আমতলীতে নদী দখল করে ইটভাটা; বিঘ্নিত হচ্ছে পরিবেশ | আপন নিউজ

মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৭:৩১ অপরাহ্ন

প্রধান সংবাদ
গলাচিপা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: তীব্র গরম উপেক্ষা করে প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে সভাপতি আতিক, সম্পাদক রায়হান; প্রভাতি জনকল্যাণ সংস্থা’র পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন আমতলীতে সৌদি রিয়াল প্র’তা’র’না চক্রের পাঁচ সদস্য গ্রে’প্তা’র কলাপাড়ায় চাঁদাবাজির অভিযোগে ইউপি সদস্য সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা কলাপাড়ায় গরুতে ঘাস খাওয়া নিয়ে দ্বন্দ্ব; দুজনকে কু’পি’য়ে জ’খ’ম করার অভিযোগ। কলাপাড়ায় প্রান্তিক কৃষকের মাঝে রাসায়নিক সার ও বীজ বিতরণ আমতলীতে হতদরিদ্র পেল উপহারের ঘর কলাপাড়ায় তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও স্যালাইন বিতরণ কলাপাড়ায় পানিতে ডুবে দুই শি’শু’র মৃ’ত্যু ’উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হবে ভয় ভীতিহীন, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর নির্বাচন’ -দুর্যোগ ও ত্রান প্রতিমন্ত্রী
আমতলীতে নদী দখল করে ইটভাটা; বিঘ্নিত হচ্ছে পরিবেশ

আমতলীতে নদী দখল করে ইটভাটা; বিঘ্নিত হচ্ছে পরিবেশ

আমতলী প্রতিনিধিঃ
বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের শাখারিয়া এলাকার দুটি নদী দখল করে ঢাকা ব্রিকস নামের একটি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। এতে ইটভাটা সংলগ্ন বাদুরা বাজার, মাধ্যমিক, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও গুচ্ছ গ্রাম পরিবশে মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পরেছে। ইটভাটার মালামাল পরিবহন করায় ভাটা সংলগ্ন সরকারী কোটি টাকার ব্রীজটি ধসে যাওয়ার আশঙ্ক করেছেন এলাকাবাসী। পরিবেশ ও নদী  রক্ষায় দ্রুত এ ইটভাটা বন্ধের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসাী।
জানাগেছে, উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের শাখারিয়া নামক স্থানে ২০১৩ সালে মোঃ নশা মিয়া ঢাকা ব্রিকস নামে ঝিকঝ্যাক ইটভাটা নির্মাণ করেন। নির্মাণের শুরুতেই পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন ছাড়পত্র ছিল না। ছাড়পত্র ছাড়াই গত ৭ বছর ধরে ইটভাটায় ইট পুড়ে আসছে। এতে ওই এলাকার পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। স্থানীয়রা গত ৭ বছর ধরেই ওই ইটভাটার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে পরিবেশের মারাত্মক হুমকির বিষয়টি জানিয়ে অভিযোগ দিয়ে আসছেন। কিন্তু প্রভাবশালীদের অজ্ঞাত কারনে ওই ইটভাটা বন্ধ হচ্ছে না। ওই ইটভাটার তিনদিকে কুকুয়া ও বাদুরা নামের দুইটি নদী রয়েছে। ইটভাটা কর্তৃপক্ষ ওই নদী দুটি ভরাট করে ভাটার সম্প্রসারনের কাজ করেছেন। এতে ওই নদী দুটি এখন মরা নদীতে পরিনত হয়েছে। নদী দিয়ে নৌযান চলাচল বন্ধের উপক্রম হয়েছে। এছাড়া ইটভাটার ১’শ গজের মধ্যে রয়েছে বাদুরা বাজার। ওই বাজারে সচারচর অন্তত ৫ হাজার লোকের বসবাস। প্রতি বৃহস্পতিবার ওই বাজারে সাপ্তাহিক হাট বসে। হাটে অন্তত ২০ হাজার লোকের সমাগম হয়। ওই বাদুরা বাজার রয়েছে মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। ইটভাটার ৫০ গজের মধ্যে রয়েছে মাদ্রাসা ও গুচ্ছ গ্রাম। ইটভাটার কারনে ওই বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ও আবাসনের পরিবশে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। প্রতিনিয়ত ইটভাটার ধোয়ার সাথে যুদ্ধ করে বসবাস করছে ওই এলাকার অন্তত ২০ হাজার মানুষ। ইটভাটা সংলগ্ন গার্ডার ব্রীজটি দিয়ে ভাটির মালামাল পরিবহন করায় ব্রীজটি এখন নড়বড়ে হয়ে গেছে। যে কোন সময় কোটি টাকার ব্রীজটি ধসে যেতে পারে এমনটাই আশঙ্কা করেছেন এলাকাবাসী। ওই এলাকার মানুষ, ব্রীজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নদী ও গুচ্ছগ্রামকে রক্ষায় দ্রুত ইটভাটা বন্ধের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, ইটভাটার এক’শ গজের মধ্যে বাদুর বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৫০ গজের মধ্যে গুচ্ছগ্রাম, মাদ্রাসা এবং ২০ গজের মধ্যে গার্ডার ব্রীজ। ইটভাটির মালামাল পরিবহন করায় ব্রীজ নড়বড়ে হয়ে গেছে। ইটভাটার  ধোয়ায় ওই এলাকার পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে।
স্থানীয় নাসির মৃধা ও মজিবর সিকদার  বলেন, ইটভাটা সম্প্রসানের জন্য ইটভাটা কর্তৃপক্ষ দুটি নদী ভরাট করেছে। ওই নদী দিয়ে এখন আর নৌযান চলাচল করতে পারে না। তারা আরো বলেন, ইটভাটা বন্ধে সরকারী বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেছি কিন্ত গত সাত বছরে কোন প্রতিকার পাইনি। ভাটা কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা মাফিক তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। দ্রুত নদী রক্ষায় ইটভাটা বন্ধের দাবী জানান তারা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম ও শহীদ মৃধা বলেন, ইটভাটার মালামাল ব্রীজ দিয়ে পরিবহন করায় ব্রীজটি নড়বড়ে হয়ে গেছে। যে কোন মুহুর্তে কোটি টাকার ব্রীজ ধসে যেতে পারে।
গুচ্ছ গ্রামের মোক্তার হোসেন ও মজিবর বলেন, ধোয়ায় গুচ্ছগ্রামের শতাধিক পরিবার টিকতে পারছি না।  প্রায়ই গুচ্ছগ্রামের মানুষের অসুখ বিসুখ লেগেই থাকে। দ্রুত ইটভাটা বন্ধের দাবী জানাই।
বাদুরা বাজারের ব্যবসায়ী খোকন মোল্লা বলেন, বাজারে ৫ হাজার লোকের বসবাস। ইটভাটার ধোয়ার কারনে বাজারে টেকা মুশকিল। দ্রুত ইটভাটা বন্ধের দাবী জানাই।
ইটভাটার মালিক  ও পরিচালক মোঃ নশা মিয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, ছাড়পত্রের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরে আবেদন করেছি কিন্তু পাইনি।
বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান সরকার বলেন, নদী দখল, বাজার, গুচ্ছগ্রাম,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন স্থানে  ইটভাটা নির্মাণ করা যাবে না। সরেজমিনে তদন্ত করে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By JPHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!