শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৫৬ অপরাহ্ন
গোফরান পলাশঃ
করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯’র সংক্রমন এড়াতে প্রশাসন ঘোষিত লকডাউন পটুয়াখালীতে অনেকাংশেই কার্যকর হয়েছে। জেলা শহর সহ উপজেলা ও পৌর শহর গুলোতে কয়েক লক্ষ মানুষ হোম কোয়ারেন্টিনে থাকায় শহরের প্রধান প্রধান সড়ক গুলো এখন ফাঁকা। জেলা প্রশাসন, পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী যৌথ ভাবে করোনা নিয়ন্ত্রনে কাজ শুরু করায় মানুষ যার যার ঘরে লক ডাউন হয়ে গেছে। তবে গ্রামীন জনপদের চিত্র একটু ভিন্ন। গ্রামের হাট বাজার গুলোতে এখনও চলছে চায়ের আড্ডা। এমনকি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলে জনসমাগম করে নারী, শিশু ও বয়স্কদের নিয়ে চলছে শুঁটকি মালিকদের প্রক্রিয়াজাত করার কাজ। সম্পূর্ন এনালগ ফ্রেমে বাস করা এসব মানুষের কাছে করোনা ভাইরাস কি? বা এর সংক্রমন এড়াতে করনীয় সম্পর্কে কোন তথ্য পৌঁছেনি এখনও।
জেলায় এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাস সংক্রমনের কোন খবর পাওয়া যায়নি। জেলায় বসবাসরত বিদেশ ফেরতরা সরকারের নির্দেশনায় হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। এমনকি হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা বিদেশ ফেরতদের খাদ্য সামগ্রী ফুরিয়ে গেলে পুলিশ প্রশাসন তাদের বাসায় খাদ্য সরবরাহ করছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসন ২৬ মার্চ হতে ৪এপ্রিল পর্যন্ত নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ব্যতীত সকল ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সরকারী, বে-সরকারী অফিস, ব্যাংক, বীমা, আদালত বন্ধ রাখার ঘোষনায় সব কিছু যেন এখন ফাঁকা।
দীর্ঘদিনের পরিচিত শহর যেন এখন সম্পূর্ন এক অচেনা শহরে পরিনত হয়েছে ।
জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী’র নির্দেশনায় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট গন এর সমন্বয়ে বাজার মনিটরিং চলছে, যাতে কোন অসাধু ব্যবসায়ী জনসাধারনকে জিম্মি করে অধিক মুনাফা লাভ করতে না পারে। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান’র নির্দেশনায় বিদেশ ফেরত মানুষের অনুসন্ধান এবং চিহ্নিত প্রবাসীদেরকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখার এবং তাদের জন্য চাহিদা অনুযায়ী খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
শনিবার করোনা সেল এর দেয়া তথ্যসূত্রে জানা গেছে, পটুয়াখালীতে ৩১৪ জন হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন এবং ৩৫৭ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।
করোনা সেল তথ্য সূত্রে আরও জানা যায়, পটুয়াখালীতে প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এ পর্যন্ত কোন করোনা আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়নি। জেলায় দুই একদিনের মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধক সামগ্রী সরকারীভাবে বরাদ্দ পাওয়া যাবে বলে জানায় সূত্রটি।
এছাড়া পটুয়াখালীর ৬ টি উপজেলা ও ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঁচটি করে এবং শহরে নবনির্মিত পরিবার পরিকল্পনা ভবনে ৫০ শয্যার আইসোলেশন কেন্দ্রে পয়োজনীয় মেডিকেল টিম ও সার্বক্ষনিক একটি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এদিকে পটুয়াখালী পৌর এলাকা, গলাচিপা, কলাপাড়া ও বাউফল পৌর এলাকা সহ বেশ কয়েকটি পৌর এলাকায় স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান বিতরন ও জীবানু নাশক ওষুধ এবং মশক নিধন ফগার স্প্রে করা হচ্ছে তা অপর্যাপ্ত। এসব কার্যক্রম উদ্বোধনের পর নেতাদের অনুসারী কতিপয় সংবাদকর্মী এটিকে তাদের নিউজ পোর্টাল ও ফেসবুক আইডিতে লিখে ব্যাপক বলে প্রচার করলেও অনেক ক্ষেত্রেই তা লোক দেখানো বলছেন স্থানীয়রা। তবে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশের তত্ত্বাবধানে হলে এসকল কার্যক্রম যথাযথ ও কার্যকর হবে বলে মনে করছেন অনেকে।
অপরদিকে জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার কয়েকটি চরে লকডাউন না মেনে শত শত নারী-পুরুষ ও শিশু শ্রমিক জড়ো করে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাত করোনো হচ্ছে। এতে করোনা সংক্রমনের ঝূঁকি থাকলেও এসব মানুষের কাছে এখনও পৌঁছেনি করেনা ভাইরাস কি? বা সংক্রমন এড়াতে করনীয় সম্পর্কে।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply