আমতলী প্রতিনিধিঃ
বরগুনার আমতলী উপজেলা ভুমি অফিস সংলগ্ন সড়কে গত চার মাস ধরে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রেখেছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফিরোজ ট্রেডার্স। এতে প্রায়ই দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে বিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার পথচারী। স্থানীয়দের অভিযোগ গত চার মাসে ২০ টির অধিক দূর্ঘটনা ঘটেছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে নেয়ার কথা বললেও তারা কোন কর্নপাত করছেন না। দ্রুত নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে নেয়ার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। দ্রæত সড়ক থেকে নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ইউএনও মনিরা পারভীন।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলা ভুমি অফিসের দ্বি-তল ভবনের কাজ পায় পটুয়াখালীর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফিরোজ ট্রেডার্স। এ বছর আগষ্ট মাসে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ভবন নির্মাণ সামগ্রী এনে সড়কের অর্ধাংশ জুড়ে রেখে দেয়। গত চার মাস ধরে নির্মাণ সামগ্রী সড়কের ওপরে পরে রয়েছে। স্থানীয়রা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে ফেলার কথা বললেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এতে কোন কর্নপাত করছে না। গত চার মাস ধরে সড়কে নির্মাণ সামগ্রী পরে থাকায় ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী পথচারী ও যানবাহনে প্রতি নিয়তই দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। ওই সড়কের পাশে রয়েছে এমইউ বালক মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আমতলী বন্দর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, উপজেলা ভুমি অফিস, ইউনিয়ন ভুমি অফিস, ভুমি অফিস জামে মসজিদসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান।
এই প্রতিষ্ঠানগুলোসহ শহরে প্রবেশের একমাত্র ব্যস্ততম সড়কে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখায় বিদ্যালয় শিক্ষার্থী, পথচারী ও যানবাহনের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান গত চার মাসে প্রায় ২০ টির অধিক দূর্ঘটনা ঘটেছে। রাতের অন্ধকারে পথচারী ও যানবাহন সড়কের নির্মাণ সামগ্রীর উপরে তুলে দেয়। এতে করে বেশী দূর্ঘটনার শিকার হয়। ভুক্তভোগীরা দ্রæত সড়ক থেকে নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে নেয়ার দাবী জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ফেলা রাখা বালুতে সড়ক সয়লাব হয়ে আছে। সড়কের অর্ধেকের বেশী জুড়ে রয়েছে নির্মাণ সামগ্রী। বিদ্যালয় শিক্ষার্থী,পথচারী ও যানবাহনের চলাচলে বিগ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। সড়কের প্রায় ৫০ মিটার জুড়ে রয়েছে নির্মাণ সামগ্রী। সড়কের পাশে রয়েছে একটি বিদ্যালয় খেলার মাঠ। ওই মাঠে খেলতে আসা খেলোয়ারদের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে।
আমতলী এমইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুরুল ইসলাম কাওসার ও মোঃ সুলতান মাহমুদ বলেন, গত চার মাস ধরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সড়কের ওপরে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখায় প্রায়ই দূর্ঘটনা ঘটছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে নেয়ার কথা বললেও তারা কোন কর্ণপাত করছে না। তারা আরো বলেন, গত চার মাসে মোটর সাইকেল, পিকআপ ও টমটমসহ প্রায় ২০ টির অধিক দূর্ঘটনা ঘটেছে।
পথচারী আবদুল মজিদ, বাকী বিল্লাহ ও মোঃ শাহজাহান বলেন, শহরে প্রবেশের মুল সড়কে বালু ফেলে রাখায় চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। বালুতে পা পিছলে গিয়ে দূর্ঘটনার শিকার হতে হয়। দ্রুত এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানাই।
আমতলী এমইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাসফি হাসান আলভি, নাদিম মাহমুদ ও সারমিন মনিরা বলেন, সড়কের নির্মাণ সামগ্রীর উপর দিয়ে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যেতে হয়। এতে প্রায়ই দূর্ঘটনার শিকার হতে হয়।
মোটর সাইকেল চালক মোঃ নজরুল ও মাইনুল ইসলাম বলেন, এই সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় বুকটা থরথর করে কাঁপে। আবার কখন বালুতে পিছলে দূর্ঘটনার শিকার হয়। এভাবে কেউ সড়কে বালু ফেলে রাখে তা আমাদের জানা নেই।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফিরোজ ট্রেডার্সের মালিক মোঃ ফিরোজ মিয়া বলেন, সড়কের পাশে বালু রাখা হয়েছে। ওই বালু সড়কে ছড়িয়ে যেতে পারে। অল্প দিনের মধ্যেই বালু সরিয়ে ফেলা হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাঃ মনিরা পারভীন বলেন, সড়কের ওপরে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখা খুবই অন্যায়।
দ্রুত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে সড়কের ওপর থেকে নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে
Leave a Reply