানা হাজতে টাকার জন্য শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করবে এটা মেনে নেয়া যায়না। এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
নিহত শানু হাওলাদারের ছেলে সাকিব হোসেন আমতলী থানার ওসি আবুল বাশারের প্রত্যাহারের খবরে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে আইনের আওতায় এনে বিচার দাবী করছি। তিনিই টাকা না পেয়ে আমার বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমি এই হত্যাকারী ওসির দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
তদন্ত কমিটির প্রধান বরগুনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ,এসপি পদায়ন) মোঃ তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, থানায় আসামীর মৃত্যুর মূল কারন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত কাজ শুরু করেছি। অল্প দিনের মধ্যেই তদন্ত কাজ শেষ হবে। তিনি আরো বলেন, তদন্ত কমিটির সুপারিশের আলোকে আমতলী থানার ওসি আবুল বাশারকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে বরগুনা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By JPHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!