স্বাস্থ্য সুরক্ষা ছাড়াই ফসলের ক্ষেতে কীটনাশক প্রয়োগ প্রশিক্ষণের অভাবে জটিল স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে কৃষকরা | আপন নিউজ

রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১৮ পূর্বাহ্ন

প্রধান সংবাদ
আমতলী সদর ইউপি নির্বাচনে শেষ সময়ে প্রচারনায় ব্যস্ত প্রার্থীরা; জরিপে এগিয়ে মোতাহার আমতলী একে স্কুল মহাসড়ক থেকে ৪৫টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কলাপাড়ায় দূর্যোগ সচেতনতা মূলক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত কলাপাড়ায় ট্রাক কেনার কথা বলে আপন ভাতিজীর টাকা নিয়ে উধাও আপন চাচা জমে উঠেছে আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন; তিন প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস আমতলীতে ডায়েরীয়ার প্রকোপ, স্যালাইন সংঙ্কট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৬ জনের বেডে ৩১ জনের চিকিৎসা! কলাপাড়ায় ওয়ার্ড শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কে পি’টি’য়ে জ’খ’ম করার অভিযোগ গলাচিপায় ডায়রিয়ার প্রকোপ, শিশুর মৃ’ত্যু কলাপাড়ায় জমিসংক্রান্ত বিষয় সালিশি বৈঠক শেষে হামলা; তিনজনকে কু’পি’য়ে জ’খ’ম কলাপাড়ায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে মা-ছেলে ও ছেলের বউকে পি’টি’য়ে জ’খ’ম করার অভিযোগ
স্বাস্থ্য সুরক্ষা ছাড়াই ফসলের ক্ষেতে কীটনাশক প্রয়োগ প্রশিক্ষণের অভাবে জটিল স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে কৃষকরা

স্বাস্থ্য সুরক্ষা ছাড়াই ফসলের ক্ষেতে কীটনাশক প্রয়োগ প্রশিক্ষণের অভাবে জটিল স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে কৃষকরা

আমতলী প্রতিনিধিঃ স্বাস্থ্য সুরক্ষা ছাড়াই ফসলের ক্ষেতে কীটনাশক প্রয়োগ করছেন কৃষকরা। নিরাপদ পদ্ধতিতে কীটনাশক ব্যবহার না করায় জটিল স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছেন তাঁরা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলছেন, নিরাপদ পদ্ধতি ছাড়া কীটনাশক ব্যবহার চরম বিপজ্জনক এবং এতে রয়েছে জটিল স্বাস্থ্যঝুঁকি। তবে নিরাপদ ও সঠিক পদ্ধতিতে কীটনাশক প্রয়োগের ক্ষেত্রে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কোনো প্রশিক্ষণ কিংবা প্রচারনা নেই। দ্রæত পদক্ষেন না নিলে কৃষকরা ঘাতক মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জানাগেছে, আমতলী উপজেলার মোট আবাদি জমির পরিমাণ ২৩ হাজার ৫৫০ হেক্টর। ৩৩ হাজার ৫১২ কৃষক কৃষিকাজে সম্পৃক্ত। কৃষকরা আমন ধান রোপনের কিছুদিন পরেই ফসলের খেতে বিভিন্ন প্রজাতির পোকা দমনে কীটনাশক ব্যবহার করেন। কিন্তু এ কীটনাশক ব্যবহারে কৃষকদের সচেতনতা নেই। তারা হর হামেশা স্বাস্থ্য সুরক্ষা ছাড়াই কীটনাশক ব্যবহার করে থাকেন। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পরছেন তারা। অপর দিকে উপজেলা কৃষি অফিস কীটনাশক ব্যবহারে কৃষকদের কোন প্রকার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে না \ এতে তারা আরো স্বাস্থ্য ঝুকিতে পরছেন।

উপজেলার সমাসসেবা অফিসের তথ্য মতে, গত এক বছরে ৬৭ জন নারী ও পুরুষ জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আবেদন করেছেন। এর মধ্যে ক্যান্সার, কিডরী,লিভার সিরোসিস ও স্টোক প্যারালাইজড রোগী  রয়েছেন। এ ৬৭ জন জটিল রোগীর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৩৯ জন। তারা সবাই কৃষক। কৃষকদের জটিল রোগ থেকে রক্ষায় কীটনাশক প্রয়োগে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়ার জরুরী। নইলে জটিল রোগীর সংখ্যা তড়িৎগতিতে বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসা বিশেজ্ঞরা।

