গলাচিপায় অপার সম্ভাবনাময় সু-স্বাদু মুগডাল যাচ্ছে জাপানে | আপন নিউজ

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন

প্রধান সংবাদ
কলাপাড়ায় পূর্ব শত্রুতা বসত ফের ব্যবসায়ীর বাড়িতে চু’রি; ৮ লক্ষ টাকার মালামাল লু’ট কলাপাড়ায় শিক্ষককে মারধর, প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও সমাবেশ গলাচিপায় কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির উদ্বোধন কলাপাড়ায় আইপিএম পদ্ধতিতে চিনা বাদাম উৎপাদন শীর্ষক মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত কলাপাড়ায় জমি জমা বিরোধ; এক নারীকে পি’টি’য়ে জ’খ’ম কাউনিয়ায় এসএসসি ও সমমানে ১৫৬ জন পরিক্ষার্থীর জিপিএ-৫ আমতলীতে সৌদি রিয়াল প্র’তা’র’না চক্রের মুল হোতা ইউপি সদস্য গ্রে’প্তা’র কলাপাড়ায় কলেজ ছাত্রী’র ঝু’ল’ন্ত লা’শ উ’দ্ধা’র কলাপাড়ায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ১০ জনের মনোনয়নপত্র দাখিল ঘুর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস বুলেটিনের ব্যাখ্য প্রচার সেক্টরভিত্তিক আগাম কার্যক্রমের ওপর কর্মশালা
গলাচিপায় অপার সম্ভাবনাময় সু-স্বাদু মুগডাল যাচ্ছে জাপানে

গলাচিপায় অপার সম্ভাবনাময় সু-স্বাদু মুগডাল যাচ্ছে জাপানে

সঞ্জিব দাস, গলাচিপাঃ গলাচিপায় অপার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে মুগডালে। আর সম্ভাবনাময় এ সু-স্বাদু মুগডাল যাচ্ছে জাপানে। এতে খুশি কৃষকরা। বাংলাদেশের পরিবারগুলোর প্রতি দিনের খাদ্য তালিকায় ভাতের পরই ডালের স্থান। এ দেশের প্রায় সব রকমের ডালই চাষ করা হয়। এসবের মধ্যে মুগডাল অন্যতম। গলাচিপায় মাঠে মাঠে মুগডালের সমারহ। এটি খেতে যেমন সু-স্বাদু, তেমনি চাষ করেও ভালো দাম পাওয়া সম্ভব। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মুগডালের আবাদ হয়ে থাকে। এর মধ্যে পটুয়াখালী, বরগুনা, বরিশাল জেলায় আবাদ বেশি হয়। গলাচিপায় উৎপাদিত ডাল দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানোর পাশাপাশি বিদেশেও রফতানি করা হচ্ছে।

 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গলাচিপায় এ বছর মুগডালের আবাদ হয়েছে ১৫ হাজার ৮০০ হেক্টর, ফেলন (পেলেন ডাল) ডাল ৭৭০ হেক্টর ও খেসারী ডাল ৮৫০ হেক্টর। এ বছর ডালের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৪ হাজর ৫০০ হেক্টর। তবে তা ছাড়িয়ে গেছে। কম বেশি ডালের আবাদ করলেও চাষীর সংখ্যা ২২ হাজার ৫০০-এর মতো। বর্তমান সরকার রবি মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা হিসেবে গলাচিপা উপজেলার ৩ হাজার ৫০০ চাষীকে বিনামূল্যে জনপ্রতি পাঁচ কেজি করে বীজ মুগডাল বারী-৬, ২০ কেজি করে ড্যাব ও এমওপি সার বিতরণ করা হয়েছে। সূত্রে আরো জানা গেছে, এলাকাভেদে মুগের বপন সময়ের তারতম্য দেখা যায়। রবি মৌসুমে বরিশাল অঞ্চলের জন্য বপনের উত্তম সময় হচ্ছে পৌষ-মাঘ মাস (জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ হতে ফেব্রুয়ারির মধ্য ভাগ পর্যন্ত)। আষাঢ় মাসে (মধ্য জুন থেকে মধ্য জুলাই পর্যন্ত) অবিরাম বৃষ্টিতে মুগের ফল পচে যায়। চৈত্র মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে (মধ্য মার্চ) বীজ বপন সম্পন্ন করতে পারলে আষাঢ় মাসের আগেই ফসল সংগ্রহ করা যায় এবং ফল পচনের ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব হয়। তীব্র তাপদাহের কারণে কৃষক-কৃষাণীরা ডাল তোলার জন্য সূর্য উঠার আগ থেকেই ক্ষেতে কাজ শুরু করে। সূর্যের তাপের তীব্রতার কারণে ক্ষেত থেকে ডাল তোলা সমস্যায় পড়তে হয় কৃষকদের। এছাড়া গাছগুলো ভালোভাবে শুকিয়ে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে বা গরু দিয়ে মাড়াই করে মুগডাল সংগ্রহ করা হয়। সরেজমিনে গলাচিপা সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কালিকাপুর গ্রামের কৃষক আ. ছালাম মৃধা (৭৩) জানান, তিনি ৬০ শতাংশ জমিতে মুগডাল আবাদ করেছেন। আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে ট্রাক্টর বাবদ ২৭০০ টাকা, দৈনিক ৭০০ টাকা মজুরি বাবদ ছয় দিনে ৪২০০ টাকা, সার বাবদ ৪৫০ টাকা, ওষুধ বাবদ ১২২০ টাকা ও বীজ বপন করতে ১০০০ টাকা খরচ হয়েছে। তার উৎপাদিত ডাল হয়েছে দুই মণ। যার বাজার মূল্য ৮৪০০ টাকা। আরো কিছু ডাল ক্ষেতে হতে পারে।’ রতনদী তালতলী ইউনিয়নের উলানিয়া বাজারের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক আমির হোসেন বলেন, মুগ ডাল চাষে ফলন ভালো পাওয়া যায়। জাপানে মুগ ডালের চাহিদা আছে তারা এ ডাল দিয়ে বিভিন্ন ধরণের সুপ তৈরি করে। যা খুব সু-স্বাদু, পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যসম্মত। তাই জাপানে আমাদের এলাকার মুগডাল রপ্তানীর সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।

এ সময় তিনি আরো জানান, ‘গলাচিপায় বর্তমানে প্রচ- খরা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ার কারণে গরমে ডালের শাখা-প্রশাখা বাড়েনি। পাতা মুচরিয়ে রয়েছে। ফলন এ বছর কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জমিতে উপযোগী পরিবেশ না পাওয়ায় ডালের উৎপাদন কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলেই উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছে।’

এ বিষয়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. নাহিদ হাসান বলেন, ‘আমাদের এখানে দেশী বা সোনা মুগ, বারি মুগ-০৬ এর চাষ হয়। বারি মুগ-৬ এর হেক্টর প্রতি ফলন ১ থেকে ১.৫ টন। বিগত তিন-চার বছর ধরে এই এলাকার মুগডাল গ্রামীন ইউগ্লোনা কোম্পানির মাধ্যমে জাপান রফতানি হচ্ছে। তীব্র তাপদাহে মুগডালের ফুল শুকিয়ে যাচ্ছে। মাটিতে রসের ঘাটতি দেখা দেয়ায় ডালের আকার ছোট হচ্ছে, ডালের ছড়ার সংখ্যা কম হচ্ছে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজু আক্তার জানান, ‘তীব্র তাপদাহে কৃষকরা কিছুটা বিপাকে রয়েছে। তবে ক্ষেতে সেচ দেয়ার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে এলে ফলন বাড়ার সুযোগ রয়েছে।’

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By JPHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!