শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৬:০১ পূর্বাহ্ন
আপন নিউজ ডেস্কঃ
করোনার পরিস্থিতিতে দিশেহারা হাঁস খামারি মিলন।
টানা তিন মাসে দেশে লকডাউন পরিস্থিতিতে খাদ্যের দাম দিগুন বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচও বেড়েছে কয়েক গুন। ফলে খাদ্যাভাবে পুষ্টির চাহিদা না মেটায় ডিম উৎপাদন নেমে এসেছে শুন্যের কোঠায়। আর সময়োপযোগী খাদ্য সঙ্কটে দুর্বল হয়ে প্রতিদিন মরে যাওয়া হাসের চিত্র দেখে থামছে না মিলনের কান্না।
কলাপাড়ায় আন্ধারমানিক নদী তীরবর্তী গ্রামীণ জনপদে নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে খামার প্রস্তুত করে হাঁস পালন শুরু করেন দুর দুরান্তে ছুটে বেড়ানো এক সময়ের ট্রাক চালক মো: মিলন হাওলাদার।
উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের টুঙ্গিবাড়িয়া গ্রামে চার বছর আগে নিজ অর্থায়নে দেড় হাজার খাকি ক্যাম্বেল হাঁস নিয়ে যাত্রা শুরু করেন তিনি। সফলতার হাতছানি পান মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে। স্থানীয় কর্মহীন যুবকদের ভাগ্যেও মেলে কর্মের সন্ধ্যান। খামারের ডিম উৎপাদনের মধ্যেদিয়ে স্বপ্ন পুরনের পথেই হাটছিলেন এ উদ্যোক্তা। তবে এরই মাঝে করোনার নিরব প্রবেশে বাধার মুখে পড়ে খামারের স্বাভাবিক কার্যক্রম। শুরুতে লাভের মুখ দেখলেও চলতি বছরে তিন মাসের ব্যবধানে এখন তা শুধুই দুঃস্বপ্ন। খামারের কর্মচারী সুজন জানান, শুরু থেকেই তিনি হাসের দেখভাল করছেন প্রতিমাসে দশ হাজার টাকা বেতনে। তার ভাষ্যমতে উন্নতির দিকেই যাচ্ছিল খামারের উৎপাদন। কিন্তু সব এলোমেলো হয়ে গেছে করোনায়।
তিনি বলেন, এখামারে আমরা চারজন বেতনভুক্ত কর্মচারী আছি, গত তিন মাস ধরে সবার বেতনই বন্ধ রয়েছে।
মিলন হাওলাদার জানান, দেশব্যাপী লকডাউন পরিস্থিতিতে হাসের খাবারের দাম কয়েকগুন বেড়ে যাওয়ায় খাদ্যাভাবে কমতে থাকে ডিমের উৎপাদন। ফলে লোকসানের কবলে খামার কর্মচারীদের বেতন বকেয়াসহ চরম খাদ্য সঙ্কটে পড়ে যাই। বর্তমানে কয়েক সপ্তাহ ধরে নদীর লোনা জল খেয়েই বেচে আছে তার খামারের হাজারটা প্রান। তবে প্রতিদিনই খাদ্যাভাবে দুর্বল হয়ে মারা যাচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টি হাঁস। তিনি আরো জানান, এসব দেখেও চোখের পানি ঝড়ানো ছাড়া আর কিছুই করতে পারছেন না।
কয়েক সপ্তাহ ধরে খাবার কিনতে না পাড়ায় শুধু নদীর পানি খেয়েই বেচে আছে খামারের হাজারো প্রাণ।
তাই এমন সঙ্কটময় মুহুর্তে হাঁসের প্রাণ বাচাতে সরকার ও বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ড.হাবীবুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রশাসনকে মিলনের ব্যাপারে অবহিত করেছন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মোহম্মদ শহীদুল হক জানান, সাময়িক সঙ্কট নিরসনে ও নিরহ প্রাণ বাচাতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব প্রদোদনা দেয়া হবে। তবে কর্মঠ এ উদ্যোক্তার স্বপ্ন ও হাজারো প্রাণ বাচাতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা গুলোকেও এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply