গলাচিপায় শ্বশুর ও স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা দিয়ে হয়রানি | আপন নিউজ

শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৪:০২ পূর্বাহ্ন

প্রধান সংবাদ
গলাচিপায় শ্বশুর ও স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা দিয়ে হয়রানি

গলাচিপায় শ্বশুর ও স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা দিয়ে হয়রানি

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা: গলাচিপায় শ্বশুর ও স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক গৃহবধূর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার রতনদী তালতলী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাচারীকান্দা নামক স্থানে। একই উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কল্যাণকলস গ্রামের মনজ হাওলাদারের মেয়ে পপি রানী (২২) নামের এক গৃহবধু দুই কন্যা সন্তানের জননী ও সজল বেপারীর (৩০) স্ত্রী বেড়ানোর কথা বলে স্বামীর সংসার ছেড়ে বাবার বাড়ী গিয়ে তার বাবার পরামর্শে যৌতুক দাবি ও নারী নির্যাতনের মিথ্যা মামলা দিয়ে স্বামী ও শ্বশুরকে হয়রানী মামলা করা হয়েছে।

পটুয়াখালী বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনালে দায়েরকৃত পিটিশন মামলা নম্বর ১০০/২০২২। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। এলাকায় এ ঘটনা নিয়ে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিগত প্রায় ৫ বছর আগে হিন্দু শাস্ত্র মোতাবেক মনজ হাওলাদারের মেয়ে পপি রানীর সাথে সুশীল বেপারীর ছেলে সজল বেপারীর সাথে বিবাহ কার্য্য সম্পন্ন হয়। বিবাহের কিছুদিন যেতে না যেতেই পারিবারিক বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদের সূত্রপাত হয়।

এ প্রসঙ্গে মামলার অভিযুক্ত ভোক্তভোগী স্বামী সজল বেপারীর বলেন, ‘শ্বশুর-শাশুড়ির আশ্রয় প্রশ্রয়ে আমার স্ত্রী পপি রানী আমাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে উচ্ছৃঙ্খল আচারণ করত। আমার শ^শুর মনজ হাওলাদারের কোন ছেলে না থাকায় আমাকে তার কাছে গিয়ে কাজ করতে বলে। এছাড়া আমার স্ত্রীর নামে জায়গা ও সেখানে ঘর তুলে দিতে বলে। কিন্তু আমার বাবা-মা ছেড়ে শ্বশুরালয়ে যেতে রাজী না হওয়ায় আমার স্ত্রী আমার সাথে প্রায়ই ঝগড়া করত। সে তার বাবার বাড়িতে বেড়ানোর কথা বলে সেখানে গিয়ে আমার ও আমার বাবার নামে মিথ্যা মামলা করে। যদি আমি দোষ করে থাকি তাহলে আমার বিরুদ্ধে মামলা করুক তাতে কোন দুঃখ নেই। কিন্তু আমার নিরপরাধ পিতাকে কেন জড়ানো হয়েছে সেটা দুঃখজনক। এ বিষয়ে সজল বেপারীর বাবা সুশীল বেপারী (৫৮) বলেন, খুব শখ করে আমার ছেলেকে বিবাহ করিয়েছি। বিবাহের পর থেকেই আমার বেয়াই বাড়ি থেকে পেয়েছি শুধু লাঞ্চনা। তারা আমার ছেলেকে ঘরজামাই করে রাখার জন্য বিভিন্ন সময় নানা কৌশল অবলম্বন করত। আমার ছেলের ঔরষে ২টি কন্যা সন্তান রয়েছে। আমার আদরের সেই নাতনীদেরকে তারা নিয়ে গেছে। তাদের ছাড়া আমার স্ত্রী বিভা রানী ঘুমাতে পারে না। আমার স্ত্রী বিভা রানীর প্রতি রাতের কান্নায় আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়। আমি আমার পুত্রবধুসহ আমার নাতনীদেরকে ফিরে পেতে গলাচিপা থানা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত আবেদন করেও কোন সুরহা পাই নি। তারা এখন এতটাই বেপরোয়া যে, আমার ও আমার ছেলের নামে পটুয়াখালীতে হয়রানী মামলা দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, এই মামলা হওয়ায় আমার পরিবারটি আজ নিস্ব হওয়ার পথে। আমার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমি ও আমার ছেলেও উপর নির্ভরশীল সবাই। আমরা কৃষিকাজ করে সংসার চালাই। প্রতিদিনই যদি এ বিষয় নিয়ে দ্বারে দ্বারে সালিশীর জন্য যেতে হয় তাহলে আমরা কাজও করতে পারব না আর সংসারও আর চলবে না। আমার ঘরে আমার বৃদ্ধ মা আছে। এই মামলা মামলা করে তার ঔষধও আজ কিনে দিতে পারছি না। সুশীল বেপারীর স্ত্রী বিভা রানী (৪৭) বলেন, মামলায় পড়ার পর থেকে আমার বাড়িতে ঠিকত রান্না বান্না হয় না। বাবা ছেলে কেউই কাজ করতে যায় না। সকাল হলেই আমার পুত্রবধু ও নাতনীদের ফিরিয়ে আনার জন্য তারা একেক জনের কাছে যাচ্ছেন। কাজ না করায় এখন আমরা দু’বেলা ঠিকমত খেতেও পারছি না। অসুস্থ শাশুরীকে টাকার অভাবে ঔষধও খাওয়াতে পারছি না।

এ বিষয়ে গৃহবধু পপি রানী বলেন, আমি মামলা করেছি। আদালতের মাধ্যমেই এর সুরহা হবে। গৃহবধু পপি রানীর বাবা মনজ হাওলাদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বড় মেয়েকে আমি আদালতের মাধ্যমেই তার কাছে দিব। আমি কোন সালিশীর মাধ্যমের তাদের কাছে আমার মেয়ে ও নাতনীদেরকে তাদের কাছে দিব না। কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মাইনুল সিকদার বলেন, আমরা দু’পক্ষকে ডেকে কয়েকবার আপোষের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। মেয়ে পক্ষকে বুঝাতে পারি নাই। পরে তারা আদালতে মামলা করলে আমি নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতের প্রতিবেদন সঠিকভাবে যাচাই বাছাই করে পাঠিয়েছি।

একাধিকবার রতনদী তালতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. গোলাম মস্তফা খান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল মোল্লা ও যুবলীগ নেতা শাকিল মিয়া, কল্যানকলস গ্রামের বরকত খা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খুকু আকন সালিশী বৈঠকে বসলেও মেয়ের বাবাকে তারা মানাতে পারে নি। তাই সালিশী বৈঠক কোন কাজে আসি নাই।

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগঃ
সদর রােড (উকিলপট্টি) কলাপাড়া, পটুয়াখালী।
হটলাইনঃ +৮৮ ০১৭১৯৯৩৫৫০৮
বরিশাল অফিসঃ গনি ভবন, জর্ডন রোড বরিশাল।
হটলাইনঃ +৮৮ ০১৬১১৫৭৪৪১৫
মেইলঃ alomgirsikderkalapara@gmail.com

© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By JPHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!