বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১৬ পূর্বাহ্ন
রাসেল মোল্লাঃ
কলাপাড়া-কুয়াকাটা বিকল্প সড়কের তুলাতলী নামক স্থানে নির্মাণাধীণ স্লুইজগেটের উপর কাঠের তক্তা বিছিয়ে ৩ মাস যাবত যানবাহন থেকে টাকা আদায় করে চলছে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি চক্র। ৪৮ নং পোল্ডারের বেড়ীবাধ সড়কে চলাচলরত প্রতিটি যানবাহন থেকে প্রকার ভেদে ১০ থেকে ৩০টাকা পর্যন্ত আদায় করছে। প্রতিদিন কুয়াকাটার বিকল্প সড়ক দিয়ে দুই শতাধিকের বেশি যানবাহন চলাচল করে। যানবাহন থেকে ওই চক্রটির বিরুদ্ধে গত তিন মাসে প্রায় চার লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা প্রশাসন কিংবা পাউবো কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই জনসাধারনের সেবা করার নামে ফ্রি স্টাইলে এমন চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে।
জানা গেছে, কলাপাড়া-কুয়াকাটা বিকল্প সড়কের উপর পানি নিস্কাশনের জন্য উপকূলীয় বেড়ীবাধঁ উন্নয়ন প্রকল্প’র (সিইআইপি-১) আওতাধীণ মৎস্যবন্দর আলীপুর থেকে চাপলী বাজার পর্যন্ত তিনটি স্লুইজ গেট নির্মাণ করছে চায়না সিকো কোম্পানী। এর নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। বর্ষা মৌসুমে নির্মাণাধীণ তিনটি স্লুইজগেটের উপর ইট কিংবা খোয়া না দেওয়ায় বৃষ্টির পানি জমে কর্দমাক্ত হয়ে যায়। আর এতে ভোগান্তিতে পড়েছে ঐ সড়কে চলাচলরত মটরসাইকেল, অটো রিক্সা, টমটমসহ ছোট বড় প্রায় দুই শতাধিক যানবাহন চালকরা। যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা না করেই স্লুইজগেট নির্মাণ করায় এমন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় সহ ওই সড়কে চলাচলরতদের। এমন অবস্থায় মানুষের দূর্ভোগকে পুঁজি করে তিনটি স্লুইজগেটের মধ্যে তুলাতলী স্লুইজগেটের উপর তক্তা বিছিয়ে দিয়ে স্থানীয় কবির পঞ্চায়েত, মোঃ ছগির ও তার ছেলে আল অমিন, হালিম সহ পাঁচজন মিলে চলাচলরত যানবাহন থেকে প্রকার ভেদে ১০টাকা থেকে ৩০টাকা পর্যন্ত আদায় করে থাকে। ওই স্লুইজগেট দিয়ে চলাচল করে মোটরসাইকেল চালক মোঃ রুবেল খান জানান, কুয়াকাটা থেকে কাউয়ার চর,পায়রা বন্দরে পর্যটকসহ স্থানীয়দের নিয়ে প্রায় সময়ই তার আসা যাওয়া করতে হয়। যতবার তিনি যাতায়াত করেছে তত বারই ১০টাকা করে দিতে হয়েছে। রুবেল আরও জানান, গত দুই মাসে দুই হাজারের অধিক টাকা চাঁদা দিতে হয় তাকে। টাকা না দিলে যানবাহন নিয়ে যাতায়াত করতে দিচ্ছে না। শাহিন,রুবেল মোল্লা, আলমাছ ও রাসেল সহ এমন অভিযোগ করেছেন একাধিক ভূক্তভোগিরা।
এবিষয়ে অভিযুক্ত আল আমিন বলেন, ৪০হাজার টাকা খরচ করে তারা তক্তা বিছিয়েছে। স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ এর সমন্নয়ে তারা চার-পাঁচজন মিলে এ টাকা উত্তোলণ করছে। লতাচাপলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আনছার উদ্দিন মোল্লা, মহিপুর থানা পুলিশ ও পাউবো কর্তৃপক্ষের মৌখিক অনুমতি ক্রমেই তারা এ টাকা উত্তোলন করছে বলে আল আমিন সাংবাদিকদের জানান।
ঘটনাস্থলে সরেজমিনে গেলে সাবেক ইউপি সদস্য ব্যবসায়ী মোঃ শাহালম বিশ্বাস বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, থানা পুলিশ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা টাকা উত্তোলনের বিষয়ে জানে। তারা কেউ কখনো এবিষয়ে প্রশ্ন করেনি। সেখানে সাংবাদিকদের এটি দেখার বিষয়ে নয়। এসময় শাহালম বিশ্বাস এ টাকা উত্তোলনের বিষয়ে লেখালেখি করলে সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার হুমকী দেন এবং টাকা উঠানো বন্ধ করার ক্ষমতা করো । ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইব্রাহিম ব্যাপারী বলেন, তার কাছে ওরা বলেছে চেয়ারম্যান টাকা উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছে। চেয়ারম্যান অনুমতি দিলে সেখানে তার কি বলার আছে।
এ ব্যাপারে লতাচাপলী ইউপি চেয়ারম্যান আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, সড়কে তক্তা বিছিয়ে চাঁদাবাজির অনুমতি তিনি কাউকে দেননি। আর এ বিষয়ে তার কিছুই জানা নেই। একই কথা বলেছেন উপকূলীয় বেড়ীবাধঁ উন্নয়ন প্রকল্প’র (সিইআইপি-১) প্রকৌশলী মোঃ মজিবুর রহমান। তিনি বলেন কে বা কারা তক্তা বিছিয়ে টাকা উত্তোলন করছে এটি তাদের দেখার বিষয় নয়।
এবিষয়ে মহিপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন তক্তা বিছিয়ে সড়কে চাঁদাবাজি করছে এটা তার জানা নেই। মহিপুর থানা এলাকায় কোন চাঁদাবাজদের স্থান নেই। বিষয়টি জেনে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিনি।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply