
আমতলী প্রতিনিধিঃ
প্রেমিককে ডেকে এনে গরু চোর সাব্যস্ত করে গণধোলাই দিয়েছেন প্রেমিকার স্বজনরা। পরে তারা প্রেমিক বাহাদুরকে আমতলী থানায় সোপর্দ করে। থানা কর্তৃপক্ষ তার শরীরের অবস্থা বেগতিক দেখে হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশ দেয়। ওই রাতেই তাকে স্বজনরা আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ঘটনা ঘটেছে বরগুনার আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের কুকুয়া গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতে।
জানাগেছে, উপজেলার কুকুয়া গ্রামের মজিবর মৃধার ছেলে বাহাদুর মৃধা একই গ্রামের বাচ্চু মোল্লার স্কুল পড়–য়া কন্যার সাথে গত এক বছর ধরে প্রেম করে আসছিল। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ। বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে ওই কন্যা প্রেমিক বাহাদুরকে তার বাড়ীতে যেতে বলে। সরল বিশ্বাসে প্রেমিক বাহাদুর প্রেমিকার সাথে দেখা করতে তার বাড়ীতে যায়। এদিকে প্রেমিকা তার বাড়ীতে বাহাদুরের আসার বিষয়টি তার পরিবারের লোকজনকে জানায়। কন্যার পরিবারের লোকজন তাকে ধরতে ওত পেতে থাকে। প্রেমিক বাহাদুর বাড়ীতে প্রবেশ করা মাত্রই কন্যার বাবা বাচ্চু মোল্লা, চাচা কুদ্দুস মোল্লা ও সিদ্দিক মোল্লাসহ ৬-৭ জনে ধরে গরু চোর সাব্যস্ত করে গণধোলাই দেয়। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চৌকিদারকে সাথে নিয়ে বাহাদুরকে থানায় নিয়ে আসে। থানা কর্র্তৃপক্ষ বাহাদুরের শারীরিক অবস্তা বেগতিক দেখে চিকিৎসার নির্দেশ দেন। পরে ওই রাতেই বাহাদুরের স্বজনরা তাকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তার অবস্থা সংঙ্কটজনক হলে শুক্রবার দুপুরে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেছে।
আহত বাহাদুর বলেন শামিম মৃধা বলেন, বাচ্চু মোল্লার মেয়ে ফারজানা আমার ভাইয়ের সাথে গত এক বছর ধরে প্রেম করে আসছিল। এ বিষয় নিয়ে তাদের সাথে আমার পরিবারের বিরোধ চলে আসছে। এ ঘটনার জের ধরে আমার ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে তার মেয়েকে দিয়ে ডেকে নিয়ে মিথ্যা গরু চোর অপবাদ দিয়ে গণধোলাই দিয়েছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
স্থানীয় গ্রাম পুলিশ মোঃ সিদ্দিক মিয়া বলেন, মেয়ের বাবা বাচ্চু মোল্লা আমাকে গরু চোর ধরেছি বলে খবর দেয়। আমি গিয়ে বাহাদুরকে থানা নিয়ে যাই। পরে জানতে পেরেছি এটা ছিল তাদের সাজানো নাটক। তিনি আরো বলেন, গরু চোরের অপবাদ দিয়ে বাহাদুরকে বেধড়ক মারধর করেছে।
ইউপি সদস্য মোঃ মুছা বলেন, বাচ্চু মোল্লার মেয়ের সাথে ওই ছেলেটার সম্পর্ক ছিল। বাহাদুরকে ডেকে নিয়ে মেয়ের বাবা ও চাচারা গরু চোর অপবাদ দিয়ে মারধর করেছে।
মেয়ের বাবা বাচ্চু মোল্লা বলেন, বাহাদুর আমার মেয়ের হাত ধরে টান দিয়েছে। এ সময় মেয়ের ডাকচিৎকারে আমরা এগিয়ে গেলে বাহাদুরকে দেখতে পাই। পরে ধাওয়া করলে এলাকার লোকজন ধরে গরু চোর ভেবে গণধোলাই দিয়েছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার মোঃ মোর্শ্বেদ আলম বলেন, আহত বাহাদুরের সারা শরীরের রক্তাক্ত জখমের চিহৃ রয়েছে। তিনি আরো বলেন তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওওলাদার বলেন, প্রেম ঘটিত ঘটনায় মিথ্যা গরু চোরের অপবাদ দিয়ে বাহাদুরকে মারধর করে থানায় নিয়ে আসে। এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply