শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০১:১১ পূর্বাহ্ন
মো: এনামুল হক, কলাপাড়া অফিসঃ
কোরবানীর আর মাত্র ছয় দিন বাকী। কলাপাড়ায় কোরবানীকে সামনে রেখে হাট-বাজারে দেদারসে চলছে চাঁদাবাজির মহ উৎসব। ক্ষমতাশীন দলের নাম ভাঙ্গিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ কলাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরকার নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পশুর হাটবাজার বসিয়ে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি করেছে। এছাড়া কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই স্থানীয় প্রভাবশালী মহল ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য ইজারা দেয়া বাজারের টোল আদায় রশিদ বই অবৈধ ভাবে ব্যবহার করে অঘোষিত মসজিদের নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একদল চাঁদাবাজ। এ বিষয় প্রশাসন নিরব ভুমিকা পালন করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৫০ উর্ধ্বে এক ব্যক্তি অভিযোগের সুূত্র বলেন, এ সকল ইজারা না দেয়া হাটবাজারে পশুর ক্রয়- বিক্রয়ের প্রশাসনের মৌন অনুমতি রয়েছে। কারন দীর্ঘদিন যাবৎ ওই সকল হাট বাজারগুলো সরকারীভাবে ইজারা দেয়া হয়নি। তবুও সেখানে পশুর হাট বসিয়ে পশু ক্রয়-বিক্রয়ের চলছে। যে সকল বাজার ইজারা দেয়া হয়েছে। সেই সকল হাটবাজারের ইজারাদারদের রশিদ বই অবৈধ ভাবে ব্যবহার করে অঘোষিতভাবে টোল আদায়ের নামে পশু ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে টোলের নামে চাঁদাবাজি করেছে। প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছেন। যে সকল হাট-বাজারে সরকারী ভাবে কোন ইজারা দেয়া হয়নি, তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন নীলগঞ্জ ইউনিয়নের (সোমবার) পাক্ষীমারা বাজার, লালুয়া ইউনিয়নের (শনিবার) মুক্তিযোদ্ধা বাজার, বালিয়াতলী ইউনিয়নের মধুপাড়া ওয়াপদার (মুক্তিযোদ্ধা বাজারের ব্রীজের) উপর, বালিয়াতলী খেয়াঘাট (বৃহস্পতিবার), মুক্তিযোদ্ধা বাজারের পশু ক্রয়-বিক্রয়ের রশিদ বই ব্যবহার করা হচ্ছে, বানাতীবাজারের ইজারাদারের। অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধা বাজারের ব্রীজের উপর ও মধুপাড়া ওয়াপদার রাস্তার উপর পশু ক্রয়-বিক্রয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে পক্ষীয়াপাড়া হাটের পশু ক্রয়-বিক্রয়ে ইজারাদারদের রশিদ বই। পাখীমারা বাজার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মোঃ আবদুল রাজজাক সরদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পাখিমারা বাজারে পশুর হাটে গবাদিপশুর বেচাকেনা হয় সত্য।তবে সরকারিভাবে কোনরুপ ইজারা দেয়া হয়নি।কে ইজারা টাকা আদায় করছে তা বলতে পারি না। আদায়কৃত টাকা কোন খাদে কে কে ভাগ করে নেয় তাও বলতে পারি না। তবে গত সপ্তাহে কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইজারা টাকা উত্তোলন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু তা কার্যকর হচ্ছে না।
এদিকে বানাতিবাজারের ইজারাদার ও লালুয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ তারিকুল ইসলাম খান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সরাকার থেকে বানাতিবাজার সর্বোচচ বিটদাতা নিয়োগ প্রাপ্ত হইয়াছি। তাই আমি মুক্তিযোদ্ধা বাজারের গবাদী পশু ক্রয়-বিক্রয়ে মসজিদের সাহায্যে একশত / দুইশত টাকা আদায় করা হয়। সেখানে আমার নামের ইজারা রশিদ ব্যবহার করা হয়। শনিবার মুক্তিযোদ্ধা বাজারের গিয়ে দেখা গেছে, ৫০ হাজার টাকায় একটি বলদ গরু বেচাকেনায় ক্রেতার কাছ থেকে ৫০০ টাকার রশিদ কাটা হয়েছে। অপরদিকে বিক্রেতার কাছ থেকে রশিদ ছাড়াই দু’ শত টকা রাখা হয়েছে। নাম না বলার শর্তে, একজন বিক্রেতা বলেন,ক্ষমতাসীন দলের লোকজন মসজিদের নাম করে চাঁদাবাজি করেছে। এর প্রতিবাদ করা হলে আমাদের উপর সন্ত্রাসী বাহিনী পথেঘাটে হামলা করবে। তাই নিরবে সহ্য করছি। গরু ব্যবসায়ী আবদুল রশিদ মিয়া বলেন, আমরা প্রতি বাজারে গরু বেচাকেনার ব্যবসা করি। আমাদের চাঁদা টাকা না দিয়ে ব্যবসা চালানো সম্ভব না তাই সবকিছু সহ্য করতে হয়েছে। পখীয়াপাড়া হাটের ইজারাদার শাহারিয়ার সবুজ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার নামে ইজারা নেয়া পখীয়াপাড়া হাটের ইজারা টাকা আদায়ের দায়িত্ব পালন করছেন,আল- আমিন হাওলাদা, খলিলুর রহমান, ও মোঃ মনির তিনজনকে দিয়েছি। তারা মুক্তিযোদ্ধা বাজারে গবাদিপশু বেচাকেনায় আমার নামের ইজারা রশিদ ব্যবহার করেছে কি না তাহা আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে পরে এ ব্যাপারে জানবো।
লালুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস বলেন, মুক্তিযোদ্ধা বাজারে গবাদিপশু ক্রেয়- বিক্রেয় সম্পর্কে আমি কিছু জানি না তবে ছোট্ট করে বলি, মসজিদের নামকরে যুবককেরা কিছু টাকা আদায় করছে। বালিয়াতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হুমায়ুন কবির হাওলাদার বলেন, মুক্তিযোদ্ধা বাজারের পুর্বপাড়ে জাগায় সংকুলন হয় না বিধায় আমার ইউনিয়নের এপাড়ে বাজার বসিয়ে গবাদিপশু ক্রেয়-বিক্রেয় করে।ইজারা না থাকলেও মসজিদের নাম করে কিছু টাকা উত্তোলন করে। এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার নলেজে এসেছে। অফিস খোলা তারিখ রবিবার প্রত্যক ইজারাদারদের চিঠি দিয়ে গরু প্রতি কত টাকা ইজারা ফি নিতে হবে তা নির্ধারণ করে দিব। নির্ধারিত ফি চেয়ে বেশী টাকা আদায় করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply