ভাগ্য বদলের খেলাই উপকূলের তালতলীতে আজিজই প্রথম | আপন নিউজ

সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৮:০২ পূর্বাহ্ন

প্রধান সংবাদ
কলাপাড়ায় গরুতে ঘাস খাওয়া নিয়ে দ্বন্দ্ব; দুজনকে কু’পি’য়ে জ’খ’ম করার অভিযোগ। কলাপাড়ায় প্রান্তিক কৃষকের মাঝে রাসায়নিক সার ও বীজ বিতরণ আমতলীতে হতদরিদ্র পেল উপহারের ঘর কলাপাড়ায় তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও স্যালাইন বিতরণ কলাপাড়ায় পানিতে ডুবে দুই শি’শু’র মৃ’ত্যু ’উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হবে ভয় ভীতিহীন, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর নির্বাচন’ -দুর্যোগ ও ত্রান প্রতিমন্ত্রী কলাপাড়ায় মাছ লু’টে বা-ধা: দূর্বৃত্তদের হা’ম’লা’য় ঘের মালিকের ছেলে গু’রু’তর জ’খ’ম আমতলীতে সাংসদের উদ্যোগে তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে খাবার স্যালাইন ও সুপেয় পানি বিতরন আমতলীতে রাজহাঁস নিয়ে দুই পক্ষের সং’ঘ’র্ষে আ’হ’ত-৯ মানুষের কৃতকর্মে বিষাক্ত হয়ে উঠছে পৃথিবী
ভাগ্য বদলের খেলাই উপকূলের তালতলীতে আজিজই প্রথম

ভাগ্য বদলের খেলাই উপকূলের তালতলীতে আজিজই প্রথম

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ

থোকায় থোকায় ঝুলছে রং বি-রঙ্গের কুল। দেখতে ছোট আপেলের মত। মন মাতানো বাহারী রংয়ের ফলটি রসালো ও মিষ্টি। নাম বল সুন্দরী কুল। নামে যেমন স্বাদেও তেমন। উপকুলীয় অ ল তথা আমতলী-তালতলীতে এমন ফল কেউ চাষ করেনি। বরগুনার জেলার আমতলী উপজেলার পশ্চিম বাদুরগাছার প্রত্যান্ত গ্রামের কৃষক আবদুল আজিজ হাওলাদার এই প্রথম উপজেলায় বল সুন্দরী কুল চাষ করেছেন। বল সুন্দরী কুলেই পাল্টে গেছে তার ভাগ্য। ভাগ্য বদলের খেলাই আজিজই তালতলীতে প্রথম। তার বল সুন্দরী কুল বাগান দেখতে প্রতিদিন লোক আসছে। তার বাগান দেখে ভাগ্য বদলের খেলায় অংশ নিতে আগ্রহী উপজেলার অনেক কৃষক।
জানাগেছে, উপজেলার পশ্চিম বাদুরগাছা গ্রামের কৃষক আব্দুল আজিজ হাওলাদারের একমাত্র ছেলে আব্দুর রাজ্জাক। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব সাইখ সিরাজের ভক্ত। তার মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠান দেখে ফলের বাগান করার প্রবল ইচ্ছে পোষণ করেন রাজ্জাক । কিন্তু ২০০৫ সালে এইচএসসি পাশ করে সংসারের হাল ধরতে ঢাকায় চলে যান। ফলে তার সেই ইচ্ছে পুরণ হয়নি। ভাগ্য সুপ্রসন্ন ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের গ্রাহক সেবা সহকারী পদে চাকুরী পান। চাকুরীর সুবাদে আর তার মনের ইচ্ছা পূরণ হয়নি। ২০২০ সালে মার্চ মাসে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে আঘাত হানে। ওই সময়ে তিনি একটু ফুরসত পান। ওই ফাঁকে তিনি পরিকল্পনা করেন মনের অদম্য ইচ্ছা পুরণের। পরিকল্পনা মোতাবেক বাবা আব্দুল আজিজ হাওলাদারকে বিভিন্ন ফলের বাগান করার পরামর্শ দেন। বাবা-ছেলে কুল চাষের পরিকল্পনা করেন। বাবা আব্দুল আজিজ হাওলাদারের তেমন জমি জিরাত নেই। ছেলের পরামর্শে বাড়ীর পাশে ৩৯ শতাংশ জমি কুল চাষের জন্য উপযুক্ত করে তোলেন তিনি। গত বছর মে মাসে ছেলে আব্দুর রাজ্জাক রংপুর ও মাগুরা থেকে সাড়ে তিন’শ বল সুন্দরী কুল চারা আনেন। পরীক্ষামুলক ভাবে ওই সাড়ে তিন’শ চারা রোপন করেন। যথাযথ পরিচর্যা করেন বাবা ও ছেলে। বাগানের সার্ভিস দায়িত্ব পালন করেন বাবা। ছেলের চাকুরীর সুবাদে তার তেমন সময় দেয়া হয়নি। তবে করোনা কালিন সময়ে তিনি বাবাকে সহযোগীতা করেছেন। কিন্তু তাদের শ্রম বিফলে যায়নি। বাবা আব্দুল আজিজ হাওলাদারের অক্লান্ত পরিশ্রমে ও পরিচর্যায় সকল কুল গাছ বেড়ে উঠে। সাত মাসের মাথায় গত বছর ডিসেম্বরে তাদের বল সুন্দরী কুল গাছে কুল ধরে। এতে বাবা ছেলে আনন্দে আত্মহারা। থোকায় থোকায় ঝুলছে রং বি-রঙ্গের কুল। দেখতে আপেলের মত। মন মাতানো বাহারী রংয়ের কুল রসালো ও মিষ্টিতে ভরপুর। নামে যেমন স্বাদেও তেমন। উপকুলীয় অ ল বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার প্রত্যান্ত গ্রাম পশ্চিম বাদুরগাছার কৃষক আবদুল আজিজ হাওলাদার এই প্রথম উপজেলায় বল সুন্দরী কুল চাষ করেছেন। বল সুন্দরী কুলেই এক বছরেই পাল্টে দিয়েছে কৃষক আজিজের ভাগ্য। ওই বল সুন্দরী কুল বাগান দেখতে প্রতিদিন লোকজন এসে তার বাগানে ভীর করছে। তার বাগান দেখে ভাগ্য বদলের খেলায় অংশ নিতে আগ্রহী উপজেলার অনেক কৃষক। ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রথম বছরেই তিনি বিক্রি করেছেন ৮০ হাজার টাকা। তবে এই কুল চাষে তেমন খবর নেই বলে জানান কৃষক আব্দুল আজিজ। শুধু চারা সংগ্রহ করতেই সমস্যা। ফলন ভালো হওয়ায় তিনি এ বছর আরো ৩৩ শতাংশ জমিতে বল সুন্দরী কুল চাষ করছেন। ইতিমধ্যে তিনি চারা সংগ্রহ করে জমি প্রস্তুত করেছেন। তার দেখাদেখি ওই এলাকার অনেক কৃষক এ কুল চাষে আগ্রহী হয়েছেন। অনেক তার মাধ্যমে রংপুর ও মাগুরা থেকে চারা সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান কৃষক আজিজ।
শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অস্ট্রেলিয়ান জাতের বল সুন্দরী কুল। আজিজ ৩৯ শতাংশ জমিতে সাড়ে তিন’শ বল সুন্দরী কুল চারা রোপন করেছেন। প্রতিটি কুল গাছে থোকায় থোকায় কুল ঝুলছে। সুস্বাদু বাহারি রংয়ের কুল তিনি গাছে থেকে পেড়েই বিক্রি করছেন। পোকা ও পাখির আক্রমণ থেকে রক্ষায় বাগানের চারিপাশে মশারী জালের বেড়া দিয়েছেন। বল সুন্দরী কুল চাষ করে তিনি এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। এ বছর তার কুল বিক্রি প্রায় শেষ।
ছেলে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব সাইখ সিরাজের মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠান দেখে ছাত্র জীবনে ফলের বাগান করার ইচ্ছা জাগে কিন্তু চাকুরীর সুবাদে পেরে উঠিনি। গত বছর করোনা কালে বাড়ী এসে অবসর সময়টা কাটানোর জন্য বাবার সাথে বল সুন্দরী কুল চাষ করি। ওই কুলেই ভাগ্য বদলে গেছে আমার ও আমার পরিবারের। তিনি আরো বলেন, আমি বাবাকে সহযোগীতা করেছি মাত্র আর বাবাই সব কিছু করে থাকেন।
কৃষক আব্দুল আজিজ হাওলাদার বলেন, ছেলের অনুপ্রেরনায় আমি কুল চাষের জন্য ৩৯ শতাংশ জমি প্রস্তুত করি। ছেলে রাজ্জাক রংপুর ও মাগুরা থেকে সাড়ে তিন’শ বল সুন্দরী কুল গাছের চারা এনে দেয়। ওই চারা রোপন করে যথাযথ ভাবে পরিচর্যা করি। সাত মাসের মাথায় আমার গাছে থোকায় থোকায় কুল ধরেছে। ভাবিনি প্রথম বছরেই এতো ভালো হবে। এ বছর ৮০ হাজার টাকার কুল বিক্রি করেছি। তিনি আরো বলেন, আরো ৩৩ শতাংশ জমি প্রস্তুত করেছি। তাতেও বল সুন্দরী কুলের চারা রোপন করবো। আশা করি আমি অনেক লাভবান হবো। আমার কুল বাগান দেখে অনেক কৃষক বল সুন্দরী কুল চাষে আগ্রহী হয়েছেন। ইতিমধ্যে ১৩ জন কৃষক চারা সংগ্রহ ও পরামর্শের জন্য আমার কাছে এসেছেন।
তালতলী উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ আরিফ হোসেন বলেন, অস্ট্রেলিয়ান জাতের বল সুন্দরী কুল দেখতে সুন্দর। খেতেও সুস্বাদু। এ অ লে এই কুল চাষ নেই বললেই চলে। তিনি আরো বলেন, আব্দুল আজিজই প্রথম বল সুন্দরী কুল তালতলীতে চাষ করেছেন। ভালো ফলনও হয়েছে। তার কুল বাগান দেখে অনেক কৃষক বল সুন্দরী কুল চাষে আগ্রহী হয়েছেন। কৃষক আব্দুল আজিজসহ যারা কুল চাষে আগ্রহী তাদের সকলকে সার্বিক সহযোগীতা করা হবে।

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By JPHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!