বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন
সঞ্জিব দাস, গলাচিপাঃ
রাঙ্গাবালীতে এক গৃহবধূকে (৩০) হাত-পা বেঁধে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাতে উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরমার্গারেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তবে পরিবারের দাবি, ওই গৃহবধূকে নির্যাতনের পর ধর্ষণ করে টাকা এবং স্বর্ণালঙ্কার লুট করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার গৃহবধূকে ওই রাতেই স্পিডবোটযোগে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে শনিবার সকালে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন। এদিকে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শাকিল (২০) নামের এক তরুণকে শনিবার সকালে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চরমোন্তাজ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। শাকিল চরমার্গারেটের বাসিন্দা মজিবর শরিফের ছেলে। তিনি পেশায় একজন দর্জি। ওই গৃহবধূর স্বামী বলেন, ‘ শুক্রবার আমি আসরের নামাজের আগে পার্শ্ববর্তী এলাকায় গিয়েছিলাম। আমি যখন বাড়ি ফিরি, তখন রাত ৯টা কিংবা পৌনে ৯টা বাজে। পথিমধ্যে মোবাইলে বাড়ি থেকে ফোন আসে। পরে কল ব্যাক করলে ফোনটি বন্ধ করে দেয়া হয়। আমার কাছে বিষয়টি সন্দেহ হলে আমি দ্রæত বাড়িতে যাই। গিয়ে ছেলে-মেয়ের কান্নার শব্দ শুনে ঘরে ঢুকি। বাতি বন্ধ ছিল। টর্চ লাইট মেরে দেখি, টেবিলের সঙ্গে আমার স্ত্রীর হাত-পা বাঁধা। চোখ ও মুখ ওড়না দিয়ে বাঁধা। পরে আমি চিৎকার দিলে লোকজন আসে। এরমধ্যে আমার স্ত্রী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আমার স্ত্রী অনেক অসুস্থ থাকায় দ্রæত গলাচিপা নিয়ে যাই। সেখান থেকে পটুয়াখালী নিয়ে যাই।’ ওই গৃহবধূর স্বামী দাবি করেন, তার স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতন এবং ধর্ষণ করা হয়। পরে ঘর থেকে দেড় লাখের বেশি টাকা এবং স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় তিনজন জড়িত আছেন বলে তথ্য দিয়েছেন গৃহবধূর স্বামী। প্রতিবেশীরা জানান, ভিকটিমের অবস্থা গুরুতর ছিল। পরনের পোশাক ছিল এলোমেলো। িিভকটিমের তথ্যমতে, যে তিনজন এসেছিল তাদের গায়ে বোরকা ছিল। গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, একজন রোগী এসেছিল। রোগীর বক্তব্য অনুযায়ী তাকে মারধর এবং ধর্ষণ করা হয়েছে। আমরা তাকে পটুয়াখালী পাঠিয়ে দিয়েছি। তবে ধর্ষণ কিনা তা বলতে পারছি না। পটুয়াখালী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শনিবার সকালে তাকে ভর্তি করা হয়। তিনি অসুস্থ। তার মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়েছে। রাঙ্গাবালী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি ঘটনাস্থলে যাব। রাঙ্গাবালী থানার ওসি মো. আলী আহম্মেদ বলেন, ভিকটিমের যারা আত্মীয়-স্বজন তারা কেউ এলাকায় নেই, পটুয়াখালী গেছেন। গলাচিপা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। ওসি আরও বলেন, প্রকৃত ঘটনা জানতে আমি ঘটনাস্থলে এসেছি, ঘটনার তদন্ত চলছে।
এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান বলেন, বিষয়টি জেনেই আমি ভিকটিমের স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি ঘটনায় জড়িত তিনজনের নাম বলেছেন। তাৎক্ষণিক ওসি এবং চরমোন্তাজ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। শাকিল নামের একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধরা হয়েছে। বিষয়টি আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখবো।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply