বেড়িবাধ না থাকায় পানিবন্দী কলাপাড়ার লালুয়ার কয়েক হাজার মানুষ। | আপন নিউজ

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:২০ পূর্বাহ্ন

প্রধান সংবাদ
তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল; কমিটি বিলুপ্ত কলাপাড়ায় উচ্ছেদ আতঙ্কে ১৩৬ পরিবারের রাতের ঘুম হারাম; শুধু এক খন্ড খাস জমির দাবি আমতলীতে মুজিবনগর দিবস উদযাপন আমার জন্য ষ্টেইজ ও ফুলের দরকার নেই; আমি গণমানুষের নেতা-গণ সংবর্ধনায় সাংসদ টুকু কলাপাড়ায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে অধ্যাপক ইউসুফ আলী তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল তালতলীতে ধর্ষিতার বিরুদ্ধে ধর্ষকের মামলা; মামলার স্বাক্ষীরাও ধর্ষক কলাপাড়ায় শ্বশুর বাড়ি আসার পথে প্রাণ গেল মোটরসাইকেল আরোহীর আমতলীতে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জ-খ-ম; টাকা ও স্বর্নাংকার লু’ট কলাপাড়ায় সেচপাম্প দিয়ে দোকানে পানি দেওয়ার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একজনের মৃ-ত্যু
বেড়িবাধ না থাকায় পানিবন্দী কলাপাড়ার লালুয়ার কয়েক হাজার মানুষ।

বেড়িবাধ না থাকায় পানিবন্দী কলাপাড়ার লালুয়ার কয়েক হাজার মানুষ।

রাসেল মোল্লাঃ

কলাপাড়া উপজেলায় সুপার ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তান্ডবে প্রায় আট শতাধিক ঘড়বাড়ি ও ৫ হাজার পরিবারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গোটা উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সুপার ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বেড়িবাধ সংলগ্ন মানুষগুলোর। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নে সুপার ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রচন্ড বাতাসের গতি ও স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি বৃদ্ধিতে এ ইউনিয়নের শত শত ঘড় বাড়ি ও কয়েক হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

ইউনিয়নের পশরবুনিয়া,চাড়িপাড়া, নাওয়াপাড়া ও হাছনা পাড়াসহ প্রায় ১৭ টি গ্রাম ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তান্ডবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ইউনিয়নের এ গ্রামগুলোর বেড়িবাধ আগে হতেই বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙ্গা ও দুর্বল ছিল। ফলে অতিসহজেই পানি ভিতরে ঢুকে এসকল গ্রামগুলোকে প্লাবিত করে ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। গ্রামের এমন কোন বাড়ি নেই যাদের কোন না কোন ক্ষতি হয়নি। কারো থাকার ঘড়, কারো পাকের ঘড় আবার কারো কিছু না হলেও গরু ঘড় উড়িয়ে নিয়েছে সর্বনাশা ঘূর্ণিঝড় আম্পান।
পশরবুনিয়া গ্রামের জাকির গাজী, রাসেল ফরাজি, মিলন মাতব্বর, জবির মাতব্বর, সেলিম মাতব্বর ও নূর সায়েদ মূন্সির ঘড়সহ অনেকগুলো ঘড়-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

এদের কারো ঘড় উড়িয়ে নিয়েছে আবার কারো ঘড় আছে কিন্তু ঘরের ভিটে মাটি পানিতে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। একই গ্রামের আমির হোসেন খলিফা, কাশেম খলিফা, হাসেম খলিফা এমনকি উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সীমাসহ অনেকের মাছের ঘেড় ও পুকুর পানিতে তলিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা যায়।গ্রামের ভিতরে ঢুকতে রাস্তার দু-পাশে বিভিন্ন ধরনের গাছ-পালা উপুর হয়ে পরে থাকতেও দেখা যায়। পশুরবুনিয়া গ্রামের বশির মোল্লা তার কলা গাছের বাগান দেখিয়ে বলেন,
বিভিন্ন জায়গা হতে অনেক কষ্ট করে সবরি কলা গাছের বাগান করে ছিলাম।

ঝড়ে আমার সবগুলো গাছ ভেঙ্গে উপরে ফেলেছে।এছাড়াও চাড়িপাড়া গ্রামের বেড়িবাধ সংলগ্ন এলাকার মানুষগুলোকে চড়ম দুর্দশা গ্রস্থ অবস্থায় দেখাতে পাওয়া যায়। চাড়িপাড়া গ্রামের শানু হাওলাদার, আলমগীর হাওলাদার ও আসমত আলী হাওলাদারসহ অনেকেই তাদের চড়ম দুর্ভোগ ও সর্বোস্ব হারানোর কথা জানান। তাদের মতে, আমাদের এখানকার বেড়িবাধটি দীর্ঘদিন ধরে ভাঙ্গা রয়েছে।

স্থায়ী সমাধান না হলে প্রতি বছরই আমাদের বন্যার কবলে পড়তে হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে আমাদের সব কিছু হারিয়ে আজ পথে বসতে হচ্ছে। এখন সরকারের তরফ হতে কোন সহায়তা না পেলে আমাদের দাড়ানোর কোন উপায় নেই। বুকের বাচ্চা কোলে নিয়ে চাড়িপাড়া গ্রামের কহিনুর বেগম জানান, ঝড়ের খবর শুনে আমরা সবাই সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছিলাম। এসে দেখি ঘরে রেখে যাওয়া জিনিস-পত্র কিছুই নাই।

এমনকি রান্না করার চুলাটির পর্যন্ত কোন অস্তিত্ব নেই। রান্না করে যে খামু তার কোন ব্যবস্থাও নেই। উপুর হয়ে পরে থাকা একটি টিউবয়েল দেখিয়ে তিনি বলেন, সর্বনাশা ঝড়ে পানি খাওয়ার টিউবয়েলটি পর্যন্ত উপরে ফেলেছে। এখন খাবার পানি খেতেও সমস্যা হচ্ছে।

লালুয়ার ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস বলেন, বেড়িবাধ না থাকায় ঘূর্ণিঝড়ে আমার ইউনিয়নের প্রায় ১৭ টি গ্রাম পানিবন্দি হয়ে রয়েছে। কয়েক হাজার পরিবার এখন পানি বন্দি হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
অথচ অনেক আগ হতেই প্রশাসনকে বেড়িবাধের বিষয়ে অবহিত করেছিলাম। কিন্তু তখন আমার কথায় তারা কর্ণপাত করেনি। তিনি আরোও বলেন, যখন বড় ধরনের কোন ঝড়-ঝাপ্টা আসে তখন তারা ছুটোছুটি করে অথচ বেড়িবাধ দেয়ার বিষয়ে তারা কোন স্থায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তান্ডবে উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সেখানের ১৭টি গ্রামের প্রায় ৮ শতাধিক ঘড়-বাড়ি বিধ্বস্ত ও কয়েক হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও চম্পাপুর, ধানখালী ও চাকামইয়া ইউনিয়নের কয়েকটি পয়েন্টে বাধ ভেঙ্গে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সরকারের তরফ হতে যথাসম্ভব সহায়তা দেয়া হবে বলেও তিনি জানান।

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By JPHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!