কলাপাড়ায় ৭২ একর খাস জমি বন্দোবস্ত কান্ডে ফৌজদারী মামলা | আপন নিউজ

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫৩ অপরাহ্ন

প্রধান সংবাদ
আমতলী সদর ইউপি নির্বাচনে শেষ সময়ে প্রচারনায় ব্যস্ত প্রার্থীরা; জরিপে এগিয়ে মোতাহার আমতলী একে স্কুল মহাসড়ক থেকে ৪৫টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কলাপাড়ায় দূর্যোগ সচেতনতা মূলক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত কলাপাড়ায় ট্রাক কেনার কথা বলে আপন ভাতিজীর টাকা নিয়ে উধাও আপন চাচা জমে উঠেছে আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন; তিন প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস আমতলীতে ডায়েরীয়ার প্রকোপ, স্যালাইন সংঙ্কট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৬ জনের বেডে ৩১ জনের চিকিৎসা! কলাপাড়ায় ওয়ার্ড শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কে পি’টি’য়ে জ’খ’ম করার অভিযোগ গলাচিপায় ডায়রিয়ার প্রকোপ, শিশুর মৃ’ত্যু কলাপাড়ায় জমিসংক্রান্ত বিষয় সালিশি বৈঠক শেষে হামলা; তিনজনকে কু’পি’য়ে জ’খ’ম কলাপাড়ায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে মা-ছেলে ও ছেলের বউকে পি’টি’য়ে জ’খ’ম করার অভিযোগ
কলাপাড়ায় ৭২ একর খাস জমি বন্দোবস্ত কান্ডে ফৌজদারী মামলা

কলাপাড়ায় ৭২ একর খাস জমি বন্দোবস্ত কান্ডে ফৌজদারী মামলা

বিশ্বাস শিহাব পারভেজ মিঠু।। আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের অন্তরালে ৪২ বিত্তবানের নামে ২৫ কোটি টাকা মূল্যের ৭২ একর খাস জমি বরাদ্দ দেয়ার ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির তদন্ত শেষ না হতেই ফৌজদারী মামলা দায়ের করা হয়েছে। কলাপাড়া ভূমি অফিস সার্ভেয়ার মো: হুমায়ুন কবিরকে প্রধান আসামী করে অজ্ঞাতনামা আসামীদের নামে দন্ডবিধির ৪০৮/৪০৯/৪৬৭/৪৬৮ ও ৪৭১ ধারায় বৃহস্পতিবার সকালে কলাপাড়া থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায়

অজ্ঞাতনামা আসামীদের সংখ্যা স্পষ্ট করা হয়নি। তবে ৪২ বিত্তবান বন্দোবস্ত গ্রহীতার নাম, ঠিকানা, বন্দোবস্ত কেস ও দলিল নম্বর, জমির তফসিল উল্লেখ করা হয়েছে। বন্দোবস্ত গ্রহীতার তালিকায় রাজধানী ঢাকার মিরপুর এলাকার মো: আনোয়ারুল ইসলাম, গলাচিপা উপজেলার চরমোন্তাজ গ্রামের আর্শ্বেদ আলী তালুকদার এবং গলাচিপা পৌরশহরের সোহরাব হোসেন সহ অন্যান্যরা কলাপাড়া উপজেলার। এরা মামলার আসামী, স্বাক্ষী না ভিকটিম স্পষ্ট করা হয়নি। এছাড়া মামলায় স্বাক্ষী হিসেবে কারো নাম নেই। মামলার বাদী হয়েছেন ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক। যার স্বাক্ষরে বন্দোবস্ত রেজিষ্ট্রী হয়েছে।

সেই স্বাক্ষর জাল না সঠিক সেটি নিশ্চিত হওয়ার আগেই সেই ইউএনও বাদী হওয়ায় মামলার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এতে আলোচিত ৭২ একর খাস জমি বন্দোবস্ত কান্ডে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিতে বিঘœ সৃষ্টি হতে পারে, এমন মন্তব্য করেছেন পটুয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর।

মামলায় বলা হয়েছে, ইউএনও (বাদী) ৩মার্চ ২০২২ থেকে ১৭ মে ২০২২ পর্যন্ত সহকারী কমিশনার (ভূমি)’র অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। এসময় মুজিব শতবর্ষের ১৯৫ ভূমিহীনের ভূমি ও বসতবাড়ী বন্দোবস্ত কেসের কবুলিয়ত রেজিষ্ট্রী করার জন্য ভূমি অফিসে বিভিন্ন স্মারকে প্রেরন করা হয়। যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অনুমোদন প্রাপ্ত কবুলিয়ত রেজিষ্ট্রী করার জন্য সার্ভেয়ার হুমায়ুনকে ক্ষমতা প্রদান করা হয়। কিন্তু সার্ভেয়ার বাদীর স্বাক্ষর জাল করে আরও ৪২টি বন্দোবস্ত কবুলিয়ত বিত্তবানদের নামে রেজিষ্ট্রী করে দেয়। যাদের নামে খাস জমি বন্দোবস্ত দেয়া হয়নি, এ সংক্রান্ত নথিপত্র ভূমি অফিসে নেই।

এর আগে ৭২ একর খাসজমি বন্দোবস্ত কান্ডে বুধবার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।

আগামী ৭ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে অভিযুক্ত সার্ভেয়ার মো: হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা সহ ফৌজদারী মামলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসের একজন নকল নবিস, একজন দলিল লেখককে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। ১২জন নকল নবিসকে অফিসিয়াল কাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছে।

খেপুপাড়া সাব রেজিষ্ট্রার রেহেনা পারভিন বলেন, ’বন্দোবস্ত কেসগুলোতে ইউএনও’র স্বাক্ষর সঠিক ছিল। জাল বা স্ক্যান করে করা হয়নি বিধায় তিনি দলিলগুলো রেজিষ্ট্রী করেছেন।’

জেলা রেজিষ্ট্রার ও তদন্ত কমিটির সদস্য মো: কামাল হোসেন বলেন, ’বন্দোবস্ত দলিলে ইউএনও’র স্বাক্ষর জাল না সঠিক ছিল, এটি সিআইডি’র এক্সপার্ট ওপিনিয়ন ছাড়া বলা যাবে না। তদন্ত কার্যক্রম শেষে সবকিছুই জানা যাবে।’

তদন্ত কমিটির অপর সদস্য কলাপাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ’তদন্ত কার্যক্রম চলছে। বন্দোবস্ত কেসের স্বাক্ষরের বিষয়টি এখনও খতিয়ে দেখা হয়নি। কালকে আমরা পুন:রায় বসবো।’

তদন্ত কমিটির প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো: ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (৪আগষ্ট) জেলা রেজিষ্ট্রার ও পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি কলাপাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে নিয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। তদন্ত অনেকটা এগিয়েছে।’ ইউএনও’র মামলার বাদী হওয়া নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ’তাঁর বাদী হওয়া এটি আলাদা বিষয়। তদন্তের সাথে মামলার কোন সম্পর্ক নাই। তাঁর স্বাক্ষর জাল হয়েছে বলে সে দাবী করেছে, সে বাদী হয়ে মামলা করেছে, এটা তাঁর বিষয়। আমাদের তদন্তের বিষয়টি আলাদা। আমরা ইউএনও, এসি ল্যান্ড, সাব-রেজিষ্ট্রার সবার বক্তব্য নেবো। আরও যাদের নাম আসবে আমরা তাদেরও বক্তব্য নেবো। তদন্ত শেষে বলা যাবে কে দোষী? আর কে দোষী না?’

পটুয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট নজরুল
ইসলাম বাদল বলেন, ’তদন্ত কার্যক্রম শেষ না হতেই বন্দোবস্ত কান্ডের এ ঘটনায় ইউএনও’র বাদী হয়ে মামলা দায়ের করায় এর স্বচ্ছতা নিয়ে তো প্রশ্ন উঠতেই পারে। কেননা তিঁনি এখনও এ ঘটনার সাথে জড়িত নন বলে তদন্তে নিশ্চিত হয়নি, তদন্তে তাঁর নামও তো আসতে পারে। তাই তদন্ত শেষ না হওয়ার আগেই তড়িঘড়ি করে সে বাদী হয়ে মামলা করলো। এতে অনেকটা মনে হয় তাঁর অপরাধটাকে সে ধামাচাপা দিতে চায়।’

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By JPHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!