তালতলীতে সরকারী খাস জমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ! | আপন নিউজ

বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০১ পূর্বাহ্ন

প্রধান সংবাদ
আমার জন্য ষ্টেইজ ও ফুলের দরকার নেই; আমি গণমানুষের নেতা-গণ সংবর্ধনায় সাংসদ টুকু কলাপাড়ায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে অধ্যাপক ইউসুফ আলী তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল তালতলীতে ধর্ষিতার বিরুদ্ধে ধর্ষকের মামলা; মামলার স্বাক্ষীরাও ধর্ষক কলাপাড়ায় শ্বশুর বাড়ি আসার পথে প্রাণ গেল মোটরসাইকেল আরোহীর আমতলীতে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জ-খ-ম; টাকা ও স্বর্নাংকার লু’ট কলাপাড়ায় সেচপাম্প দিয়ে দোকানে পানি দেওয়ার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একজনের মৃ-ত্যু আমতলীতে মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে বর্ষবরণ কলাপাড়ায় বেপরোয়া গতিতে খাদে পড়ল সিএনজি অটোরিকশা, নি-হ-ত ২, আ-হ-ত-৪ আমতলীতে আ’গু’নে পু’ড়ে কয়লা শিশু; দ/গ্ধ মা-বাবা হাসপাতালে
তালতলীতে সরকারী খাস জমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ!

তালতলীতে সরকারী খাস জমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ!

