তালতলীতে ধর্ষিতার বিরুদ্ধে ধর্ষকের মামলা; মামলার স্বাক্ষীরাও ধর্ষক | আপন নিউজ

শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০১:১৩ পূর্বাহ্ন

প্রধান সংবাদ
আমতলীতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থীকে দশ হাজার টাকা অর্থদন্ড আমতলীতে চাঁদা না দিলে বিধরা নারীকে প্রাণ নাশের হুমকি; সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ কলাপাড়ায় মুরগীসহ পালনের উপকরণ দেয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে উধাও প্রতারক সংস্থা আমতলী সরকারী কলেজের সামনের অবৈধ স্থাপনা অপসারণ দাবীতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কলাপাড়ায় স্ত্রী কর্তৃক প্রবাসী স্বামীর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ কলাপাড়ায় পূর্ব শত্রুতা বসত ফের ব্যবসায়ীর বাড়িতে চু’রি; ৮ লক্ষ টাকার মালামাল লু’ট কলাপাড়ায় শিক্ষককে মারধর, প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও সমাবেশ গলাচিপায় কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির উদ্বোধন কলাপাড়ায় আইপিএম পদ্ধতিতে চিনা বাদাম উৎপাদন শীর্ষক মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত কলাপাড়ায় জমি জমা বিরোধ; এক নারীকে পি’টি’য়ে জ’খ’ম
তালতলীতে ধর্ষিতার বিরুদ্ধে ধর্ষকের মামলা; মামলার স্বাক্ষীরাও ধর্ষক

তালতলীতে ধর্ষিতার বিরুদ্ধে ধর্ষকের মামলা; মামলার স্বাক্ষীরাও ধর্ষক

আমতলী প্রতিনিধিঃ ধর্ষনের শিকার এক নারীর বিরুদ্ধে ধর্ষক নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ড.কামরুজ্জামান বাচ্চু তালতলী থানায় পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেছেন। ওই নারীর নানার এমন অভিযোগ। ডিবি পুলিশ ধর্ষণের শিকার মামলার আসামী ওই নারী এবং তার সহযোগী জাহিদুল ইসলাম সবুজ ফকিরকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেছেন। আদালতের বিচারক তাদের জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়। সোমবার আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তারা জামিন আবেদন করেন। আদালতের বিচারক মোঃ আরিফুর রহমান তাদের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে দেন। ঘটনা ঘটেছে তালতলী উপজেলা পরিষদের নিচতলায় গত শুক্রবার সকালে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

জানাগেছে, তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়া, পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার ও উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম মিঠুর সঙ্গে এক নারীর সখ্যতা গড়ে ওঠে। এক পর্যায় তারা ওই নারীকে ধর্ষণ করে। ওই নারী তাদের হাত থেকে রক্ষায় নিজের মোবাইলে আপত্তিকর ছবি ধারন করে। ওই ছবি তিনি স্থানীয় জাহিদুল ইসলাম সবুজ ফকিরের কাছে গচ্ছিত রাখে। গত বছর ২৮ অক্টোবর ওই ছবি ম্যাসেঞ্জার ও হোয়াসঅ্যাপে ভাইরাল হয়ে যায়। এতে ক্ষুব্ধ হন দুই ইউপি চেয়ারম্যান ও ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পদক। গত ১২ এপ্রিল নিশানবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু তার সঙ্গে ওই নারী প্রতারনা করে তার মোবাইলে আপত্তিকর ছবি ধারন করে হোয়াসঅ্যাপ ও ম্যাসেঞ্জারে ওই ছবি ছড়িয়ে দেয়। এমন অভিযোগ এনে চেয়ারম্যান বাদী হয়ে তালতলী থানার পর্নোগ্রাফী আইনে ওই নারীকে প্রধান এবং তার সহযোগী জাহিদুল ইসলাম সবুজ ফকিরকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় বরগুনা ডিবি পুলিশ আসামী ওই নারী ও তার সহযোগীকে গত শুক্রবার গ্রেপ্তার করে। ওইদিন রাতেই তাদের বরগুনা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেন। একই সঙ্গে আদালতে ওই নারী জবানবন্দি দেন। তার জবাব বন্দীতে ওই নারী উল্লেখ করেছেন, নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু, পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার ও উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম মিঠুর সঙ্গে তার সখ্যতা হয়। প্রতারনার ফাঁদে ফেলে তারা ওই নারীকে ধর্ষণ করে। ওই নারী তাদের হাত থেকে রক্ষায় নিজের মোবাইলে আপত্তিকর ছবি ধারন করে রাখে। ওই ছবি তিনি জাহিদুল ইসলাম সবুজ ফকিরের কাছে গচ্ছিত রাখে। এদিকে মামলার বাদী নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু তার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ওই নারীর সঙ্গে তিনি ঢাকায় একটি রেষ্টুরেন্টে দেখা করেন। এরপর তার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠে। সখ্যতার সুবাদে তার সঙ্গে ওই নারী পারাবাত লে  পাশাপাশি দুইটি কেবিনে আসেন এবং বাচ্চুর কেবিনে এনে বলে আমি রাতের খাবার খাইনি। পরে  খাবার খেয়ে তার কেবিনে শুইয়ে পরে এবং তাকে ছড়িয়ে ধরে তার (নারী) মোবাইলের গোপন ক্যামেরায় আপত্তিকর ছবি ধারন করেছেন। অপর দিকে এ মামলার স্বাক্ষী চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার ও মিঠু তারাও ওই নারীকে ধর্ষণ করেছেন বলে জবানবন্দীতে ওই নারী উল্লেখ করেছেন। সোমবার আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে  আসামী ওই নারী এবং তার সহযোগী জামিন আবেদন করেন। আদালতের বিচারক মোঃ আরিফুর রহমান তাদের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে দেন।

ওই নারীর নানা অভিযোগ করে বলেন, নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু, পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার ও উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম মিঠু আমার নাতনিকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করেছে। এখন উল্টো তারাই মামলার বাদি ও স্বাক্ষী হয়ে আমার নাতনিকে মিথ্যা পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দিয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দাবী করছি।

মামলার বাদী নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু বলেন, সুপার এডিটের মাধ্যমে আপত্তিকর ছবি হোয়াসঅ্যাপ ও ম্যাসেঞ্জারে ছড়িয়ে দেয়ার পায়তারা চালায় ওই নারী। যাদের সঙ্গে এমন প্রতারনা করেছে আমরা সবাই মিলে পর্নোগ্রাফি আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি।

তালতলী থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) রনজিৎ কুমার সরদার বলেন, থানায় মামলা হলের বরগুনা ডিবি পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেছে।

বরগুনা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওসি বশির আলম বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত অনুসারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By JPHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!