বৃহস্পতিবার, ০১ Jun ২০২৩, ০৩:৪৭ অপরাহ্ন
বিশেষ আপন নিউজ প্রতিবেদকঃ
কলাপাড়ায় ১০টাকা কেজি দরের অন্তত:
চার হাজার দরিদ্র সুবিধাভোগী ব্যক্তির চাল কালোবাজারে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ডিলাররা মার্চ মাসের চাল উত্তোলন করে এ পরিমান চাল বিক্রি করে দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট তদারকি কর্মকর্তারা এ কাজে সরাসরি জড়িত রয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এতে সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচী মুখ থুবড়ে পড়েছে। ক্ষুন্ন হচ্ছে শেখ হাসিনা সরকারের ভাবমূর্তি।
উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ফেয়ার প্রাইস কার্ডধারী সুবিধাভোগী রয়েছে ২০ হাজার ১৫৩ জন। যারা বছরের মার্চ-এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে জনপ্রতি ১০ টাকা দরে ৩০ কেজি করে চাল পাওয়ার কথা। কিন্তু গত পাঁচ মাসে অন্তত: তিন সহস্রাধিক কার্ডধারীর প্রায় ৬০ টন চাল কালোবাজারে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। কার্ডধারী তিন সহস্রাধিক মানুষ জানেন না তার নামে এ চালের বরাদ্দ রয়েছে। তালিকায় নাম রয়েছে এমন হাজারো মানুষকে তাদের কার্ড হাতে দেয়নি ৩২ ডিলার। বছরের পর বছর এভাবে শত শত টন চাল কালোবাজারে বিক্রি করেছে ডিলাররা। এছাড়াও তালিকায় রয়েছে বিত্তবান, একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তি সহ সামাজিক সুবিধা পাওয়া ব্যক্তির নাম।
সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার লালুয়ায় ফেয়ার প্রাইস কার্ডের সুবিধাভোগী রয়েছে ১৫৯৬ পরিবার। দরিদ্র মানুষ এ সুবিধা পাওয়ার নিয়ম থাকলেও তালিকা তৈরিতে করা হয়েছে চরম অনিয়ম। লালুয়ার পশুরবুনিয়া গ্রামের জেলে সেলিম ফরাজীর তালিকায় নাম থাকলেও তাকে কোন কার্ড পর্যন্ত দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেনও না। অথচ মাসের পর মাস তার নামে চাল উত্তোলন দেখিয়ে বিক্রি করা হয়েছে। ডিলারের দোকানে কার্ডধারীর নামের তালিকা ঝুলিয়ে রাখতে হবে প্রশাসনের এমন নির্দেশনার পরও কোন ডিলারের দোকানে এটি দৃশ্যমান পাওয়া যায়না।
ইউপি সদস্য ইউনুচ ফরাজি জানান, এভাবে তার ওয়ার্ডের অন্তত: ৪০ জনের নাম তালিকায় থাকলেও ওইসব ব্যাক্তি কোনদিন চাল তোলেননি এবং এর কিছুই জানেন না। এভাবে লালুয়ার একটি ইউনিয়নে কার্ড দেয়া হয়নি এমন নাম রয়েছে প্রায় অন্ত:ত ৩০০ জন। বছরের পাঁচটি মাস এ চাল উত্তোলন দেখিয়ে বিক্রি করা হয়েছে।
নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারার মাখন লাল বিশ্বাসের নাম রয়েছে তালিকায়। অথচ এ দরিদ্র মানুষটিকে মার্চ মাসের চাল দেয়া হয়নি। তার কার্ডটি পর্যন্ত নেই।
কবে চাল পেয়েছেন তাও তার মনে নেই। নীলগঞ্জের ২৭৬৭ জনের সকলের বিতরণের মার্চ মাসের চাল তিন জন ডিলার তুলে নিয়েছেন বলে জানা গেছে। একই দশা মিঠাগঞ্জের ৬৫০ নম্বর তালিকার ব্যক্তির। একই অবস্থা মিঠাগঞ্জ, নীলগঞ্জ, চাকামইয়া, টিয়াখালী, ধুলাসার, বালিয়াতলী, চম্পাপুর, ধানখালী, মহিপুর, লতাচাপলীসহ সকল ইউনিয়নের।
কলাপাড়া উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) বিএম শফিকুল ইসলাম জানান, অনিয়ম পেলে সঙ্গে সঙ্গে তালিকা সংশোধন করা হয়। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। বর্তমানে নতুন করে তালিকা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
কলাপাড়া ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, ’আমি এ উপজেলায় সদ্য যোগদান করেছি। ফেয়ার প্রাইস কার্ডের সুবিধাভোগীদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকা পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply