শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:২৯ অপরাহ্ন
আমতলী প্রতিনিধি।।
তালতলী শহরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যুবলীগ নেতা হাবিবুর রহমান কামাল মোল্লা এবং তার সহযোগিদের হাতে শারিরিক ভাবে নির্যাতিত নারী রোজিনাকে (৩৫) মামলা তুলে নিতে তাকে এবং মামলার স্বাক্ষী জলিকে জীবন নাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতনের ঘটনার মামলার পর বুধবার বিকালে ওই নির্যাতিত নারীর জবানবন্ধী গ্রহন করেছে আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুৃডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. সাকিব হোসেন।
জানাগেছে, তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া গ্রামের রোজিনা আক্তার কাজের জন্য মঙ্গলবার তালতলী উপজেলা শহরে আসেন। ওই শহরের বাঁধঘাট চৌরাস্তায় ‘মনিকা সাতক্ষীরা দধি ঘরে’ বসে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তার পরিচিত জলিল নামের একজনের সাথে দধি খাচ্ছিল। এ সময় তালতলী উপজেলা যুবলীগ যুগ্ম আহবায়ক কামাল মোল্লার সহযোগী শ্রী সাগর ও সাগর মিয়া নামের দু’জন যুবক এসে মোবাইলে তাদের ছবি ধারন করে। ওই সময়ে রোজিনা তাদেরতাদের ছবি তুলতে নিষেধ করলে ক্ষেপে যান শ্রী সাগর ও তার আরেক সহযোগী সাগর মিয়া। এক পর্যায় তারা ওই নারীকে দধি ঘরে বসে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা ও মারধর শুরু করে। এর কিছুক্ষণ পরই যুবলীগ নেতা কামাল মোল্লা ঘটনাস্থলে এসে সাগর দ্বয়ের সাথে যোগ হয়ে ওই নারীকে টেনে হেচড়ে রাস্তায় নিয়ে আসে এবং রাস্তায় ফেলে প্রকাশ্যে বেধরক মারধর করে।
এঘটনায় রোজিনা বাদী হয়ে ওই দিন রাতে কামাল মোল্লা, শ্রী সাগর ও সাগর নামে ৩ জনকে আসামী করে তালতলী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহার ভূক্ত এক আসামীকে ওই দিন রাতেই তালতলী থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠায়। মামলার বাদী রোজিনা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, মামলার পর থেকে আসামী যুবলীগ নেতা কামাল মোল্লা বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে আমাকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমিকি দিয়ে যাচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে আমাকে মেরে টুকরো টুকরো করে সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানায়। হুকির পর আমি এখণ ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছি। তিনি আরো বলেন,শারিরিক অবস্থাও ভাল নয়। মারধরের কারনে সকল শরীর ব্যাথায় ভরে গেছে। বুকে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব হচ্ছে। এ মামলার অন্যতম স্বাক্ষী মো. জলিল জানান, তাকেও জীবন নাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। বুধবার রাত ১০ টায় মিরাজ জমাদ্দার এবং ইলিয়াস নামে দুই যুবক জলিলের বাবা শাহজাহান হাওলাদার ও মা বেবী বেগমকে শাসিয়ে বলেন, তোমার ছেলে এই মামলায় স্বাক্ষী দিলে তাকে মেরে ফেলা হবে।
রোজিনার করা মামলায় বুধবার বিকেলে আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক ১৬৪ ধারায় রোজিনার জবানবন্ধী গ্রহন করেছেন বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোর্ট পরিদর্শক দুলাল চন্দ্র ।
অভিযুক্ত তালতলী উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক কামাল মোল্লা বলেন, এ ঘটনার সাথে আমি জড়িত না। মামলা তুলে নেওয়ার জন্যও আমি কোন হুমকি দেইনি। বা কাইকে হুমকি দেওয়ার জন্য পাঠায়নি। এ অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা বানোয়াট।
তালতলী থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, মামলা তুলে নেওয়ার জন্য জীবন নাশের হুমকি বিষয়ে আমার জানা নেই। মামলার এক আসামীকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্ঠা চলছে।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply