শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:১৮ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদকঃ
’একই এলাকায় বছরের পর বছর চাকুরীর সুবাদে অনিয়ম ও দুর্নীতির টাকায় বাগান বাড়ী, স্ত্রীর নামে প্রাইভেট ক্লিনিক গড়ে তোলা হয়েছে। অথচ হাসপাতালে চিকিৎসকদের গাফেলতিতে অহরহ রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। জরুরী সেবা নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নৌ-এ্যামবুলেন্সটি বিকল হয়ে পানিতে নিমজ্জিত অবস্থায় আছে। এসব নিয়ে ফেসবুকে ষ্ট্যাটাস সহ প্রতিবাদ করায় উল্টো আমাদের পরিবারের সদস্যদের নামে মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে।’- এমন সব অভিযোগ এনে শুক্রবার সকালে কলাপাড়া প্রেসক্লাব চত্বরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সাবেক সাংসদ পুত্র ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মহসিন উদ্দীন হিমন।
এর আগে ডাক্তারের অবহেলায় রোগী জবেদা বেগম (৭০)’র মৃত্যু এবং মৃত রোগীর স্বজনদের নামে ডাক্তারের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে প্রেসক্লাবের সামনে শত শত মানুষ মানববন্ধনে অংশ নেয়। প্রায় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে হিমন ছাড়াও বক্তব্য রাখেন মৃত রোগীর স্বজন কলাপাড়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনা পারভীন সীমা, নেছারউদ্দিন আহমেদ খোকন, মরিয়ম পাখি, ইসরাক জুবায়ের, গিয়াস উদ্দিন মিয়া, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, বাবুল মিয়া প্রমূখ। সঞ্চালনা করেন আতিকুর রহমান মিরাজ।
মানববন্ধন শেষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মহসিন উদ্দিন হিমন আরও বলেন,’বুধবার (৭অক্টোবর) সন্ধ্যা সাতটায় অসুস্থ অবস্থায় আমার চাচী জবেদা
বেগমকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তনিমা পারভিন রুনা দায়সারা গোছের চিকিৎসা দিয়ে তাকে বরিশাল রেফার করেন। চাচী জবেদা বেগম যখন শ্বাস কষ্টে ছটফট করছিল তখন চাচাতো ভাই-বোনেরা ডাক্তারের যথাযথ সহায়তা পায়নি।
তখন অপর একজন ডাক্তারের কক্ষে কর্তব্যরত চিকিৎসক খোশগল্পে মেতেছিল।
চিকিৎসা সেবার জন্য বার বার তাকে অনুরোধ করার পরও রোগীকে রেফার করা হয়েছে বলে ডাক্তার তার দায়িত্ব শেষ করেন। এনিয়ে তর্ক বিতর্ক সহ উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এক পর্যায়ে উপায় না পেয়ে এ্যাস্বুলেন্সে বরিশাল নেয়ার পথে আমতলী যাওয়ার আগেই আমার চাচী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এরপর আমরা সবাই মিলে মরদেহ দাফন-কাফনে ব্যস্ত ছিলাম। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শুনতে পাই, ডাক্তার তনিমা পারভিন আমি সহ আমাদের ৪ ভাই, ১ বোন ও চাচাতো ভাইদের নামে কলাপাড়া থানায় সরকারি কাজে বাঁধা দান, তাকে প্রান নাশের হুমকী এবং ডাক্তারকে লাঞ্চিত করার অভিযোগ এনে মামলা করেছেন।’
হিমন’র অভিযোগ, ’ডাক্তারের নামে আমরা থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ নেয়নি। সেখানে উল্টো আমাদেরকে আসামী করে মামলা করা হয়েছে। এ মামলা মিথ্যা, যা প্রত্যাহারের দাবি সহ দীর্ঘ বছর একই এলাকায় কর্মরত থেকে জমি জায়গা কিনে বাগান বাড়ী ও ক্লিনিক গড়ে তোলা ডাক্তারদের অপসারনের দাবী করেন তিনি।’
এদিকে ডাক্তার তনিমা তার মামলায় উল্লেখ করেছেন, যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগী মৃত জবেদা বেগমকে। অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হওয়ায় বরিশাল নিয়ে হৃদ রোগ বিভাগে ভর্তির তাগিদ দেয়া হয়েছে। রোগীকে এ্যাম্বুলেন্সে উঠানো হয়। এসময় রোগীর কাছে গেলে আসামিরা তাকে লাঞ্চিত করে। ধাওয়া করে। চিকিৎসায় কোন ত্রুটি ছিল না বলেও দাবি করেন উপজেলা স্বাস্থ্য প্রধান ডাঃ চিন্ময় হাওলাদার। বর্তমানে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলাপাড়ায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, মৃত রোগী জবেদা বেগম সাবেক প্রয়াত এমপি আনোয়ার-উল-ইসলামের ভাই আমিরুল ইসলামের স্ত্রী।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply