বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০০ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদকঃ
কলাপাড়ায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)’র বিএ, বিকম ও বিএসসি পাস কোর্সের দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা চলছে কপি ফর ষ্টুডেন্টস্ পরিবেশে। এমনকি করোনা অজুহাতে পরীক্ষার হলে এমন পরিবেশ নিশ্চিতে স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রবেশ পত্র প্রতি ৭০০ প্লাস টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সহযোগীতায় ও স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতায় শিক্ষার্থীরা এমন কপি ফর ষ্টুডেন্টস্ পরিবেশে পরীক্ষা দিচ্ছে। এতে দেশের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে বলে দাবী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক সহ অভিজ্ঞ মহলের।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ, বিকম ও বিএসসি পাস কোর্সের দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষায় কলাপাড়া উপজেলার ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৪০০ জন শিক্ষার্থী চলতি বছরের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এ পরীক্ষার ভ্যেনু কলাপাড়া ইসমাইল হোসেন তালুকদার ইনষ্টিটিউট। এতে সরকারী এমবি কলেজ থেকে ২২২ জন পরীক্ষার্থী, ধানখালী ডিগ্রী কলেজ থেকে ৬৯, মহিপুর মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল কলেজ থেকে ১৮, কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রী কলেজ থেকে ৫৩ এবং কলাপাড়া মহিলা ডিগ্রী কলেজ থেকে ২২ জন শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চলতি বছরের বিএ, বিকম ও বিএসসি পাস কোর্সের দ্বিতীয় বর্ষের এ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এসব শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফরম ফিলাপের সময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারিত সমুদয় অর্থ আদায় করে নেয়ার পরও প্রবেশ পত্র বিতরনের সময় ৭০০ প্লাস টাকা আদায় করে নেয় কপি ফর ষ্টুডেন্টস্ পরিবেশে পরীক্ষার জন্য। যা কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিলে জমা হয়নি। ১৩ ফেব্রুয়ারী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পরীক্ষা শুরু হয়, যা শেষ হবে মার্চ মাসের শেষ দিকে। শুক্রবার ব্যতীত প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কলাপাড়া ইসমাইল হোসেন তালুকদার ইনষ্টিটিউট ভ্যেনুতে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পরীক্ষা পরিচালনা কমিটিতে ইউএনও সভাপতি, সরকারী এমবি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেন্দ্র সচিব হিসেবে রয়েছেন। পরীক্ষার হলে পরিদর্শক হিসেব নির্বাহী ম্যােিষ্ট্রটের উপস্থিত থাকার নির্দেশনা থাকলেও দেখা মিলছে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা, দারিদ্র বিমোচন কর্মকর্তা, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও একাডেমিক সুপারভাইজারের। এতে পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত অর্থ দিয়েও সন্তুষ্ট, যেন বিএ, বিকম ও বিএসসি পাস কোর্সের দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষায়ও অটো পাশের লাইনে দাড়িয়ে আছে তারা।
এদিকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা সংক্রান্ত তথ্য জানতে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় কর্মকর্তা ও কলেজ অধ্যক্ষদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তারা কোন তথ্য দিয়ে সহায়তা করেনি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পরীক্ষার্থী ও কলেজ শিক্ষক প্রবেশ পত্র প্রতি ৭০০ প্লাস টাকা আদায়ের সত্যতা স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে পরীক্ষার হল সচিব সরকারী এমবি কলেজের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক মো: মনিরুজ্জামান’র কাছে মুঠো ফোনে তথ্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ’৩৫০ জন পরিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। কোন কলেজ থেকে ক’জন পরিক্ষার্থী এবং বিএ, বিকম ও বিএসসি পরীক্ষায় কতজন অংশ নিচ্ছে, তা আমি জানি না। এছাড়া প্রবেশ পত্র বিতরনের সময় অর্থ আদায়ের বিষয়েও আমি কিছু জানি না।’
কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সিএম সাইফুল ইসলাম খান বলেন, ’আমার কলেজ থেকে ৫৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।’ প্রবেশ পত্র বিতরনে টাকা আদায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ’প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধান অনুযায়ী ৪০০ টাকা করে নেয়া হয়েছে।’
সরকারী এমবি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শহিদুল আলম বলেন, ’কলেজে এসে জানতে হবে। মুঠো ফোনে আমি কোন ইন্টারভিউ দেবো ন।’
পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সভাপতি কলাপাড়া ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক এ বিষয়ে তার কোন মন্তব্য নেই বলেন।
এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামান’র অফিসিয়াল নম্বরে একাধিকবার সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করেও সংযোগ স্থাপন সম্ভব না হওয়ায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply