নলছিটি ভূমি অফিস সহ.তহশিলদার মিজানের বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্য | আপন নিউজ

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:২৯ অপরাহ্ন

প্রধান সংবাদ
জমে উঠেছে আমতলীর ঈদ বাজার; ইন্ডিয়ান পোষাকের প্রতি ক্রেতাদের চাহিদা বেশী কলাপাড়ায় তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি বিষয়ক কৃষক মাঠ দিবস আমতলী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৯ জনের মনোনয়রনপত্র দাখিল কলাপাড়ায় রাতের আঁধারে জমি দখল করে দোকান তোলার অভিযোগ আমতলীর আঠারোগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক নির্বাচন সম্পন্ন ফেববুকে প্রেমের টানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছেলে তালতলীতে আটক; মায়ের কাছে হস্তান্তর কলাপাড়ায় রাতের আধারে জমি জখলের প্রতিবাদে সংবাদ মম্মেলন কলাপাড়ায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে মহিলাদের অংশগ্রহণে ক্রীড়ানুষ্ঠান আমতলীতে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা আমতলীতে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন
নলছিটি ভূমি অফিস সহ.তহশিলদার মিজানের বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্য

নলছিটি ভূমি অফিস সহ.তহশিলদার মিজানের বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্য

বরিশাল অফিস:

চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত হয়েছে ঝালকাঠীর নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস। আর এ অনিয়ম, দুর্নীতির মূলহোতা দপদপিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী তহশিলদার মিজান। আর এই দুর্নীতিবাজ মিজানের খপ্পরে পড়ে সেবা নিতে আসা জনসাধারণের ভোগান্তি এখন চরমে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা এবং সঠিক তদারকি না করার ফলে বছরের পর বছর মিজান এহেন কাজ করেও রয়েছেন বহাল তবিয়তে। আর দিনে দিনে এই অফিসে সেবা নিতে আসা জনসাধারণের ভোগান্তি ও হয়রানী বেড়েই চলেছে। এইসব ভুক্তভোগী জনসাধারণের প্রশ্ন এই হয়রানীর শেষ কোথায়? এক মিজানই এই ইউনিয়ন ভূমি অফিসে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। অভিযোগ রয়েছে, জমির মাঠ পর্চা নিতে মিজানকে ১০০ টাকার স্থলে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা দিতে হয়। আর মিজানের সবচেয়ে বড় দুর্নীতির জায়গা হল জমির মিউটিশন করা। জমি ক্রয় করার পরে প্রত্যেক জমির মালিককেই বাধ্যতামূলক জমির রেকর্ড (মিউটিশন) করতে হয়। সরকারি ধার্য্য অনুযায়ী মিউটিশন ফি ১১৭৫ টাকা। কিন্তু সহকারী তহশিলদার মিজান জমির মালিকদেরকে বিভিন্নভাবে এটাওটা বুঝিয়ে হয়রানী করে ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকার চুক্তি করেন জমির মিউটিশনের জন্য। তখন জমির মালিকগণ নিরুপায় হয়ে মিজানের ফাঁদে পা দিয়ে হাজার হাজার টাকা গচ্ছা দেয়। তবে চুক্তি ও টাকা নেয়ার বিষয়ে মিজান জানান, যদি কোন জমির মালিক নিজে মিউটিশন করার কার্যক্রম সম্পাদন করেন তাহলে সরকারি নির্ধারিত ফি ১১৭৫ টাকা তার খরচ হয়। কিন্তু আমি কাজ করে দেই তাই এত বেশী টাকা নেই। কিন্তু এত বেশী টাকা কেন নেন? এ প্রশ্নের কোন সদুত্তর দেননি তিনি। রাসেল নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, জমি ক্রয় করার পরে মিউটিশন করার জন্য দপদপিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গেলে সহকারী তহশিলদার মিজানের সাথে সাক্ষাৎ হলে মিজান তাকে বিভিন্ন কাগজপত্রের কথা বলেন। তবে এক পর্যায়ে মিজানের সাথে তার ৮ হাজার টাকার চুক্তি হয়। চুক্তির প্রেক্ষিতে মিউটিশন করার জন্য মিজানকে ৪ হাজার টাকা অগ্রিম প্রদান করেন তিনি। কিন্তু টাকা নেয়ার পরেও দীর্ঘ ৬ মাসেও তার জমির মিউটিশন করা হয়নি। একপর্যায়ে রাসেল মিজানের সঙ্গে দেখা করে জানতে চাইলে মিজান রাসেলকে নলছিটির সহকারি কমিশনার (ভূমি) শাখাওয়াত হোসেন এর কাছে যেতে বলেন এবং রাসেলের দাদি অসুস্থ তাই জমি বিক্রি করতে হবে এই কথা বলতে বলেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এত টাকা দেয়ার পরেও কেন রাসেলকে আবার সহকারি কমিশনার (ভূমি) শাখাওয়াত হোসেন এর কাছে যেয়ে মিথ্যা কথা বলতে হবে? এইভাবে শত শত রাসেল অসাধু তহশিলদার মিজানের খপ্পড়ে পড়ে হয়রানী এবং ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এ ব্যাপারে সহকারী তহশিলদার মিজানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টাকা নিছি তাতে আপনার কি? আপনি এখন কি করবেন? আর টাকা নিছি কাজতো হইছে তার, টাকা তো মাইর যায় নাই, কাজ করে দিছি। আপনি যা পারার করেন। এভাইে দম্ভোক্তি করেন তিনি। উল্লেখ্য, এর আগে অফিসে বসে সহকারী তহসিলদার মিজানের ধূমপানরত অবস্থায় একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। যা ২০১৩ সালে পাস হওয়া তামাক নিয়ন্ত্রন আইনের পরিপন্থী। সংশোধিত এ আইনে বলা হয়েছে সরকারি-বেসরকারী ও পাবলিকপ্লেসে ধূমপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু সহকারী তহশিলদার মিজান সরকারি অফিসে বসে এসব আইনের কোন তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছেমতো আইন বিরোধী কর্মকান্ড করে থাকেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে সঠিকভাবে অফিসে না আসারও অভিযোগ রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা জনসাধারণকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে দপদপিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে। এত অভিযোগের পাহাড় থাকার পরেও সহকারি তহশিলদার মিজানের বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন মহল কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় মিজানের এহেন কর্মকান্ড দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। আর এখনই যদি এই দুর্নীতিবাজ মিজানকে শাস্তির আওতায় আনা না যায় তাহলে সাধারণ জনগনের ভোগান্তি ও হয়রানী চরম আকার ধারন করবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, সহকারি তহশিলদার মিজান উপরের কর্তা-ব্যক্তিদের ম্যানেজ করেই এসব অপকর্ম করে বেড়ায়। আর এ জন্যই তাকে শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছেনা। এ ব্যাপারে নলছিটি উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। এখন পর্যন্ত কেউ তার কাছে কোন অভিযোগও করেনি। তবে অভিযোগ পেলে অবশ্যই তিনি মিজানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। কিন্তু জনমনে প্রশ্ন আদৌ কি মিজানের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ?

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By JPHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!