রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:১৩ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ করোনা ভাইরাস মহামারির সামনে একপ্রকার অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে ভারত। হাসপাতালগুলোতে জায়গা নেই, অক্সিজেন সংকটে রোজ মারা যাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। শ্মশানগুলোতে দিনরাত জ্বলছে চিতার আগুন। সরকারি হিসাবে গত সাতদিন দুই হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন দেশটিতে। কিন্তু এই সংখ্যা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বলা হচ্ছে, প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর খবর সরকারি হিসাব থেকে বাদ পড়ছে।
মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি শুধু দিল্লি ঘুরেই মৃতের সংখ্যা নিয়ে বড় ধরনের বিভ্রান্তি খুঁজে পেয়েছে।
দিল্লি মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন (এমসিডি) পরিচালিত ২৬টি শ্মশান ঘুরে এনডিটিভি জানতে পেরেছে, গত ১৮ এপ্রিল থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত শহরটিতে ৩ হাজার ৯৬ জন করোনা রোগীর মরদেহ দাহ করা হয়েছে।
সরকারি হিসাবে, দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৭৭১ জন করোনায় মারা গেছেন। তবে সেখানে প্রকৃত মৃতের সংখ্যা যে আরও বেশি তা বলাই বাহুল্য।
দিল্লি সরকারের প্রকাশিত হিসাবে দেখানো হচ্ছে, মারা গেছেন ১ হাজার ৯৩৮ জন। অর্থাৎ অন্তত ১ হাজার ১৫৮ জন করোনা রোগীর নাম সরকারি খাতায় ওঠেনি।
হিসাবের এমন গরমিলের কারণ এখনও অজানা। দিল্লি কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে এখনও মুখ খোলেনি।
তাছাড়া, এমসিডি শুধু তাদেরই করোনায় মৃত বলে গুনছে যাদের হাসপাতাল থেকে আনা হচ্ছে। বাড়ি থেকে কারও মরদেহ পৌঁছালে সেটি ভিন্ন তালিকায় যোগ করা হয়।
দিল্লি উপকণ্ঠে অবস্থিত গাজিপুর শ্মশানের এক কর্মী বলেন, হাসপাতাল থেকে যারা আসে, তারা অ্যাম্বুলেন্সে আসে। অন্যরা [মরদেহ] আনে বাড়ি থেকে। কিন্তু মৃত্যুর কারণের দিকে তাকালে দেখা যায় তারা শ্বাসযন্ত্র বন্ধ হয়ে মারা গেছেন।
অনুজ বানসাল নামে ওই কর্মী আরও বলেন, আমরা মৃত্যুর কারণ করোনাভাইরাস অথবা স্বাভাবিক লিখি। মৃত্যু যদি হাসপাতালে হয়, আমরা জানতে পারি এটি করোনা কি না। কিন্তু মৃত্যু বাড়িতে হলে সেটি নিশ্চিত হয় না, তখন আমরা এটি স্বাভাবিক কারণ লিখে রাখি।
দিল্লি মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনও বাড়িতে মৃত্যুকে করোনায় মৃত্যু হিসেবে গোনে না। পরিবার যদি জানায় কেউ করোনায় ভুগছিল, তাহলে সেটিকে বড়জোর ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে ভিন্ন একটি তালিকায় যোগ করা হয়। অবশ্য সেক্ষেত্রে সুরক্ষা প্রোটোকল মেনেই মরদেহ দাহ করা হয়।
এতে প্রশ্ন উঠছে, শুধু দিল্লিতেই যদি প্রতিদিন এত মানুষের মৃত্যু গোনার বাইরে থাকে, তাহলে গোটা দেশে কত মানুষের মৃত্যু গোপন থেকে যাচ্ছে?
করোনার সুনামিতে বিপর্যস্ত ভারতে গত এক সপ্তাহ ধরে প্রায় প্রতিদিনই আক্রান্ত-মৃত্যুর রেকর্ড ভাঙছে। গত রোববার দেশটিতে বিশ্বে প্রথমবারের মতো সাড়ে তিন লাখ রোগী শনাক্ত হয়েছিল। সোমবার শনাক্তের সংখ্যা কিছুটা কমলেও তা এখনও তিন লাখের ওপরেই রয়েছে।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply