সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:০২ পূর্বাহ্ন
আমতলী প্রতিনিধিঃ গাড়ী কেনার এক লক্ষ টাকা যৌতুক না দেয়ায় দুই সন্তানের জননী মোঃ শাহিনুর বেগমকে বেধরক মারধর করে তিন দিন আটকে রেখে পাগল আখ্যা দিয়ে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বামী কালু হাওলাদার ও তার পরিবারের লোকজন এমন কান্ড ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন গৃহবধু শাহিনুর। আহত শাহিনুরকে স্বজনরা উদ্ধার করে শনিবার রাতে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে বৃহস্পতিবার আমতলী উপজেলার ছোট নীলগঞ্জ গ্রামে।
জানাগেছে, গত ১০ বছর পুর্বে শাহিনুর বেগমকে তার বাবা হানিফ হাওলাদার আমতলী উপজেলার ছোট নীলগঞ্জ গ্রামের মোতালেব হাওলাদারের ছেলে কালু হাওলাদারের সাথে বিয়ে দেয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য শাহিনুরকে মারধর করে আসছে কালু ও তার পরিবারের লোকজন। গত এক মাস আগে গাড়ী কেনার কথা বলে শাহিনুরকে তার বাবার কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলে। এ টাকা দিতে অস্বীকার করে শাহিনুরের পরিবার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত এত মাসে তিন দফায় মারধর করেছে এমন অভিযোগ শাহিনুরের। তখন ৯৯৯ ফোন দিয়ে পুলিশের সহায়তায় উদ্ধার করা হয়। কিন্তু এতে শান্ত হয়নি কালু হাওলাদার। গত বৃহস্পতিবার শাহিনুরকে টাকা আনতে বাবার বাড়ীতে যেতে বলে। শাহিনুর টাকা আনতে যেতে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী কালু হাওলাদার, শ্বশুর মোতালেব হাওলাদার, শ্বাশুড়ী কহিনুর বেগম ও ননদ রোকেয়া বেগম তাকে বেধরক মারধর করে। পরে পাগল আখ্যা দিয়ে তিন দিন ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। খবর পেয়ে শনিবার সন্ধ্যায় পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
রবিবার হাসপাতালে গিয়ে দেখাগেছে, শরীরের যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন শাহিনুর। তার মুখ মন্ডল ও শরীরে আঘাতের কালো চিহৃ রয়েছে।
আহত গৃহবধু শাহিনুর বলেন, গাড়ী কিনতে এক লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করেন আমার স্বামী। এ টাকা দিতে অস্বীকার করলে আমাকে স্বামী, শ্বশুর, শ্বাশুড়ী ও ননদ মিলে বেধরক মারধর করে ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। তিনি আরো বলেন, বিয়ের দশ বছরে অন্তত অর্ধ শতাধিকবার মারধর করেছে।
স্বামী কালু হাওলাদার যৌতুক দাবীর কথা অস্বীকার করে বলেন, আমাকে মারতে আসায় মারধর করেছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ লুনা আক্তার বলেন, গৃহবধু শাহিনুরের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহৃ আছে। তাকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি একেএম মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। ওই গৃহবধুকে চিকিৎসা দেয়ার পরামর্শ দিয়েছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply