কলাপাড়ায় টিসিবি’র নিত্য পন্য’র দ্রব্য সামগ্রী থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ | আপন নিউজ

মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ০১:৪৪ পূর্বাহ্ন

প্রধান সংবাদ
গলাচিপায় বিটিএফ স্কুলের শতভাগ বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের এমপির সংবর্ধনা গলাচিপায় কালবৈশাখী আতঙ্কে তরমুজ চাষিরা তালতলীতে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ঘর-জমি পাচ্ছেন ৩০ জন ভূমিহীন ও গৃহহীন বামনা উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা বুধবার কলাপাড়া আইনজীবী কল্যাণ সমিতির নাথুরাম সভাপতি, আনোয়ার সম্পাদক নির্বাচিত গলাচিপায় অবশেষে বিয়ে করলেন আরিফ-মারিয়া গলাচিপায় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় জমিসহ গৃহ উদ্বোধন বিষয়ে ইউএনও’র প্রেস ব্রিফিং এসো মিলি ইতিহাসের আঙিনায় স্মৃতিমন্থনে জেলার শ্রেষ্ঠ থানা মহিপুর, শ্রেষ্ঠ ওসি আবুল খায়ের গলাচিপায় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি বিষয়ে গনসচেতনতা মূলক মাঠ মহড়া
কলাপাড়ায় টিসিবি’র নিত্য পন্য’র দ্রব্য সামগ্রী থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ

কলাপাড়ায় টিসিবি’র নিত্য পন্য’র দ্রব্য সামগ্রী থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ

বিশেষ প্রতিবেদক।। কলাপাড়ায় সর্বাত্মক লকডাউনে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য টিসিবি’র নিত্য পন্য’র দ্রব্য সামগ্রী ট্রাক সেলে যথাযথ তদারকি না থাকায় লোপাটের অভিযোগ উঠেছে।

এতে নিম্ন আয়ের কর্মবিমূখ হয়ে পড়া মানুষের ভরসা ন্যায্য মূল্যের টিসিবি পন্যও এখন দুস্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে।

এছাড়া টিসিবি’র কার্যক্রমে স্বচ্ছতার অভাবে নিত্য পন্য’র বাজার মূল্যের উর্ধ্বগতি, কালোবাজারি ও মজুদদারী নিয়ন্ত্রনে না থাকায় সরকারের মহতী উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে। ফলে ডিলারদের ভর্তুকী দিয়েও নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে টিসিবি’র দ্রব্যসামগ্রী বিক্রয় নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।

অথচ ডিলাররা বলছেন ডিপো থেকে পন্যসামগ্রী আনার পর ট্রাকে করে বিক্রীর দীর্ঘ লাইনে এক ঘন্টায় সব শেষ।



নিম্ন আয়ের মানুষ বলছেন করোনা’র মধ্যে লাইনে দাড়িয়েও খালি হাতে ফিরছেন তারা। আর স্থানীয় প্রশাসন বলছে টিসিবি নিয়ে তাদের কঠোর অবস্থানের কথা। আসলে টিসিবি’র নীতি মালা কতটা অনুসরন করছেন ডিলাররা, প্রকৃত চিত্রটা কি?

অনুসন্ধানে জানা যায়, জেলার সিংহভাগ নিম্ন আয়ের মানুষ টিসিবি’র সুবিধা বঞ্চিত। ডিলাররা গত এক সপ্তাহে মাত্র দু’এক ঘন্টার জন্য টিসিবি পন্য বিক্রী করেই পন্য শেষ হওয়ার কথা বলছে। অথচ সেই দু’এক ঘন্টার লাইনে দাড়িয়েও ডাল পেয়েছে তো চিনি পায়নি। চিনি পেয়েছে তো তেল পায়নি, এমনই অভিযোগ অনেকেই।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, জেলায় সিংহভাগ টিসিবি ডিলার নিয়োগ পেয়েছেন রাজনৈতিক ক্ষমতা ও দাপটে। নজরদারির দুর্বলতায় নীতিমালা অনুসরন করছেনা ডিলাররা।

কলাপাড়ায় তিন জন ডিলারের তথ্য অফিস বললেও ইত্যাদি ষ্টোর ও মার্জিয়া নামে দু’জন টিসিবি ডিলারের তথ্য জানা গেছে। লতিফ ষ্টোর’র লতিফ খালাসি কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ায় তার ছেলের নামে ডিলার শিপ পরিবর্তনের আবেদন করেছেন, যা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এরমধ্যে কুয়াকাটায় মার্জিয়া ষ্টোর’র স্বত্ত্বাধিকারী ৬জুলাই বরিশাল থেকে ২১০০ কেজি পন্য পেলেও ২০০০ কেজি পন্য পাওয়ার কথা বলছে। আর অফিস বলছে ২১০০ কেজি। ইত্যাদি ষ্টোর ২০০০ কেজি পন্য পেয়েছে। দু’জন ডিলারই বলছে ট্রাক সেলে ঘন্টা খানেক সময়ের মধ্যে সব পন্য শেষ। যার দরুন নিম্ন আয়ের মানুষ প্রতি লি: সয়াবিন তেল ১৪০ টাকা, প্রতি কেজি চিনি ৭৫ এবং ডাল ৮০-১১০ টাকা মূল্যে কিনতে বাধ্য হচ্ছে।

খোদ উপজেলা প্রশাসনের জারিকারক আবুল হোসেন মোল্লা ও নৈশ প্রহরী মামুন ১০ জুলাই লাইনে দাড়িয়ে টিসিবি’র শুধু মাত্র ৫ লি: তেল কিনতে পেরেছেন। ডাল, চিনি পাননি তারা, যা তাদের বাজার থেকে কিনতে হয়েছে।

টিসিবি’র বরিশাল সহকারী কার্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো: শহিদুল ইসলাম জানান, বরিশাল বিভাগে টিসিবি’র ২০২ জন ডিলার রয়েছে। ট্রাল সেল কোটা রয়েছে ২৪টা। বিভাগীয় শহরে প্রতিদিন ৫টি ট্রাক সেল, জেলা শহরে ২টি করে এবং বাকী গুলো উপজেলা ও পৌরশহরে পর্যায়ক্রমে ট্রাক সেলে নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে বিক্রী করবে। যাতে প্রতি লি: তেল ১০০টাকা, কেজি প্রতি চিনি ৫৫ টাকা, ডাল ৫৫ টাকা হারে কিনতে পারে নিম্ন আয়ের মানুষ। এজন্য লিটার ও কেজি প্রতি ডিলারদের ৭-৮ টাকা হারে ভর্তুকী দিচ্ছে সরকার।

তিনি আরও জানান, পটুয়াখালী জেলায় ৩১জন টিসিবি’র ডিলার রয়েছে। ডিলারদের ট্রাক সেলে স্ব স্ব উপজেলা প্রশাসন এ কার্যক্রম তদারকি করবে। শৃংখলা রক্ষায় নিম্ন আয়ের মানুষ লাইনে দাড়িয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ন্যায্য মূল্যে পন্য সামগ্রী কিনবে। যাতে ক্রাইসিস পিরিয়ডেও দেশে দ্রব্যমূল্যের বাজার স্থিতিশীল থাকে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ও কালো বাজারি নিয়ন্ত্রনে থাকে।

টিসিবি ডিলার ইত্যাদি ষ্টোর’র প্রোপাইটার সাইদুর রহমান বলেন, ’বরিশাল গোডাউন থেকে ১০জুলাই ১৯০০ কেজি পন্য পেয়েছি। তেল ১হাজার লিটার, ডাল ৫০০ কেজি ও চিনি ৪০০ কেজি। যা ওই দিনই বিকেলে কলেজের খোলা মাঠে ট্রাক সেলে ১ ঘন্টার মধ্যে বিক্রী শেষ।’ মার্জিয়া ষ্টোর’র প্রোপাইটার মোস্তাফিজ বলেন, ’৬জুলাই বরিশাল থেকে তেল , ডাল ও চাল পেয়েছি ২হাজার কেজি। যা ওইদিন বিকেল কুয়াকাটা চৌরাস্তা সংলগ্ন ধান সিঁড়ি ডাক বাংলোর নীচে ট্রাক সেলে ঘন্টা খানেকের মধ্যে বিক্রী শেষ।’ টিসিবি পন্য বিক্রীর সময় উপজেলা প্রশাসনের তদারকি ছিল কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে দু’জন ডিলারই বলেছেন তারা মুঠো ফোনে ইউএনও’র কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে ট্রাক সেল করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, ’টিসিবি ডিলারদের নীতিমালা অনুসরন করে পন্য বিক্রীর জন্য বলা হয়েছে। দু’এক দিনের মধ্যেই ডিলারদের আবারও ডেকে বিষয়টি বলা হবে। টিসিবি পন্য বিক্রীতে কোন রকমের অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.




© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By MrHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!