মঙ্গলবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা নাকে-মুখে মাস্ক বা কাপড় নেই। হাতে নেই হাতমোজা বা গøাভস। কাঁধে ঝোলানো কীটনাশকের মেশিন। মাঠের বিশাল ধানক্ষেতে কীটনাশক স্প্রে করছেন তারা। স্বাস্থ্য সুরক্ষার বালাই নেই। অনায়াসেই তারা কীটনাশক স্প্রে করছেন। স্প্রে শেষে পরিস্কার পরিছন্ন না হয়েই তামাক জাতীয় পন্য গ্রহন করছেন, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যান্ত ঝুঁকি।

কুকুয়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রব বলেন, ‘বিষ গিলে খাইলেও মোর কিচ্চু অইরে না। হারা জীবন তো এইরহমা করেই হারা জাগায় বিষ দিছি।  বাড়ি জাইয়্যা সাবান দিয়া গা ধুইলেই সব শেষ অইয়্যা যাইবে। তিনি আরো বলেন, মোগো গ্রামে ব্যাবাক্কে এইরহম জমিতে বিষ দেয়।

কাউনিয়া গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, জমিতে কীটনাশক স্প্রে করার বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কোনো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় না, এমনকি বøক সুপারভাইজার কীটনাশক প্রয়োগের ওপর কোনো পরামর্শ দেয়নি।

কৃষক জিয়া উদ্দিন জুয়েল বলেন,  ‘কীটনাশক ছিটানোর সঠিক কোনো পদ্ধতি আমার জানা নেই বা কেউ পরামর্শও দেয়নি। কীটনাশক ছিটানোর সময় খুবই দুর্গন্ধ হয়। ছিটানোর পর প্রচুর মাথা ঘোরে, বমি হয়, মাঝে মধ্যে বিভিন্ন ধরনের অসুবিধাও দেখা দেয়। স্থানীয় পল্লি চিকিৎসকের পরামর্শ ও চিকিৎসা নিয়ে থাকি।

মধ্য চন্দ্রা কৃষক জাকির মাতুব্বর বলেন,২০ বছর ধরে তিনি কৃষিকাজ করছি, কখনো কৃষি অফিসার এসে কীটনাশক স্প্রে করার বিষয়ে আমাকে কোনো প্রশিক্ষণ দেননি এমনকি সতর্ক করেননি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ঈছা বলেন, ‘বিভিন্ন উঠান বৈঠকে আমি নিজেই কৃষকদের কীটনাশক ব্যবহারে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। কারণ কীটনাশক শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তবে সরকারিভাবে কৃষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই। কৃষকরা নিজে থেকে সতর্ক না হলে কীটনাশকের অপব্যবহার রোধ সম্ভব না।কৃষকরা জৈব সারের চেয়ে রাসায়নিক সার বেশি ব্যবহার করে। তবে জৈব সার ব্যবহারে কৃষকরা যেন উদ্বুদ্ধ হয়, তার জন্য আমরা কাজ করছি। একজন কৃষক যখন ৫/১০ বছর এভাবে কীটনাশক স্প্রে করলে বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হন তারা। তিনি আরো বলেন কীটনাশক তরল, পাউডার, স্প্রে যে ধরনেরই  হোক অবশ্যই গøাভস, মাস্ক, হেড কভার ব্যবহার করতে হবে এবং ব্যবহার  শেষে  সেই মাস্ক, গøাভস, হেড কভার ডাস্টবিনে ফেলে দিতে হবে।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিবল্পনা কর্মকতা ডাঃ আব্দুল মুনয়েম সাদ বলেন, ‘মুখে মাস্ক ও হাতে গøাভস ব্যবহার না করে কেউ কীটনাশক স্প্রে করলে তিনি বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন। এ ছাড়া মাথা ব্যথা, মাথা  ঘোরানো, বমি বমি ভাব, চর্মরোগ, চোখ ও শরীরে অ্যালার্জি, শ্বাসকষ্ট এমনকি ফুসফুসে বড় ধরনের রোগও হতে পারে। তিনি আরো বলেন, এ প্রভাবে ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস, স্টোক প্যারালাইজড ও কিডনীর মত জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By JPHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!