আমতলী প্রতিনিধিঃ
বরগুনার তালতলী উপজেলার কচুপাত্রা হাট-বাজারের সরকারী খাস জমি দখল করে প্রভাবশালীরা ৫০টি অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেছে। ভুমি অফিসের লোকজন প্রভাবশালীদের স্থাপনা নির্মাণে বাধা দিলেও তারা উল্টো ভুমি অফিসের লোকজনকে জীবন নাশের হুমকি দিচ্ছে। হাটের অধিকাংশ জমি তারা দখল করে নিয়েছে। জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করায় হাট বন্ধের উপক্রম হয়েছে। এতে সরকার প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। ওই হাট-বাজারের দুই প্রভাবশালী গ্রাম্য চিকিৎসক রনজিৎ কুমার শাখারী (বৌদ্ধ ডাক্তার) ও চান্দখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হানিফ মিয়া সরকারী নির্দেশনা উপেক্ষা করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছেন।
কড়াইবাড়িয়া ইউনিয়ন ভুমি অফিস সুত্রে জানাগেছে, ১৯২০ সালে উপজেলার কচুপাত্রা হাট-বাজারের নামে স্থানীয়রা দুই একর জমি দানপত্র করেন। দক্ষিণা লের মানুষের সাপ্তাহিক জনপ্রিয় এ হাট। প্রতি রবিবার ওইখানে হাট বসে। সরকারী খাস খতিয়ানভুক্ত ওই হাটের জমি স্থানীয় প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে দখল করায় ঠিকমত হাট বসতে পারছে না। আস্তে আস্তে ওই হাটের জমি স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেছে। এতে হাটটি এখন নিভু নিভু প্রায়। হাটটিকে নিশ্চিহৃ করে দিয়ে সমুদয় জমি দখলের জন্য একটি প্রভাবশালী মহল উঠেপড়ে লেগেছে এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। তারা হাটের জমি দখল করে অবৈধ পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছে। ওই হাটের দুই প্রভাবশালী গ্রাম্য চিকিৎসক রনজিৎ কুমার শাখারী (বৌদ্ধ ডাক্তার) ও চান্দখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হানিফ মিয়া সরকারী নির্দেশনা উপেক্ষা করে অন্তত ৩৩ শতাংশ  জমিতে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। ভুমি অফিসের লোকজন এসে তাদের পাকা স্থাপনা নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা দিলেও তারা তা মানছে না। বৌদ্ধ ডাক্তার ইতিমধ্যে তিন তলা ভবনের দ্বিতলার কাজ সম্পন্ন করেছেন। হানিফ মাষ্টারের পাকা ভবনের ফাউন্ডেশনের কাজ চলবে। ভুমি অফিসের লোকজন রাজস্ব আদায়ের তাগাদা দিলে প্রভাবশালী ভুমি দখলবাজরা তা দিচ্ছে না। অপরদিকে একটি প্রভাবশালী মহল জমি দখল করে অন্যের কাছে লক্ষ লক্ষ টাকায় পজিশন বিক্রি করছেন। ওই হাটের সরকারী জমি দখল হওয়ায় সরকার প্রতিবছর অন্তত লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। গত ৫০ বছরে ওই হাটে অন্তত সরকার কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ কড়াইবাড়িয়া ইউনিয়ন ভুমি অফিসের লোকজন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সরকারী জমিতে পাকা স্থাপনা নির্মাণের কথা জেনেও তারা তা আমলে নিচ্ছে না। ইউনিয়ন ভুমি অফিস সংশ্লিষ্টরা বলেন, জমি দখল করে অবৈধ পাকা স্থাপনা নির্মাণকারীদের ভবন নির্মাণে করেছি কিন্তু তারা তা মানছে না। তারা উল্টো আমাদের জীবন নাশের হুমকি দিচ্ছে। প্রভাবশালীদের ভয়ে ওই হাটে ভুমি অফিসের লোকজন পাকা স্থাপনা নির্মাণে বাঁধা দিতে সাহস পাচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, হাটের দুইটি স্টল এবং  একটি পাকা সড়ক ছাড়া সমুদয় জমি প্রভাবশালীরা দখল করে ৫০টি স্থাপনা নির্মাণ করেছে। গ্রাম্য চিকিৎসক রনজিৎ কুমার শাখারী তিনতলা পাকা ভবনের দ্বিতলার কাজ সম্পন্ন এবং আবু হানিফ মিয়া পাকা ভবন নির্মাণের ফাউন্ডেশনের কাজ করছেন। অনেকে জমি দখল করে টিন শেডের ঘর নির্মাণ করেছেন।
স্থানীয় মাসুম হাওলাদার, সিদ্দিক তালুকদার ও আশ্রাফ আলী বলেন, কচুপাত্রা হাট নিশ্চিহৃ করে দেয়ার জন্য একটি প্রভাবশালী মহল উঠেপড়ে লেগেছে। তারা হাটের জমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছে। হাটের অধিকাংশ জমি দখল হয়ে গেছে। তারা আরো বলেন, সপ্তাহে হাটের দিনে দোকান পাট এতে বসতে পারে না। হাটটি রক্ষায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জমি দখল মুক্ত করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবী জানাই।
দ্বিতল পাকা ভবন নির্মাণকারী প্রভাবশালী রনজিৎ কুমার শাখারী (বৌদ্ধ ডাক্তার) ছেলে তাপস কুমার শাখারী বলেন, ভুমি অফিসে জমির ডিসিয়ারের জন্য আবেদন করেছি কিন্তু এখনো পাইনি। তবে অনুমতি ছাড়া সরকারী জমিতে দ্বিতল পাকা ভবন নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন সমুত্তর দিতে পারেনি।
কড়াইবাড়িয়া ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ সোলায়মান বলেন, কচুপাত্রা হাটের জমি স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করছে। ওই হাটে কাউকে স্থাপনা নির্মাণ করতে অনুমতি দেওয়া হয়নি। তারা জোড়করে স্থাপনা নির্মাণ করছে। আমরা নিষেধ করা সত্ত্বেও তারা তা মানছে না। তিনি আরো বলেন, ওই হাটের সরকারী জমি উদ্ধারের জন্য উচ্ছেদ প্রক্রিয়া চলছে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ওই হাটে পাকা ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সরকারী জমিতে কেউ কোন মতেই পাকা ভবন নির্মাণ করতে পারবে না। কেউ নির্মাণ করলে সরকারী নির্দেশনা অনুসারে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By JPHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!