রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:০১ অপরাহ্ন
উত্তম কুমার, বাউফলঃ বাউফলে বসতবাড়ির জমি বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় মারধর করে এক জেলে দম্পতিকে বাড়ি ছাড়া করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার বাড়িটি কাটাতার ও বাঁশের বেড়া দিয়ে দখল করে নেয়া হয়েছে। বাউফলের নাজিরপুর ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, প্রায় ১২ বছর আগে কচুয়া গ্রামে ২৬শতাংশ জমি কিনেন জেলে মো. নান্নু প্যাদা (৪২) ও ইয়ানুর বেগম (৩৫) দম্পতি। জমিতে ঘর তুলে ছেলে সন্তান নিয়ে বসত শুরু করে তারা। তাদের বাড়ির পাশেই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবকলীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সম্পাদক দিদারুল আলম টুকুর বাড়ি। দীর্ঘদিন ধরে জেলে দম্পতির জমি দখলে নিতে পায়তারা করে আসছিলেন টুকু। জমি বিক্রি করে অন্যত্র চলে যেতে চাপ দিয়ে ওই নেতা। পরিবার জমি বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন সময় মারধর ও নির্যাতন করেন ওই নেতা। এরপর তিনমাস আগে ওই বাড়িতে কাটাতারের বেড়া দিয়ে ওই দম্পতির চলাচলের পথ বন্ধ করে দেয়। এরপর মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয় নান্নু ও ইয়ানুরকে। সেই থেকে তারা প্রাণের ভয়ে বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে বেড়ান। এরপর নিরুপায় হয়ে তারা কচুয়া গ্রামে ইয়ানুরের বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
ভুক্তভোগী ইয়ানুর বেগম বলেন, ‘খেয়ে না খেয়ে টাকা জমিয়ে ২৬ শতাংশ জমি কিনে বাড়ি করি। কিন্তু এ জমিতে টুকুর নজর পড়ে। জোর জবর করে জমি দখল করতে চায়। জমি বিক্রি করতে চাপ দেয়। আমি রাজি না হওয়ায় চারপাশে বেড়া দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেয়। মারধরে করে বাড়ি ছাড়া করে। প্রাণের ভয়ে ছেলে, স্বামী নিয়ে বাবার বাড়িতে ভাঙা করে আশ্রয় নিয়েছি।’
নান্নু বলেন, ‘তারা প্রভাবশালী। তাদের অনেক ক্ষমতা। আমরা গরিব মানুষ। আমাদের কথা কেউ শুনে না। মেম্বার,চেয়ারম্যান ও ইউএন’র কাছে গিয়েও বিচার পাইনি। প্রাণে বাঁচতে নিজের ঘর বাড়ি ছেড়ে এখন শ্বশুর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।’
স্থানীয় বাসিন্দা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মো. অলিউল্লাহ বলেন, ‘অসহায় জেলের পরিবারের চলার পথ বন্ধ করে দেয় তারা। মানবিক কারনে ওই পরিবারটির চলাচলের জন্য আমার জায়গা দিয়ে বিকল্প পথ খুলে দেই। সেই পথও বন্ধ করে দেয় তারা। বিষয়টি সমাধানের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো সুরাহা হয়নি।
এবিষয়ে দিদারুল আলম টুকু সাংবাদিকদের বলেন,‘ ওই জমি আমার কাছে বিক্রি করার কথা ছিল, তারা বিক্রি করেনি। পাশের জমি তো আমার। তাই আমার জমিতে আমি বেড়া দিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বশির গাজী বলেন,‘ অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসিল্যান্ডকে পাঠানো হয়েছিল। তিনি (এসিল্যান্ড ) সরেজমিনে তদন্ত করে আসেছেন। এবিষয়ে খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply